গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
দক্ষিণ কলকাতার পুরনো বাড়িতে চুপিসারে চলছিল ‘আড়ি’ ছবির শুটিং। অভিনেত্রী মৌসুমি চট্টোপাধ্যায় সেই কারণেই মুম্বই থেকে ঝটিতি সফরে কলকাতায়। শুটিংয়ের ফাঁকে তাঁর একান্ত সাক্ষাৎকার আনন্দবাজার অনলাইনে। দেখামাত্রই বলে উঠলেন “আমি কিন্তু তোমাকে তুমি ডাকব।”
প্রশ্ন: শোনা যায়, আপনি ছোটদেরও আপনি সম্বোধন করেন?
মৌসুমী: অভিনয় দুনিয়ায় আমার গুরুদেব তরুণ মজুমদার। উনি ছোট-বড় নির্বিশেষে সকলকে আপনি সম্বোধন করতেন। আমিও তা-ই করি। তাপস পালের অস্বস্তি হত আমার থেকে আপনি সম্বোধন শুনে। আমি বলেছিলাম ওকে, “সম্মান না পেয়ে কেউ সম্মান করলে তোমরা নিতে পারো না”। রঞ্জিতবাবুকে এখনও আপনি সম্বোধন করি। ওদের সঙ্গে দেখা করার কথা। কোয়েলের দ্বিতীয় সন্তান হয়েছে, ওকে দেখতে যাব। আমার বড় মেয়েটা তো চলে গেল।
প্রশ্ন: বড় আঘাত, সামলেছেন কী ভাবে?
মৌসুমী: যদি আধ্যাত্মিক পথে থাকো কিছু এসে-যাবে না। দুঃখকে আমি কখনও বড় করতে চাই না। নিজের আনন্দ, সুখ যদি কারও সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারো, তা হলে সেটা করো। লোকে বলবে, ‘পাগলে কী না বলে ছাগলে কী না খায়’। আমার বড় মেয়ে পায়েলের মৃত্যুবার্ষিকী গেল কিছু দিন আগে। পায়েল খুব অল্প বয়সে চলে গেল। কিন্তু বেঁচে থাকলে আরও ভুগতে হত ওকে। আমি এ ভাবেই নিজেকে বুঝিয়েছি। বাবা তো বলতেন মৃত্যু একটা আশীর্বাদ। জীবন-মৃত্যু মেনে নিয়েই নিজেকে ভাল রাখতেই হবে।
প্রশ্ন: নিজেদের যত্ন নেন যাঁরা, তাঁদের পছন্দ করেন আপনি?
মৌসুমী: মেয়েরা সাজগোজ করলে খুব ভাল লাগে। ছেলেরা সাজলে হাসিখুশি লাগে, ছেলেদের ব্যক্তিত্ব, শিষ্টাচার চোখে পড়লে ভাল লাগে। আমাদের জমানায় বিনোদ খন্না, ধর্মেন্দ্র উঠে চেয়ার এগিয়ে দিত। আর এখানে অভিনেতারা একটা হিট দিয়েছে কি দেয়নি, কী হাবভাব, চিকলেট খাচ্ছে আর পা দোলাচ্ছে! তাকে ঘিরে আবার চার-পাঁচটা বাউন্সার। যখন এসেছিলাম, আমাকেও ‘বডিগার্ড’-এর কথা বলা হয়। আমার যা দেহ, তা রক্ষার জন্য দেহরক্ষী লাগবে না।
প্রশ্ন: জনপ্রিয়তা এখন নানা রকমের। অনেকে রিল করেই জনপ্রিয় …
মৌসুমী: রিল আবার কী?
প্রশ্ন: ওই যে সমাজমাধ্যমে স্বল্পদৈর্ঘ্যের ভিডিয়ো…
মৌসুমী: ও আচ্ছা বুঝেছি! ভাল চাকরি ছেড়ে দিয়ে বাড়িতে নাচ করে ভিডিয়ো বানাচ্ছে। কী বোকা বোকা কাণ্ড ভাই!
প্রশ্ন: কিন্তু এটাও তো একটা রোজগারের মাধ্যম?
মৌসুমী: বেঁচে থাকার জন্য রোজগারের প্রয়োজন। কিন্তু আত্মসম্মান বেচে দিলে রাতে তো ঘুম আসবে না। মানুষ কি ভুল করে না? আমি কি ভুল করিনি? ভুল করলে তার পুনরাবৃত্তি কোরো না। লক্ষ্য থাকুক, কিন্তু তার সীমাও থাকুক। চারটে ফ্ল্যাট চাই, লন্ডনে একটা বাড়ি চাই, চারটে গাড়ি চাই! তার পর তারা কি আর মানুষ থাকে! মানুষের বোধই তো নেই। শুধু স্টেটাস আর পয়সা!
