মৌসম ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। নিজস্ব চিত্র
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করতে এসেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তবে আলিপুর আবহাওয়া দফতরে দাঁড়িয়েও টেনে আনলেন রাজ্যের ‘ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস’-এর প্রসঙ্গ। ধনখড় বললেন, ‘‘কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস চিন্তা বাড়াচ্ছে। তার উপর রাজ্যের ভোট পরবর্তী হিংসার সমস্যা তো রয়েছেই।’’
রাজ্যপালের এই মন্তব্য নিয়ে অবশ্য তৃণমূল বলেছে, ‘‘দু’বছর রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব পালনের পরও যদি উনি নিজের মর্যাদা বা সংবিধানের দেওয়া অধিকার বুঝতে না পারেন, তবে তাঁদেরও আর এ নিয়ে কিছু বলার নেই।’’
মঙ্গলবার ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের গতিবিধির খবর নিতে আবহাওয়া দফতরে পৌঁছে যান ধনখড়। দীর্ঘক্ষণ হাওয়া অফিসের পূর্বাঞ্চলের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরেও ছিলেন তিনি। ধনখড় জানান, তিনি প্রতিমূহূর্তে ইয়াস-পরিস্থিতির খোঁজ খবর নিচ্ছেন। এমনকি সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর থেকেও খবর নিয়েছেন।
তবে ইয়াস প্রসঙ্গে রাজ্যের ভোগান্তির কথা বলতে গিয়ে রাজ্যপাল টেনে আনেন বাংলার ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’র প্রসঙ্গও। রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই অবশ্য এ নিয়ে সরব ধনখড়। পরিস্থিতির পর্যবেক্ষণে কোচবিহার, অসম, নন্দীগ্রামে সফরও করেছিলেন তিনি। ভোট পরবর্তী হিংসার কারণে বহু বিজেপি কর্মী অসমের ধুবড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন বলে তাঁর কাছে খবর আছে, জানিয়েছিলেন রাজ্যপাল। এ নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গেও দীর্ঘ বাদানুবাদও হয় তাঁর।
মঙ্গলবার ইয়াস প্রসঙ্গে আবহাওয়া দফতরের সাংবাদিক বৈঠকে ধনখড় বলেন, ‘‘রাজ্যে এখন একদিকে করোনা পরিস্থিতি অন্যদিকে ভোট পরবর্তী হিংসা চলছে। এর মধ্যে আসছে ঘূর্ণিঝড়।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি গোটা বিষয়টিতে নজর রাখছি। কেন্দ্র এবং রাজ্য যাতে একসঙ্গে কাজ করতে পারে, সে দিকেও খেয়াল রাখছি। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী খুব ভাল কাজ করছে।’’ তবে রাজ্য সরকারও যে কাজ করছে সে কথা স্বীকার করছেন রাজ্যপাল। তাঁর সঙ্গে মুখ্যসচিব এবং মুখ্যমন্ত্রীর কথা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন রাজ্যপাল।
পরে তৃণমূলের মুখপাত্র তথা বিধানসভা উপমুখ্য সচেতক তাপস রায়কে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যপাল হওয়ার পর উনি প্রায় দু’বছর রাজ্যে আছেন। আগামী জুলাই মাসেই ওঁর মেয়াদের দু’বছর পূর্ণ হবে। অথচ এখনও নিজের দফতর, তাঁর গুরুত্ব, রাজ্যপাল হিসেবে নিজের মর্যাদা এবং সংবিধানে তাঁকে দেওয়া অধিকার সম্পর্কে কোনও ধ্যান বা ধারণাই নেই রাজ্যপালের। ওঁকে নিয়ে কী প্রতিক্রিয়া দেব, তা আমাদের ভাবতে হচ্ছে।’’