বাজেট বক্তৃতার শেষে একটি চিরকুট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের হাতে। দেখা যায়, মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে নেওয়া চিরকুটটি অরূপ দিয়ে আসেন চন্দ্রিমাকে। এর পরেই ডিএ বাড়ানোর ঘোষণা হয়। — ফাইল চিত্র।
অবশেষে মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। ওই ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী মার্চ মাসের বেতন থেকেই বর্ধিত হারে ডিএ পাবেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, অতিরিক্ত ৩ শতাংশ ডিএ দেবে রাজ্য। সরকারি কর্মচারীদের পাশাপাশি, পেনশনভোগীরাও ওই সুবিধা পাবেন বলে জানানো হয়েছে।
বুধবার বিধানসভায় রাজ্য বাজেট পেশ করেন চন্দ্রিমা। তবে তার মধ্যে ডিএ বৃদ্ধির কথা ছিল না। বাজেট বক্তৃতার শেষে একটি চিরকুট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের হাতে। দেখা যায়, মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে নেওয়া চিরকুটটি অরূপ দিয়ে আসেন চন্দ্রিমাকে। এর পরেই ডিএ বাড়ানোর ঘোষণা হয়।
বকেয়া ডিএ নিয়ে এমনিতেই চাপে রয়েছে রাজ্য সরকার। বকেয়া না পেলে নির্বাচনের কাজে যাবেন না বলে নবান্ন এবং নির্বাচন কমিশনকে মঙ্গলবারই হুঁশিয়ারি দিয়েছে সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। তার পরের দিনই রাজ্য সরকার অতিরিক্ত ডিএ ঘোষণা করে দিল। তবে তাতে সরকারি কর্মীরা কতটা খুশি হবেন তা নিয়ে আশঙ্কা রয়েই গেল। কারণ, সরকারি কর্মীরা কেন্দ্রীয় সরকারি হারে ডিএ-র দাবিতে আন্দোলন করছেন।
রাজ্য সরকারি কর্মীদের দাবি অনুযায়ী, ডিএ-র ক্ষেত্রে কেন্দ্রের তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। কেন্দ্রীয় সরকার তাদের কর্মীদের জন্য আরও ৪ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করতে পারে শীঘ্রই। সেটা হলে নতুন ব্যবস্থায় কেন্দ্রের সঙ্গে বাংলার ডিএ-র ব্যবধান বেড়ে হবে ৩৯ শতাংশ। এই বকেয়া ডিএ-র দাবিতে শহিদ মিনারে দীর্ঘ দিন ধরে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন রাজ্য সরকারি কর্মীদের একাংশ। তবে বুধবারের ঘোষণার পরে বর্তমান বকেয়া রইল ৩২ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, ডিএ-র দাবি নিয়ে আদালতেও চলছে লড়াই। সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলা এখনও বিচারাধীন। আগামী ১৫ মার্চ মামলাটির পরবর্তী শুনানি। গত বছরের ৫ ডিসেম্বর মামলাটি প্রথম বার শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টে ওঠে। পরে শুনানির দিন পিছিয়ে ১৪ ডিসেম্বর করা হয়। পাশাপাশি, এই মামলা শুনানির জন্য নতুন করে ডিভিশন বেঞ্চও গঠিত হয়। সেখানে ছিলেন দুই বাঙালি বিচারপতি— বিচারপতি হৃষীকেশ রায় এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত। কিন্তু ওই দিনই মামলাটি থেকে বিচারপতি দত্ত সরে দাঁড়ান। ফলে মামলার শুনানি হয়নি। জানুয়ারিতে আবার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। সেই মতো ১৬ জানুয়ারি, সোমবার পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক হয়। শেষ পর্যন্ত তা-ও হয়নি। এ সবের মধ্যে গোটাটা না হলেও রাজ্য সরকারি কর্মীদের আংশিক দাবি মেনে নিল নবান্ন।