বিধানসভা চত্বরে প্রদর্শশালার পরিকল্পনা

প্রদর্শশালা হচ্ছে রাজ্য বিধানসভায়। বিধানসভা ভবনের পূর্ব দিকে ( রাজভবনের দিকে) এর জন্য দোতলা বাড়ি তৈরি হবে। তার নকশা তৈরির প্রাথমিক কাজও হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

কাজী গোলাম গউস সিদ্দিকী

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৫ ০০:৩৭
Share:

বিধানসভা ভবন। —ফাইল চিত্র।

প্রদর্শশালা হচ্ছে রাজ্য বিধানসভায়। বিধানসভা ভবনের পূর্ব দিকে ( রাজভবনের দিকে) এর জন্য দোতলা বাড়ি তৈরি হবে। তার নকশা তৈরির প্রাথমিক কাজও হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

কী রয়েছে রাজ্য বিধানসভায়? ভারতের কনস্টিট্যুয়েন্ট অ্যাসেম্বলিতে গৃহীত ভারতের সংবিধানের হাতে লেখা মূল বইটির প্রতিলিপি। মূল বইয়ের অলঙ্করণ করেছিলেন নন্দলাল বসু-সহ শান্তিনিকেতনের শিল্পীরা। সেই সঙ্গে কনস্টিট্যুয়েন্ট অ্যাসেম্বলিতে বিতর্কের সব নথি, দেশভাগ পর্ব, ক্ষমতা হস্তান্তর সংক্রান্ত নথিপত্র। ১৮৬২ সালে বেঙ্গল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের প্রথম বৈঠকের কার্যবিবরণীও রাখা রয়েছে। তখন কাউন্সিলের সদস্য মাত্র ১২ জন। প্রথম বৈঠকে তাঁরা কে, কী বলেছিলেন— সে সবও রয়েছে। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলিতে চলা ঐতিহাসিক বিতর্কের নথিও আছে। রয়েছে ১৯৫৫ সালে প্রথম ভূমি সংস্কার বিল, যা এই বিধানসভার অনুমোদন পেয়ে পরে আইনে পরিণত হয়। আছে ১৯৪৯ সালের ঠিকা টেনেন্সি আইন, ১৯৫১ সালের কলকাতা পুরসভা আইন, ১৯৭৩ সালের পঞ্চায়েত আইন-সহ বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি। এখন এই সব রয়েছে বিধানসভার গ্রন্থাগারে। সেগুলি প্রদর্শিত হবে ওই প্রদর্শশালায়। থাকবে রাজ্য বিধানসভায় বিভিন্ন সময়ে স্পিকারদের দেওয়া ‘ঐতিহাসিক’ রুলিংয়ের নথি।

বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ব্রিটিশ যুগ থেকে এই সময় পর্যন্ত প্রায় ৫০০টি স্মারক রয়েছে রাজ্য বিধানসভায়। এগুলির ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম। তিনি বলেন, ‘‘গুরুত্বপূর্ণ ওই সব স্মারকের উপযুক্ত সংরক্ষণ এবং প্রদর্শনের জন্য বিধানসভার নিজস্ব প্রদর্শশালা প্রয়োজন।’’

Advertisement

শ্রীরামকৃষ্ণ, সারদাদেবী থেকে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, প্রফুল্ল ঘোষ, বিধান রায়, ফজলে হক, নৌসর আলি, জ্যোতি বসু-সহ বিভিন্ন খ্যাতনামা ব্যক্তির প্রায় ১০০টি তৈলচিত্র রয়েছে। বেশির ভাগই রয়েছে বিধানসভা ভবনের লবিতে। প্রস্তাবিত প্রদর্শশালাটি হলে সেখানেই রাখা হবে ওই সব ছবি।

বিমানবাবু বলেন, ‘‘এই বিধানসভা ভবনে এসেছিলেন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু। এসেছিল চিনা প্রতিনিধি দল। তাঁদের সেই সব ছবিরও প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে প্রদর্শশালায়। থাকবে এ পর্যন্ত রাজ্যের সব মুখ্যমন্ত্রী ও স্পিকারদের ছবি।’’ স্বাধীনতা আন্দোলনে বাংলার অবদান নিয়ে একটি তথ্যচিত্রও তৈরি হচ্ছে বলে তিনি জানান।

স্পিকার জানান, বিধানসভা চত্বরে থাকা গাছগুলি নতুন ভবন তৈরির করার সময়ে কাটা হবে না। কেবল রাজভবনের দিকের গোলাপ বাগানটি সরিয়ে নেওয়া হবে। বিধানসভা ভবনে ঢোকার প্রধান গেটের বাঁদিকেও একটি গোলাপ বাগান রয়েছে। সেখানেই নতুন ভবন নির্মাণের জন্য সরিয়ে নেওয়া গোলাপ গাছগুলি বসানো হবে। নব নির্মিত ওই প্রদর্শশালায় ৪০০ আসন বিশিষ্ট একটি সেমিনার হল থাকবে। এখন রাজ্য বিধানসভায় নিজস্ব কোনও সেমিনার হল নেই। ফলে বিভিন্ন সময়ে পড়ুয়াদের ‘মক পার্লামেন্ট’ করার কাজটি অন্যত্র করতে হয়। এ ছাড়া বিধানসভার নিজস্ব যে কোনও অনুষ্ঠানও বিধানসভা ভবনের লবিতেই করা হয়। বিধানসভার বর্তমান বাড়িটি ‘ঐতিহ্যবাহী ভবন’-এর তালিকায় রয়েছে। তার ফলে নতুন ভবনের উচ্চতা কোনও ভাবেই দোতলার বেশি করা যাবে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement