দিল্লি যাচ্ছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। —ফাইল চিত্র।
ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ নিয়ে রাজ্যকে লাগাতার আক্রমণ করেই চলেছেন। তার মধ্যেই তিন দিনের জন্য দিল্লি যাচ্ছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। রবিবারই রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি নেতাদের সঙ্গে রাজভবনে বৈঠক করেন তিনি। সেখানে ভোট পরবর্তী হিংসা, রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা এবং দলত্যাগ বিরোধী আইন লঙ্ঘন করে মুকুল রায়ের তৃণমূলে ফেরা নিয়ে তাঁর কাছে অভিযোগ জানান গেরুয়া নেতৃত্ব। তার পরেই মঙ্গলবার সকালে দিল্লি যাচ্ছেন বলে নেটমাধ্যমে ঘোষণা করেন রাজ্যপাল।
এক দিন আগে পর্যন্ত রাজ্যপালের দিল্লি সফর নিয়ে কোনও তথ্য প্রকাশ করেনি রাজভবন। বরং মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রওনা দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে টুইটারে রাজ্যপালের হ্যান্ডল থেকেই বিষয়টি সামনে আনা হয়। জানানো হয়, ১৫ জুন সন্ধ্যায় দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেবেন ধনখড়। ফিরবেন ১৮ জুন সন্ধ্যায়। সম্প্রতি দিল্লি গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করে এসেছিলেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ধনখড়ও মোদী-অমিতের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে সূত্রের খবর।
ঠিক কী কারণে আচমকা দিল্লি যাচ্ছেন তিনি, তা যদিও খোলসা করেননি ধনখড়। তবে গতকাল শুভেন্দুর নেতৃত্বে বিজেপি প্রতিনিধিদের সঙ্গে রাজভবনে দেখা করার পরই রাজ্যপালের এই দিল্লি সফর নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। কারণ ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ নিয়ে লাগাতার রাজ্যের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে চলেছেন রাজ্যপাল। শুভেন্দুদের পাশে নিয়ে রবিবার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দায়িত্বজ্ঞান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
তবে সেখানেই থামেননি ধনখড়। টুইটারেও মমতা, রাজ্য এবং কলকাতা পুলিশকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন তিনি। রবিবার সন্ধ্যায় রাজভবনে শুভেন্দুদের প্রবেশের ছবি পোস্ট করে তিনি লেখেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনকালে রাজ্যে যে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে এবং তার পরেও রাজ্য এবং কলকাতা পুলিশ যে পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে, তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন বিরোধী শিবিরের ৫০ জনেরও বেশি বিধায়ক। পরিস্থিতিত যে ভাবে হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে, তাতে হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। সমস্ত অভিযোগ সম্পর্কে আগে থেকেই অবগত ছিলেন রাজ্যপাল। বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।’
২মে ভোটের ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ নিয়ে মমতা সরকারের বিরুদ্ধে সরব ধনখড়। বিজেপি-র তরফে যে যে জায়গা থেকে হিংসার অভিযোগ উঠে আসছিল, সেখানে পরিস্থিতি পরিদর্শন করতেও যান তিনি। ঘটনাচক্রে কয়েক দিন আগেই দিল্লিতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করে এসেছেন। তার পরেই দিল্লি যাচ্ছেন ধনখড়। তাই রাজনৈতিক মহলে জল্পনা চলছে যে, ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ নিয়েই মোদী-অমিতের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন তিনি।
এর আগে, রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দিল্লিতে গিয়ে রিপোর্ট দিয়ে এসেছিলেন তিনি। তবে তা ছিল ভোটের আগে। ভোট মেটার পর এটাই প্রথম দিল্লি সফর ধনখড়ের।