তৃতীয় দফায় রাজ্যে শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থানে বাড়তি জোর দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। ফাইল চিত্র।
শুধু কলকাতা এবং লাগোয়া তিন জেলা নয়, শিল্পতালুক গড়ার ক্ষেত্রে জমির ‘সিলিং’ বা সীমায় ছাড় মিলবে গোটা পশ্চিমবঙ্গেই। প্রশাসনিক সূত্রের বক্তব্য, শিল্প-সহায়ক বার্তা এবং বিনিয়োগে উৎসাহ দিতেই নবান্নের এই পদক্ষেপ। কলকাতা ও সংলগ্ন তিন জেলা আগেই এই সুযোগ পেয়েছে। এ বার একই নীতি গোটা রাজ্যে বলবৎ হওয়ায় শিল্পের পরিসর অবাধ হবে। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই মনে করছেন, জমির পরিমাণের জন্য অনেক উদ্যোগপতিই শিল্পতালুকে বিনিয়োগ করতে চাইতেন না। এ বার জমির সীমা শিথিল হওয়ায় আগ্রহ আরও বাড়বে। সমান ভাবে বাড়বে শিল্প সংক্রান্ত বিবিধ গতিবিধি। এবং কর্মসংস্থানও।
শিল্পতালুক গড়তে চাইলে আগে ন্যূনতম ২০ একর জমি দেখাতে হত। কয়েক মাস আগে সেই নীতি বদলে তৃণমূল সরকার জানিয়ে দেয়, কলকাতা পুর এলাকা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং হাওড়ায় ন্যূনতম পাঁচ একর জমি থাকলেই আগ্রহী উদ্যোগপতিরা শিল্পতালুক গড়ার অনুমতি পাবেন। নবান্ন সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাজ্য মন্ত্রিসভা সারা বাংলায় এই সুবিধা সম্প্রসারিত করার প্রস্তাবে সিলমোহর দিয়েছে। সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, দার্জিলিং জেলাতেও একই নীতি বলবৎ হবে। ফলে রাজ্য সরকার এখন পাহাড়কেন্দ্রিক শিল্পের যে-সম্ভাবনাকে পাখির চোখ করছে, তা নতুন করে জলবাতাস পাবে। শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “শিল্পে উৎসাহ বাড়াতেই এই পদক্ষেপ।”
তৃতীয় দফায় রাজ্যে শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থানে বাড়তি জোর দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। শিল্পায়ন ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যাবতীয় জট বা বাধা কাটাতে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে কাজ করে চলেছে নতুন পর্ষদ। সেই সঙ্গে ধারাবাহিক ভাবে নানা ধরনের নীতি সংশোধনের পথে হাঁটছে সরকার। রাজ্য জুড়ে শিল্পতালুক গড়ার ক্ষেত্রে জমির সীমায় ছাড়ের বিষয়টি তার অন্যতম।
অতীতে আরও কিছু বিষয়ে সরলীকরণের পথে হেঁটেছে রাজ্য। বেসরকারি শিল্পতালুকে গুদামঘর বা লজিস্টিক্স সংক্রান্ত কাজকর্ম করা যেত না। সেই নীতি পাল্টে হিমঘর পরিষেবাকেও শিল্পতালুকে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নবান্ন। উৎসাহ ভাতার প্রশ্নে নমনীয় হওয়ার ইঙ্গিতও আগে দিয়েছে সরকার। যে-উৎসাহ ভাতা কাজ শেষ হওয়ার পরে দেওয়া হত, এখন তা মিলবে ২০%, ৩০% এবং ৫০% হারে নির্দিষ্ট কিস্তিতে।