মিলবে জমি, পর্যটনে লগ্নি চায় রাজ্য

পশ্চিমবঙ্গের শিল্প-মানচিত্রে এ বার পর্যটনকে বড়সড় হাতিয়ার করতে চাইছে রাজ্য সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:১২
Share:

গৌতম দেব। ফাইল চিত্র।

মাথায় হিমালয়, বঙ্গলক্ষ্মীর পা ধুয়ে দিচ্ছে বঙ্গোপসাগর। আর কমবেশি অরণ্যরহস্য রয়েছে তো প্রায় সারা বাংলাতেই। তাই পশ্চিমবঙ্গের শিল্প-মানচিত্রে এ বার পর্যটনকে বড়সড় হাতিয়ার করতে চাইছে রাজ্য সরকার।

Advertisement

‘‘রাজ্যে পর্যটন ব্যবসায় বিনিয়োগকারীরা যোগ দিতে পারেন। রাজ্য সরকার তাঁদের জমি দিতে প্রস্তুত,’’ বৃহস্পতিবার বণিকসভা ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বলেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। তাঁর দাবি, বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বাড়লে পর্যটন ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের সুযোগও বৃদ্ধি পাবে। পর্যটন-পরিকাঠামোর উন্নয়নে সরকার কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, এ দিন তার খতিয়ানও দেন গৌতমবাবু।

পর্যটনমন্ত্রী জানান, দফতরের নিজস্ব ৪৩টি জায়গায় পরিকাঠামোর উন্নয়নে জোর দেওয়া হয়েছে। সেখানে জিম, সুইমিং পুল, স্কাইওয়াক, হস্তশিল্প সামগ্রী কেনার দোকান, ওয়াইফাই ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। তিনটি বড় প্রকল্পের কাজ চলছে গজলজোবা, বলাগড় ও ঝড়খালিতে। উত্তরবঙ্গে নতুন ৮৯টি ট্রেক রুট চিহ্নিত করেছে পর্যটন দফতর। সান্দাকফু, টংলু, টাইগার হিলের মতো জায়গায় ‘ট্রেকার্স হাট’ তৈরি করা হচ্ছে। সভায় মন্ত্রী দাবি করেন, দার্জিলিং থেকে দিঘা— রাজ্যে পাহাড়, সমুদ্র, জঙ্গল, নদী ছাড়াও রয়েছে বহু ঐতিহাসিক দ্রষ্টব্য, ধর্মস্থান। ফলে পর্যটনে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে গোটা রাজ্যেই। গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশে ‘হোম স্টে’ ব্যবস্থার রেজিস্ট্রেশন শুরু করেছে রাজ্য সরকার। উত্তরবঙ্গেই রয়েছে প্রায় আড়াই হাজার হোম স্টে।

Advertisement

এ দিনের অনুষ্ঠানে পর্যটন দফতরের ‘হুররে’ অ্যাপের বিষয়টি উল্লেখ করেন পর্যটনসচিব অত্রি ভট্টাচার্য। তিনি জানান, পর্যটকদের ঠিক দিশা দেখাতেই এই ব্যবস্থা। পর্যটকেরা নিজেদের বিল নম্বর দিয়ে মতামত লিখতে পারবেন ওই অ্যাপে। পর্যটন ব্যবসায় যুক্ত লোকজনও দফতরের ই-মেলের মাধ্যমে নিজেদের মতামত, অভিযোগ জানাতে পারবেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, কয়েক বছর ধরে পর্যটন দফতরে পর্যটকদের নানাবিধ অভিযোগ আসছে। সেগুলির মূল কথা, যে-প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে ভ্রমণার্থীরা পরিষেবা নিতে চাইছেন, শেষ পর্যন্ত তা মিলছে না। অন্যান্য রাজ্যে সরকার নিয়ন্ত্রিত পর্যটন সংস্থা পর্যটকদের দিশা দেখায়। এত দিন এ রাজ্যে তেমন মজবুত কোনও পদ্ধতি ছিল না।

তাই এ বার ওই অ্যাপ চালু করা হয়েছে। এক কর্তা বলেন, ‘‘পর্যটন দফতর ‘পূর্বে দেখো’ নীতিতে এগোতে চাইছে। পর্যটন শিল্পে লগ্নির আহ্বানও জানানো হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে এমন অভিযোগ রাজ্যের পর্যটন-ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে। তাই পর্যটকদের স্বার্থে এই অ্যাপ।’’ কেউ যাতে নিজের স্বার্থে ওই অ্যাপ পরিচালিত করতে না-পারে, সেই ব্যাপারে রক্ষাকবচও রাখা হচ্ছে।

এ দিনের অনুষ্ঠানে ভারতে মেডিক্যাল টুরিজমের বিষয়েও আলোচনা হয়। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কাশ্মীর ও ঝাড়খণ্ডের পর্যটন দফতরের কর্তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement