—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
স্কুল পড়ুয়া থেকে পুলিশের বিভিন্ন বিভাগের কুচকাওয়াজ, ট্যাবলোয় সরকারি প্রকল্পের সাফল্যের প্রচার— স্বাধীনতা দিবসের সকালে কলকাতার রেড রোডে এমন বর্ণময় অনুষ্ঠান নতুন নয়। তবে সেই কুচকাওয়াজের তালিকায় এ বার সংযোজন ঘটতে চলেছে সরকারি হাসপাতালের নার্সদের। তা নিয়ে শুরু হয়েছে বিরোধীদের টিপ্পনী। আর এখন আরজি করে চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের আবহে স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে নার্সদের অংশগ্রহণ বাড়তি তাৎপর্য পাবে।
সম্প্রতি এক সরকারি নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, কলকাতা এবং তার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ওই নার্সিং স্টাফদের স্বাধীনতা দিবসের সকালে স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ বিভাগের প্রতিনিধি হিসেবে কুচকাওয়াজে অংশ নিতে হবে। ৬৬ জনের ওই তালিকায় এসএসকেএম, এনআরএস, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ছাড়াও রয়েছে হাওড়ার জগদীশপুর, ডোমজুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর ও সরশুনার কয়েকটি সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নার্সিং স্টাফের নাম।
শুধু ১৫ অগস্ট সকালেই নয়, স্বাস্থ্য ভবনের ওই নির্দেশিকায় তাঁদের কুচকাওয়াজের মহড়ার জন্য হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল।
সরকারি হাসপাতালে নার্সিং স্টাফের আকাল নতুন খবর নয়। এই অবস্থায় কুচকাওয়াজে নার্সদের টেনে আনা কি খুব জরুরি ছিল? এসএসকেএম হাসপাতালের এক প্রবীণ চিকিৎসকের কথায়, ‘‘সরকারি সিদ্ধান্ত তো আর অমান্য করার উপায় নেই, তবে নার্সদের মতো জরুরি বিভাগের কর্মচারীদের না টানলেই ভাল হত!’’ বিজেপি-র স্বাস্থ্য সেলের তরফেও সরকারি এই সিদ্ধান্তকে ‘খেলা-মেলা-অনুষ্ঠানে মত্ত সরকারের খামখেয়ালি সিদ্ধান্ত’ বলেই কটাক্ষ করা হয়েছে।
অল বেঙ্গল মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষের উচিত এই সিদ্ধান্তে যেন রোগী পরিষেবা ব্যাহত না হয় সে দিকে খেয়াল রাখা।’’ নবান্ন সূত্রে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে নার্সিং স্টাফের ঘাটতি রয়েছে ঠিকই। তবে, অল্প সময়ের জন্য ওই নার্সদের ছাড়া হবে, ফলে পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
নার্সদের সংগঠন ‘নার্সেস ইউনিটি’-র সম্পাদক ভাস্বতী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নার্স- চিকিৎসকেদের কাজ রোগী পরিষেবার। তাই সে দিকে গুরুত্ব দিলেই স্বাধীনতা ও স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রতি যথার্থ সম্মান প্রদান করা হত বলে মনে করি।’’