প্রতীকী ছবি।
বছরখানেক টালবাহানার পরে ঘুম ভাঙল রাজ্যের। জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন-তকমাপ্রাপ্ত ‘বাংলার রসগোল্লা’র জন্য লোগো বিলির লক্ষ্যে কাল, সোমবার কয়েক জন মিষ্টি-স্রষ্টার কাছে রসগোল্লার নমুনা চেয়ে পাঠিয়েছে রাজ্য। ভেজাল রোধে কেন্দ্রীয় পরীক্ষাগারের বিশেষজ্ঞ, খাদ্য নিরাপত্তা ও মান-সংক্রান্ত কর্তৃপক্ষের আধিকারিকদের সঙ্গে বাংলার মিষ্টি-কারবারিদের এক ছাতার নীচে আনার প্রক্রিয়াও এত দিনে শুরু হয়েছে।
গত সোমবার ও বৃহস্পতিবার দু’দফায় মিষ্টি-স্রষ্টাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে ‘বাংলার রসগোল্লা’র জিআই লোগোর মালিক পশ্চিমবঙ্গ খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যানচর্চা উন্নয়ন নিগম। নিগমের শীর্ষ স্তরে সম্প্রতি বদলের জন্যও লোগো বিলির প্রক্রিয়া কিছুটা থমকে ছিল বলে সরকারি সূত্রের খবর। নতুন এমডি শ্রাবণী ধর দায়িত্ব নেওয়ার পরে এই প্রথম রসগোল্লা নিয়ে বৈঠকে বসলেন। নির্দিষ্ট টাকা দিয়ে লোগোর জন্য আবেদন করতে হবে এবং সঙ্গে রসগোল্লার নমুনাও পাঠাতে হবে বলে নিগম জানিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের দিয়ে সেই নমুনা পরীক্ষা করিয়ে দেখা হবে, জিআই-তকমাধারী রসগোল্লার জন্য নির্দিষ্ট মাত্রার রসের ঘনত্ব বা চিনির মান বজায় রয়েছে কি না!
কোনও কোনও ডাকসাইটে রসগোল্লা-স্রষ্টার এমন পরীক্ষা দিতে কিছুটা আপত্তি আছে। কিন্তু সরকারি বিজ্ঞানপ্রযুক্তি বিভাগের অন্তর্গত ‘পেটেন্ট ইনফর্মেশন সেন্টার’-এর সিনিয়র বিজ্ঞানী মহুয়া হোমচৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘জিআই-তকমাধারী খাদ্যপণ্যের মানে যে আপস করা হয়নি, তা পরীক্ষা করে বোঝানোটা সর্বত্রই দস্তুর। রসগোল্লা নমুনা-সহ সব আবেদন চেন্নাইয়ে পাঠাতে হবে।’’ চেন্নাইয়ে জিআই নথিভুক্তিকরণ দফতর তখন সংশ্লিষ্ট রসগোল্লাকে লোগো ব্যবহারের ছাড়পত্র দেবে।
রসগোল্লার কর্পোরেশন এই কাজে রাজ্য জুড়ে সমন্বয় রক্ষা করছে। বর্ধমানের মিহিদানা বা জয়নগরের মোয়ার মতো রসগোল্লা-স্রষ্টারা একটি জায়গায় কেন্দ্রীভূত নন। এখনও পর্যন্ত সল্টলেক, বাঙুর, শ্রীমানি মার্কেট, আমহার্স্ট স্ট্রিট এবং হাওড়ার ব্যাতাইতলার কয়েকটি মিষ্টি বিপণি ও মিষ্টি-চেন নমুনা পাঠাতে রাজি হয়েছে। সরকারি কর্তাদের আশা, ‘‘একবার লোগো বিলির প্রক্রিয়া চালু হলে তখন সবাই লোগোর আবেদনে শামিল হবেন।’’