আরও একটি বিমানবন্দরের ভাবনা রাজ্য সরকারের। প্রতীকী চিত্র।
উত্তরবঙ্গের মালদহে ইংরেজবাজার বিমানবন্দরের পরে, ওই জেলায় নতুন আর একটি বিমানবন্দরের চিন্তাভাবনা শুরু করল রাজ্য সরকার। সরকারি সূত্রের খবর, গত সপ্তাহে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী অনলাইনে বিভিন্ন দফতরের সচিব এবং রাজ্যের জেলাশাসকদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে পর্যটন সম্পর্কিত মূল বৈঠক হলেও, রাজ্যের বিভিন্ন জেলার পরিকাঠামোগত দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় মালদহের গাজলে আর একটি বিকল্প বিমানবন্দর করার সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। মুখ্যসচিব নিজেই বৈঠকে শিল্প ও বাণিজ্য সচিবকে মালদহের জেলাশাসকের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করে রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দেন।
শিল্প ও বাণিজ্য দফতরের যুগ্ম সচিব পর্যায়ের এক কর্তা বলেন, ‘‘দফতরের অফিসারদের গাজলে খাস জমি খুঁজে বার করতে বলা হয়েছে। জেলাশাসকের সঙ্গে সমন্বয় করে তা খোঁজার পরে ১৫ দিনের মধ্যে মুখ্যসচিবকে রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ইংরেজবাজার এলাকায় বিমানবন্দর রয়েছে। শহর থেকে যার দূরত্ব তিন থেকে চার কিলোমিটারের মতো। ১৯৬২ সালে সেখানে মালবাহী বিমানের ওঠানামা শুরু হয়েছিল। পরে, তা বন্ধ হয়ে যায়। সেখানে ছোট বিমান এবং হেলিকপ্টার নামতে পারে। টার্মিনালটি এতটাই ছোট যে, সেখানে খুব কম যাত্রীই জড়ো হতে পারেন। ১৯৮৯ সাল নাগাদ কলকাতা, বালুরঘাট এবং মালদহের মধ্যে ‘বায়ুদূত’ বিমান সংস্থা পরিষেবা চালু করে। পরে, তা বাণিজ্যিক কারণে বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি একটি বিমান সংস্থা কোচবিহারের মতো নয় আসনের বিমান পরিষেবার জন্য মালদহে যায়। তারা সব খতিয়ে দেখে, কলকাতা-মালদহ বিমান চালুর চিন্তাভাবনা শুরু করে। কিন্তু তার পরে, এখনও মালদহ থেকে বিমান চলাচল নিয়ে কোনও ঘোষণা হয়নি। বিমান মন্ত্রকও গোটা বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল প্রথম থেকেই।
নবান্নেও বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সচিব স্তরে আলোচনা হয়েছে। সেখান থেকে নবান্নেরই শীর্ষ মহলে জানানো হয়। তার পরেই মুখ্যসচিব বৈঠকে বিকল্প বিমানবন্দর নিয়ে চিন্তাভাবনা করার কথা বলেছেন। মুখ্যসচিবের লিখিত নির্দেশে পরিষ্কার বলা হয়েছে, গাজলে বিকল্প বিমানবন্দরের জন্য জমি দেখতে হবে। সেখানে সাধারণ বিমানবন্দরের মতো ‘রানওয়ে’, ‘টারম্যাক’ করা গেলে, সেটি বিমান সংস্থাগুলির জন্য বাণিজ্যিক ভাবে লাভবান হবে। শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের সঙ্গে মালদহের জেলাশাসককে এ জন্য বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে বলা হয়েছে। যদিও মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘পুরো বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিব পর্যায়ে রয়েছে। গাজলের রিপোর্ট তৈরি না হওয়া পর্যাপ্ত অপেক্ষা করা হবে। তা দেখেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’