প্রশ্ন: অথচ হেমন্ত মুখোপাধ্যায় কী সহজ মানুষ ছিলেন…
মৌসুমী: হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের মতো সহজ মানুষ হয় না। ওই সাদা হাফহাতা শার্ট আর ধুতি। কেন জানি না লোকে এগুলো শেখে না।
প্রশ্ন: আপনি তো প্রচুর নায়কের সঙ্গে কাজ করেছেন। ধর্মেন্দ্র, জিতেন্দ্র, বিনোদ খন্না, অমিতাভ বচ্চন, রাজেশ খন্না— প্রত্যেকে কতটা আলাদা পরস্পরের থেকে?
মৌসুমী: সে এখন বিশ্লেষণ করতে বসলে মুশকিল। নির্দিষ্ট প্রশ্ন থাকলে বলুন…
প্রশ্ন: আচ্ছা, অমিতাভ বচ্চনের কথাই বলুন…
মৌসুমী: অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে যখন কাজ করি, তখন সে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। শুরুর দিকে দেখতাম, সেটে শটের বাইরে চুপচাপ একলা বসে আছে। আমার কেশসজ্জা শিল্পীর সঙ্গে বসে খাবার খাচ্ছে। খুব কষ্ট করে বড় হয়েছে, কিন্তু বড় হয়ে যে ভাল হয়েছে তা নয়। অতিরিক্ত জিনিস পেলে ঠিক থাকে না মানুষ। এটা আমার কথা নয়। বড়রা বলে গিয়েছেন। পুরাণেও তা-ই আছে। আতিশয্য এসে গেলে কারও উপকার করার কথা ভাবতেই পারে না মানুষ।
প্রশ্ন: শাহরুখ খানকে নিয়ে কী বলবেন তা হলে?
মৌসুমী: কিছুই বলব না। শাহরুখকে আমি ততটা ভাল করে চিনি না। তবে আমির খান যেমন বলেছিল, ও আমার অনুরাগী। সইফ আলি খানের সঙ্গে কাজ করেছি। তবে আমাদের মধ্যে একজন নায়ক ছিলেন যে ভীষণ অহঙ্কারী, রাজেশ খন্না। এত পেয়েছে, মাথার ঠিক থাকবে কী ভাবে!
প্রশ্ন: খুব অল্প বয়সে বিয়ে হয়েছে তো আপনার?
মৌসুমী: সবই অল্প বয়সে হয়েছে আমার। আমি কি এমনি এমনি নষ্ট হয়েছি! ‘বালিকা বধূ’ নিয়ে একটা গল্প বলি। সন্ধ্যা রায়ের জন্য ‘বালিকা বধূ’ ঠিকঠাক হয়েছিল। তরুণ মজুমদার দু’বার বলেছিলেন “বন্ধ করে দাও।” আমি তখন খুবই ছোট। পর্দায় আমাকে কিশোরী দেখানোর জন্য আমাকে বাড়তি প্যাড দিয়ে পেটিকোট পরানো হয়েছিল। প্যাক আপের পর সেখানেই, পরিচালকের সামনে পোশাক খুলতে আরম্ভ করেছি। ছোট তো, বুঝিনি কিছু। সে সব দেখে তরুণ মজুমদার চিৎকার করে বলে, “এই এই ওকে ভিতরে নিয়ে যাও।” সে কী কাণ্ড! আমি ভ্যাঁ করে কেঁদে ফেলেছি। আমি তো তখন কিছুই জানি না।
প্রশ্ন: বিশেষ কোনও ঘটনা স্মরণে রয়েছে?
মৌসুমী: শুটিংয়ে রোদে খালি পায়ে দৌড়ে পায়ের তলায় ফোস্কা পড়ে গিয়েছিল। ঘুমের মধ্যে হঠাৎ দেখি, তনুকাকু আমার পায়ের তলায় তেল মালিশ করছে। এগুলোই আমার কাছে আশীর্বাদ। এখন নতুনদের কিছু বললেই বলে, “এটা আমাদের কাজ নয়।” হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়কে দেখে শিখুক এখনকার অভিনেতারা। শুটিং ফ্লোরে জল পড়েছে দেখে নিজেই গামছা দিয়ে পরিষ্কার করতে আরম্ভ করে দিয়েছিল।
প্রশ্ন: এটা আপনার একশোতম ছবি?
মৌসুমী: জানি না। আমি আসলে আমার কাজের হিসেব রাখি না। কাজ করে আনন্দ পাই, তাই করে যাই।
প্রশ্ন: এমন কোনও ছবি রয়েছে, যা করতে পারেননি বলে আক্ষেপ রয়ে গিয়েছে?
মৌসুমী: না! এ রকম কোনও ব্যাপার নেই। দুঃখটা তোমার হাতে, যত ক্ষণ ধরে রাখবে রাখো, হাতে ব্যথা হবে তার পর। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করো, আমি যেন নিজেকে আনন্দে রাখতে পারি। আমি আজ আছি, কাল নেই। নিজেরা ভাল করে কাজ করো।
প্রশ্ন: ‘আড়ি’ কেমন ছবি ?
মৌসুমী: পরিচালক জিৎ চক্রবর্তীর জন্য ‘আড়ি’ ছবিটা করছি। একটা বাচ্চা ছেলে সে, মুম্বইয়ে গিয়ে আমাকে বলে এই চরিত্রের কথা। বলেছিল, আমি রাজি না হলে ও কাজটা করবে না। সেই সময় ফুসফুসের ৩০ শতাংশ কাজ করছে। গল্প ভাল লাগল। রাজি হলাম। মা আর ছেলের গল্প। আমি তো পেসমেকার বসিয়ে এসেছি। সাত বছর বাড়ি থেকে বেরোইনি, বর দু’বার আইসিইউ থেকে এসেছে। বরটা কিন্তু ভাল আমার।
প্রশ্ন: বর আর সাপের গল্পটা বলুন না…
মৌসুমী: বেঙ্গালুরুতে পাহাড়ি অঞ্চলে শুটিংয়ের সময় সাপ বেরিয়েছিল। ঋষি কপূর, নীতু কপূরের সঙ্গে শুটিং করছিলাম। হঠাৎ সাপের আগমন! নীতু ভয়ে চুপ, আমি কিন্তু সাপটিকে ধরে ফেলি। আমার হাতে পেঁচিয়ে গিয়েছিল সে। আমার বর চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে তোয়ালে পরে বেরিয়ে এসে বলছে, “এই তুমি সাপ ছাড়ো, না হলে ডিভোর্স দেব।” আমি বলেছিলাম, “ডিভোর্স দেবে না কী করবে আমি জানি না। আমি বাবা সাপ ছাড়ব না, না হলে মারা পড়ব।”
প্রশ্ন: ভয় করেনি?
মৌসুমী: আমি ছোটবেলা থেকেই সাপ ধরতে পারি। দু’বার সাপে কামড় দিয়েছে আমাকে। তার পর বোধ হয় সে-ই মরেছে! তবে মৃত্যু তো একদিন আসবেই। এখন তুমি বাঘের হাতে মরবে না বরের হাতে, তা কেউ জানে না। আর শোনো, আমাদের ভিতরে সাপ নেই? আমার শাশুড়ি পাশে শুয়ে বলতেন, “আমার ভিতরে একটা সাপ আর বিছে আছে…” আমি বলতাম, “তুমি ডাইনি ছিলে কি না কে জানে, আমি কখনও কারও মুখে এই ধরনের কথা শুনিনি।” ইনিই বেলা মুখোপাধ্যায়।
প্রশ্ন: হেমন্ত মুখোপাধ্যায় আর বেলা মুখোপাধ্যায়ের দাম্পত্য কেমন ছিল?
মৌসুমী: হেমন্ত মুখোপাধ্যায় খুব সহজ মানুষ ছিলেন। পাশাপাশি এত উচ্চ স্তরের মানুষ ছিলেন, উনি সব কিছুই মানিয়ে নিতেন। এর বেশি আর কিছু বলব না। একই সঙ্গে সহ্যক্ষমতা প্রচুর। মুম্বইয়ে উনি আমার বাবা-মা দুই-ই ছিলেন। ওঁর মৃত্যু হল যে দিন, সে দিনই উপলব্ধি হয়েছিল, মুম্বইয়ে আমি অনাথ। উনি আমাকে যে ভালবাসা ও সম্মান দিয়েছেন, নিজের ছেলেমেয়েদেরও তা কখনও দেননি। পায়েল তো ওঁর চোখের মণি ছিল।
প্রশ্ন: যশ-নুসরতকে কেমন লাগল?
মৌসুমী: জীবনের খুব ঝুঁকিপূর্ণ অধ্যায়ে রয়েছে ওরা। যশ-নুসরত দু’জনেই খুব মিষ্টি। আমি যশকে বলেছিলাম, একে ফাঁসালে কী ভাবে? যশ খুব কম কথা বলে। আমাকে খুব আদর-যত্নে রেখেছে ওরা। নুসরত বলে, “যশ আমাকে ভালবাসে না।” আমি বলেছি ওকে, যারা ভালবাসে, মৌখিক ভাবে প্রকাশ করে না। তারা তোমার জন্য কী করল আর কী করতে পারল না, সেটা খেয়াল করলেই বুঝবে সে তোমায় কত ভালবাসে।
প্রশ্ন: নতুন প্রজন্মের প্রেম, বিয়ে নিয়ে কী ধারণা আপনার?
