বারাসতে ধর্মঘটের সমর্থনে মিছিল বামেদের। —নিজস্ব চিত্র
বিভিন্ন কেন্দ্রীয় নীতির প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা সাধারণ ধর্মঘটে জনজীবন সচল রাখতে সব রকম পদক্ষেপ করছে রাজ্য। কলকাতা-সহ রাজ্য জুড়ে বাম-কংগ্রেসের সংগঠনগুলি পথে নামবে। তার মোকাবিলায় কোমর বাঁধছে রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনও। অন্যান্য দিনের মতোই রাস্তায় নামবে পর্যাপ্ত সরকারি ও বেসরকারি বাস। থাকবে ট্যাক্সি-অটোও। বাস-ট্যাক্সি-অটোর মালিকদের বিমার আশ্বাস দিয়েছে সরকার। এ ছাড়া রাস্তায় মোতায়েন করা হবে প্রচুর পুলিশ।
১০০ দিনের পরিবর্তে ২০০ দিনের কাজ, কৃষকবিরোধী আইন বাতিল-সহ কেন্দ্রের একাধিক নীতির বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার সারা দেশে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ব্যাঙ্ক-বিমা—রেল বেসরকারিকরণের প্রতিবাদও জানাবেন ধর্মঘটীরা। ধর্মঘটে শামিল হচ্ছে বাম-কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনগুলি। তবে অংশ নিচ্ছে না বিজেপির শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ। সারা দেশের সঙ্গে এ রাজ্যেও ইতিমধ্যেই জেলায় জেলায় ধর্মঘটের সমর্থনে প্রচার চালিয়েছে বাম-কংগ্রেস। বৃহস্পতিবারও কলকাতা-সহ রাজ্যের প্রায় সর্বত্র পথে নামবে বাম-কংগ্রেস।
বন্ধ-ধর্মঘটের বিরোধী বলে দাবি করে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। সেই রাজনৈতিক অবস্থানের কথা মাথায় রাখতেই ধর্মঘটের মোকাবিলায় রাজ্য সরকারও রাস্তায় নামাচ্ছে পুলিশ-প্রশাসনকে। কলকাতায় যাদবপুর এলাকায় সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে মিছিলের কর্মসূচি রয়েছে। মৌলালি-এন্টালি এলাকায় মিছিলে থাকতে পারেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ এলাকাতেও মিছিল হওয়ার কথা। এই সব কিছু মাথায় রেখেই ঘুঁটি সাজাচ্ছে কলকাতা পুলিশ।
আরও পড়ুন: কে কার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে সব জানি, দলকে কড়া বার্তা মমতার
কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, শুধুমাত্র শহরেই ৫ হাজার ফোর্স মোতায়েন থাকবে। লালবাজারের অফিসারা সকাল থেকেই শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নজরদারি চালাবেন। থাকবেন ডিসি পদমর্যাদার অফিসারা। এ ছাড়া ১০টি কুইক রেসপন্স টিম প্রস্তুত থাকবে যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য। প্রয়োজন মতো অন্য ডিভিশন থেকেও আনা হতে পারে বাহিনী। লালবাজারের কর্তাদের সূত্রে খবর, মেয়ো রোড, হেস্টিংস, রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ, স্ট্র্যান্ড রোড, ধর্মতলা বাস ডিপো, যাদবপুর ৮বি বাসস্ট্যান্ডের মতো শহরের মোট ৩৫টি জায়গায় পিকেটিং থাকবে। এ ছাড়া জেটিঘাট, স্ট্র্যান্ড রোডে আলাদা ব্যাবস্থা থাকবে, যাতে যাত্রীদের ধর্মঘটীরা বাধা দিতে না পারেন। লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁচটি জায়গায় অ্যাম্বুল্যান্স রাখা হবে।
আরও পড়ুন: রাতের শহরে যাত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণ, গ্রেফতার অ্যাপ-বাইক চালক
রাজ্যে লোকাল ট্রেন চালু হয়েছে কিছু দিন আগেই। ধর্মঘটীরা রেল অবরোধ করতে পারেন, এই আশঙ্কায় বাড়তি সতর্কতা নিয়েছে রাজ্য পুলিশ।
বাস-ট্যাক্সি রাস্তায় নামাতে মালিকদের আশ্বস্ত করা হয়েছে, ধর্মঘটে কোনও ক্ষতি হলে বিমার মাধ্যমে তা পূরণ করা হবে। মঙ্গলবারই বেলতলায় বিভিন্ন বেসরকারি বাস, মিনিবাস, অটো, ট্যাক্সি ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মোটর ভেহিক্যালসের কর্তারা। ওই বৈঠক সূত্রে খবর, রাস্তায় বাস-ট্যাক্সি-অটো নামানোর আশ্বাস দিয়েছেন অধিকাংশ সংগঠনের নেতৃত্ব। এর বাইরে হাওড়া এবং শিয়ালদহ স্টেশনের উপরেও বাড়তি নজর থাকবে পুলিশের।