ফাইল চিত্র।
রাজ্য মন্ত্রিসভার কয়েকটি স্তরে কিছু দফতরের দায়িত্ব রদবদল করা হতে পারে। তবে তা মন্ত্রিসভা থেকে কাউকে বাদ দেওয়া বা নতুন কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা নয়। সূত্রের খবর, করোনা ও আমপান পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য কয়েকটি দফতরের কাজকর্মে গতি ও সমন্বয় বাড়াতে এমনটা ভাবা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে কিছু দফতরের পুনর্বিন্যাস ঘটিয়ে কয়েকটি বিভাগকে এক মন্ত্রীর অধীনে আনা এবং কয়েক জনের হাতে থাকা একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দফতর আলাদা করার কথা বিবেচনায় রয়েছে।
সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে কয়েক দিনের মধ্যেই দায়িত্ব হাতবদলের এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কোন দফতরের দায়িত্বে কী রদবদল হতে পারে, তার বিশদ তথ্য এখনও স্পষ্ট নয়। তবে তৃণমূলের অন্দরে যে আলোচনা চলছে, তাতে খাদ্য ও গণবণ্টনের দায়িত্ব আলাদা করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। একই ভাবে এখন যেমন পরিবহণ ও সেচের মতো দু’টি গুরুত্বপূর্ণ দফতর এক জন মন্ত্রীর হাতে রয়েছে। রদবদলে এই দু’টি দফতরকেও আলাদা করার সম্ভাবনা রয়েছে। আলাদা হতে পারে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়নের কাজও। এই বিভাজন-ভাবনার পিছনে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের ভূমিকা রয়েছে বলেও শোনা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর কালকের করোনা-বৈঠকে বলার ডাক পেল না বাংলা
করোনা এবং আমপান— দু’টি ক্ষেত্রেই খাদ্য ও গণবণ্টনের ভূমিকা সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
কারণ, দু’টি বিভাগের কাজই জনজীবনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। ফলে পাওয়া না-পাওয়া নিয়ে বিবাদ ও অভিযোগ খুবই প্রকট। এই দু’টি দফতর রয়েছে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হাতে। এই অবস্থায় গণবণ্টনের দায়িত্ব আলাদা করে দিলে কাজে স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বাড়তে পারে। তবে এই বিভাজন হলে জ্যোতিপ্রিয়র হাতে কোন দায়িত্ব থাকবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
আরও পড়ুন: রাজ্যে করোনায় সুস্থতার হার বাড়ছে: মুকুল রায়
একই ভাবে শুভেন্দু অধিকারীর হাতে থাকা পরিবহণ ও সেচ দফতরও গুরুত্বপূর্ণ। লকডাউন শিথিল হওয়ার পরে রাস্তায় বাস নামানো নিয়ে যে অসুবিধা হয়েছে, তাতে পরিবহণ দফতরের কাজের চাপ কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। আবার আমপানের পরে সেচ দফতরের কাজও গুরুত্বে প্রথম সারিতে। একই মন্ত্রীর কাঁধে দুই গুরুভার না রেখে আলাদা করে দিলে সেখানেও কাজে গতি ও দক্ষতা বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। তাঁর প্রতিমন্ত্রী হিসেবে কাজ করছেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। সেখানে নতুন কোনও চাপ নেই।
আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত সুন্দরবনে এখন সার্বিক উন্নয়নের প্রয়োজন। আপাতত এই দফতরে এক জন প্রতিমন্ত্রী রয়েছেন। প্রয়োজনের নিরিখে এই দফতরের গুরুত্ব বাড়ানো যায় কি না, তা বিবেচনায় রয়েছে। যদি তা হয়, তা-হলে এই দফতরের দায়িত্ব কোনও পূর্ণমন্ত্রীকে দেওয়া হতে পারে। এমনকি তার সঙ্গে সেচ দফতরের কাজ যুক্ত করলে কতটা সুবিধা হবে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একই কারণে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়নকে আলাদা করার কথা বিবেচনায় রয়েছে। সামগ্রিক ভাবে এই দুই দফতরের মন্ত্রী এখন সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
দলের কারও কারও ধারণা, এই রদবদলে কোপ পড়তে পারে মন্ত্রী সাধন পান্ডের ক্রেতা সুরক্ষা দফতরে। তাঁর সাম্প্রতিক কিছু কাজকর্মে তৃণমূলের উপরতলা যথেষ্ট ক্ষুব্ধ। তবে দফতর হাতবদল যদি বা হয়, তাঁকে এখন মন্ত্রিত্ব থেকে সরানোর সম্ভাবনা নেই বলেই ধারণা অনেকের।