ফাইল চিত্র।
নিয়ম রক্ষা করে বাঁচিয়ে রাখা হল চতুর্থ রাজ্য অর্থ কমিশনকে। অর্থ দফতর সম্প্রতি পঞ্চায়েত ও পুরসভাগুলিকে রাজ্য অর্থ কমিশনের মুক্ত তহবিলে টাকা বরাদ্দ করেছে।
২০১৯-২০ অর্থবর্ষই চতুর্থ অর্থ কমিশনের শেষ বছর। এ বছর বরাদ্দ না-হলে সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হতে পারত বলে জানাচ্ছেন অর্থ দফতরের কর্তারা। কিন্তু ২০১৫-১৬ থেকে ২০১৯-২০ পর্যন্ত রাজ্য অর্থ কমিশন খাতে ৭৪৪২ কোটি টাকা পাওয়ার কথা থাকলেও আপাতত এক বছরের বরাদ্দ পেয়েই খুশি থাকতে হচ্ছে পঞ্চায়েত ও পুরসভাগুলিকে। যদিও প্রথম বছর ১১০৩ কোটি টাকা পাওয়ার কথা থাকলেও পুরসভা ও পঞ্চায়েতগুলি প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েছে অনেকটাই কম।
পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সিপিএম যাওয়ার আগে আমাদের ঘাড়ে ধারের বোঝা চাপিয়ে গেল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন বলেই সব প্রকল্পের টাকা মেটাচ্ছে। কম-বেশির হিসেব করে লাভ নেই। যা পাওয়া যাচ্ছে, তা দিয়েই উন্নয়নের কাজ চলছে।’’ পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রের বঞ্চনার জন্যই আমাদের সমস্যা বেশি। চতুর্থ অর্থ কমিশনের টাকা দেওয়া শুরু হয়েছে। পঞ্চম অর্থ কমিশনের রিপোর্ট আসার আগে পর্যন্ত এই টাকা প্রতি বছর পেতে কোনও সমস্যা নেই।’’
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ৭৩তম সংশোধনীর পরে সংবিধানের ২৪৩ (আই) ধারায় রাজ্য অর্থ কমিশন গড়া আবশ্যিক। সেই অনুযায়ী তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পরে ২০১৩-য় চতুর্থ কমিশন গঠিত হয়। ২০১৬-র ফেব্রুয়ারিতে অভিরূপ সরকারের নেতৃত্বাধীন কমিশন রিপোর্ট জমা দিয়েছে। সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখতে মুখ্যসচিবের নেতৃত্ব পুর, পঞ্চায়েত ও অর্থসচিবকে নিয়ে পর্যালোচনা কমিটি তৈরি করে সরকার। তার পরে তিন বছর অর্থ কমিশন খাতে কোনও টাকা বরাদ্দ করা হয়নি। শেষ পর্যন্ত সেপ্টেম্বরের শেষে প্রথম কিস্তির টাকা বরাদ্দ করেছে নবান্ন। পঞ্চায়েত দফতর পেয়েছে ১৪৭ কোটি টাকা।
চতুর্থ অর্থ কমিশন তাদের রিপোর্টে লিখেছে, পঞ্চায়েত ও পুরসভাগুলির বরাদ্দ পাওয়ার কথা ২০১৫-১৬ থেকে। সেই হিসেবে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে পাঁচ বছরে ৪২৫৬.৫২ কোটি এবং পুরসভাগুলিতে ২৯৮৩.৪৩ কোটি টাকা পৌঁছনোর কথা। এক কর্তার মতে, কেন্দ্রের চতুর্দশ অর্থ কমিশন মূলত গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে টাকা বরাদ্দের সুপারিশ করে। ফলে পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদে টাকা আসা কমেছে। সে-ক্ষেত্রে ভারসাম্য রাখতে রাজ্যের চতুর্থ অর্থ কমিশন পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদে বেশি টাকা দেওয়ার সুপারিশ করেছে। বছরে রাজ্যের আয়ের ২.৫% পঞ্চায়েত ও পুরসভাগুলির জন্য নির্দিষ্ট করতে বলেছে তারা। ২০১৫-১৬ থেকে ২০১৯-২০ পর্যন্ত সেই টাকা দেওয়ার কথা ছিল। সুপারিশ মানা হবে কি না, মেয়াদ শেষের এক বছর আগেও তা অনিশ্চিত।