100 Days Work

১০০ দিনের কাজে বাড়তি অর্থ মিলবে কি না সংশয়

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এ বছর রাজ্যকে ২২ কোটি কর্মদিবস তৈরির লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছিল কেন্দ্র।

Advertisement

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২০ ০৩:১৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

অতীতে ‘টার্গেট’ বা লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে যাওয়ার তৃপ্তি বারে বারে উপভোগ করেছে পশ্চিমবঙ্গ। কিন্তু চলতি পরিস্থিতিতে লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে যাওয়া কতটা সুখকর হবে, তা নিয়ে প্রশাসনের অন্দরে জল্পনা চলছে।

Advertisement

এই সাফল্য এবং শঙ্কা একশো দিনের কাজ প্রকল্পকে কেন্দ্র করে। প্রতি আর্থিক বছরে এই প্রকল্পের আওতায় রাজ্যকে কর্মদিবস তৈরির লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেয় কেন্দ্র। সেই অনুযায়ী রাজ্যকে অর্থও দেয় তারা। অতীতে একাধিক বার সেই লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে বাড়তি কর্মদিবস তৈরির নজির গড়েছিল পশ্চিমবঙ্গ। অতিরিক্ত কর্মদিবসের জন্য রাজ্যকে বাড়তি টাকাও দিয়েছিল কেন্দ্র। এ বছর এখনও পর্যন্ত প্রকল্পের যা অগ্রগতি, তাতে ফের কেন্দ্রের দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে যাবে রাজ্য। কিন্তু বাড়তি টাকা মিলবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন প্রশাসনের একাংশ। কারণ, কোনও কারণে বাড়তি বরাদ্দ না-পেলে তা রাজ্যের উপরে অতিরিক্ত চাপ তৈরি হতে পারে। প্রশাসনের শীর্ষ মহল অবশ্য জানাচ্ছে, কেন্দ্রের অনুমতি নিয়েই পদক্ষেপ করা হচ্ছে। তাই কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এ বছর রাজ্যকে ২২ কোটি কর্মদিবস তৈরির লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছিল কেন্দ্র। তার জন্য তারা ৩৮০০ কোটি টাকা দিয়েছে। গতি কম থাকলেও এপ্রিলে এক কোটি ২৪ লক্ষের মতো কর্মদিবস তৈরি হয়। মে মাসে তা লাফিয়ে বেড়ে পৌঁছে যায় ছ’‌কোটির কাছাকাছি। জুনে কর্মদিবস আট কোটি পেরিয়ে যায়। পঞ্চায়েত দফতরের ব্যাখ্যায়, ১২ মাসের মূল লক্ষ্যমাত্রার নিরিখে এখনও পর্যন্ত ৩৭ শতাংশ কাজ হয়েছে। এই গতিতে চললে বছর শেষের অনেক আগেই মূল লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করা যাবে। সংশ্লিষ্ট মহল জানাচ্ছে, লকডাউন পর্বের মাঝামাঝি থেকে কিছু কিছু কাজে ছাড় দেওয়া শুরু হয়েছিল। তাই প্রকল্পের জব কার্ডধারীরা কাজ পেতে শুরু করেছিলেন। পরিযায়ী শ্রমিকেরা রাজ্যে ফেরার পর থেকে ইচ্ছুকদের জব কার্ড দেওয়া হয়। ফলে প্রকল্পে কাজের পরিধি বাড়তে থাকে। এখনও পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩৬ লক্ষ পরিবার কাজ পেয়েছে। ৭৫ দিনের মধ্যে কাজ পাওয়া গিয়েছে গড়ে ৩০ দিন করে।

Advertisement

কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেলে বাড়তি কেন্দ্রীয় বরাদ্দ নিয়ে আশঙ্কা করছেন জেলা প্রশাসনিক কর্তাদের অনেকে। তাঁদের বক্তব্য, বেশি করে কর্মদিবস তৈরি হতে থাকলে কেন্দ্রের দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা পেরিয়ে যাবে ঠিকই। কিন্তু তখন অতিরিক্ত শ্রমদিবসের অর্থ কেন্দ্র না-দিলে সমস্যায় পড়তে হবে রাজ্যকেই। কারণ, এমনিতেই কোভিড আবহে কেন্দ্রের আর্থিক অবস্থা খারাপ। তার উপরে সামাজিক খাতে বিপুল অর্থ বরাদ্দ করতে হয়েছে তাদের। গরিব কল্যাণ রোজগার যোজনায় কেন্দ্র চার মাসে ৫০ হাজার কোটি টাকা খরচ করবে। তাই অতিরিক্ত বরাদ্দের প্রশ্নে তারা বেঁকে বসবে কি না, তা নিয়ে আশঙ্কা আছে সংশ্লিষ্ট মহলের। এক কর্তা বলেন, “সাধারণ ভাবে অক্টোবর-নভেম্বর নাগাদ এই প্রকল্পের বরাদ্দের ‘রিভিশন’ হওয়ার কথা। সেটা না-হলে টাকা কমার সম্ভাবনা তৈরি হবে।”

পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় অবশ্য এই আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন। “প্রথমে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা পরে কমিয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে আমরা কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা করেছি। এখন পরিযায়ী শ্রমিকেরাও রাজ্যে রয়েছেন। সেটা মাথায় রেখে এবং প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়েই কাজ করছি। কেন্দ্রের সম্মতি থাকায় টাকা পেতে অসুবিধা হবে না,” বলছেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement