কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষেই চার বছরের অনার্স পাঠ্যক্রম চালু করার দিকে এগোচ্ছে রাজ্য সরকার। প্রতীকী ছবি।
পরিকাঠামো ও প্রয়োজনীয় অর্থ নিয়ে প্রশ্ন ছিল, থাকছেও। তারই মধ্যে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষেই চার বছরের অনার্স পাঠ্যক্রম চালু করার দিকে এগোচ্ছে রাজ্য সরকার। শিক্ষা শিবির সূত্রের খবর, সম্প্রতি এই বিষয়ে নবান্নে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয় এবং সেখানে এই মর্মেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
উচ্চশিক্ষা দফতর ১৭ মার্চ জাতীয় শিক্ষানীতি অনুসারী ‘কারিকুলাম অ্যান্ড ক্রেডিট ফ্রেমওয়ার্ক’ চালু করার নির্দেশ দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়কে। এই ফ্রেমওয়ার্ক বা পাঠ-কাঠামোয় অনার্স পাঠ্যক্রমের মেয়াদ হবে চার বছর। সেই চার বছরের মধ্যেই গবেষণা করা যাবে। মাঝপথে কেউ পড়া ছেড়ে দিলেও পরে আবার তা শুরু করার সুযোগ থাকবে ‘মাল্টিপল এগ্জিট অ্যান্ড এন্ট্রি’ ব্যবস্থায়। এই নির্দেশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে পৌঁছলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এই পাঠ-কাঠামোর অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলির কতটা বাস্তবায়ন সম্ভব এবং তা করতে গেলে যে-পরিকাঠামোগত এবং আর্থিক সাহায্য প্রয়োজন, তা কোথা থেকে আসবে, ওঠে সেই সব প্রশ্ন। তার পরে, মার্চের শেষ দিকে কী ভাবে এই পাঠ-কাঠামো চালু করা যেতে পারে, তা খতিয়ে দেখার জন্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গড়া হয়। সেই কমিটির দেওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতেই নবান্ন নতুন পাঠ-কাঠামো চালু করার ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে বলে শিক্ষা শিরিব সূত্রের খবর। এখন কমিটি রিপোর্ট আরও ভাল ভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গোটা দেশে চার বছরের অনার্স পাঠ্যক্রম চালু হয়ে গেলে সমতা-সামঞ্জস্য রাখতে পশ্চিমবঙ্গেও তা চালু করা দরকার বলে মনে করছে শিক্ষা মহলের একাংশ। অন্যথায় এই রাজ্যের পড়ুয়ারা ভবিষ্যতে অসুবিধায় পড়বেন। তবে ‘মাল্টিপল এগ্জিট অ্যান্ড এন্ট্রি’ বা ছেড়ে দিয়েও ফের পড়া শুরু করার সুযোগ সংক্রান্ত পদ্ধতি নিয়ে সকলে একমত নন।
নতুন এই পাঠ-কাঠামো বাস্তবায়নে যে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বারে বারেই তা জানিয়ে আসছেন। শিক্ষা শিবির থেকেও নতুন পাঠ চালু করতে অর্থের প্রয়োজন বলে দাবি করা হচ্ছে। ব্রাত্য জানিয়েছিলেন, নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে পরিকাঠামোর উন্নয়ন দরকার। তার জন্য প্রয়োজন অর্থ। এই বিষয়ে ইউজিসি বা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করবে উচ্চশিক্ষা দফতর।
রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস সম্প্রতি রবীন্দ্রভারতীতে গেলে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি লিখিত ভাবে তাঁকে অনুরোধ করে, স্নাতক স্তরে চার বছরের অনার্স পাঠ্যক্রম চালু করতে যে-আর্থিক সহায়তার দরকার, তিনি যেন সেই বিষয়টি দেখেন। শুক্রবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জুটা) চার বছরের স্নাতক পাঠ চালু করার বিষয়টি অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট সকলকে জানানোর দাবি জানিয়েছে উপাচার্যের কাছে। ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হতে খুব বেশি দেরি নেই। এখনই বিষয়টি স্পষ্ট ভাবে না-জানলে পরে যে অসুবিধায় পড়তে হতে পারে, সেটা উপাচার্যকে জানিয়েছে শিক্ষক সমিতি।