মৌসুমী: এখন তো বিয়ে করাই উচিত নয়, মানুষের সহ্যক্ষমতাই নেই। কারও জন্য কিছু করবে, সেই ভাবনা নেই।
প্রশ্ন: ভাবনায় এতটা পরিবর্তন কেন এল, কী মনে হয়?
মৌসুমী: একা একা জীবনযাপন থেকে। ছেলেমেয়ে দু’জনেই কাজের চাপে থাকে সারা ক্ষণ। দু’জনের মধ্যে মধ্যস্থতা, সামঞ্জস্য রাখা এক রকম, আপস করা কিন্তু আলাদা বিষয়। কলকাতার নব্বই শতাংশ মানুষ বেঁচে নেই। বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে মাত্র।
প্রশ্ন: আপনার জীবনে প্রেম এসেছে?
মৌসুমী: আমি তো সব সময় প্রেম করি। আমার বর, আমি দুজনেই খুব রোম্যান্টিক মানুষ।আমার বর তো বিয়ের পরেও প্রচুর প্রেম করেছে। আমি তো প্রেম করার সময় পাইনি। তবে ফ্লার্ট করেছি প্রচুর। শাবানা আজ়মি আমাকে বলেছে, “ছ’বছর হোক কি ষাট বছর, মৌসুমী সবার সঙ্গে ফ্লার্ট করে যাবে।”
প্রশ্ন: বাংলা ছবি দেখেন?
মৌসুমী: পুরনো বাংলা ছবি দেখি। নতুন বাংলা বা হিন্দি ছবিতে ওরা কী বলতে চাইছে, তা তারা নিজেরাও জানে না। এখন আবার একটা বুদ্ধিজীবী ভাব হয়েছে। তবে সম্প্রতি দক্ষিণী ছবি দেখা শুরু করেছি, আমার ছোট মেয়ের জোরাজুরিতে। বাঙালিদের আর কী বলব! খুব তর্ক করতে পারে কিন্তু এত অলস জাতি! আর শুধু অন্যকে দোষারোপ করে যাবে। কলকাতা এলে কষ্ট হয়। ভাল ভাবে বাঁচার ইচ্ছে নেই। অধিকাংশ ক্ষেত্রে একতাও নেই। আমি দেখছি কেউ পড়ে রয়েছে, হাতটা ধরে একটু তুলে দিই তা নয়! সকলেই ভাবছে কী করে টাকাটা একটু বাড়াব।
প্রশ্ন: আপনার অভিজ্ঞতার ঝুলি তো সমৃদ্ধ…
মৌসুমী: কমল মিত্র, বিকাশ রায়, ছায়া দেবী— বড় বড় মানুষদের সঙ্গে কাজ করেছি। মাদার টেরেসার সঙ্গে কাজ করেছি। উনি আমাকে নিয়ে বাণী লিখে গিয়েছেন। ‘ডিয়ার ইন্দু…’ জিৎ আমার বাড়ি গিয়ে দেখেও এসেছে। আমি খুব সৌভাগ্যবতী।
প্রশ্ন: সামনের জীবনটাকে কী ভাবে দেখতে চান?
মৌসুমী: জানি না। এই ক’দিন আগে স্নানঘরে পড়ে গিয়ে যা কেলেঙ্কারি! এ ভাবে বলতে পারব না বাকি জীবনটাকে কী ভাবে দেখি!
প্রশ্ন: জুটি হিসাবে যশ-নুসরত কেমন?
মৌসুমী: যশ-নুসরত দু’টি ফুল। নুসরতকে কী সুন্দর দেখতে। ওকে তো নাম দিয়েছি, প্যাকাটি সুন্দরী। যশকে দেখলে বাচ্চা মনে হয় কিন্তু ও খুব পরিণত। ওদের জীবনে আশীর্বাদের প্রয়োজন। আর ওরা পাবেও। ওদের যা আচরণ, সকলের কাছে ভালবাসা প্রাপ্য ওদের।
প্রশ্ন: সেটে পুনম আপনাকে সাহায্য করছিলেন?
মৌসুমী: সকলকেই সাহায্য করে পুনম।পরিচালনার দলে রয়েছে ও। পুনম একটা সম্পদ।
প্রশ্ন: তা হলে খুব শীঘ্রই ‘আড়ি’ ছবি আসছে?
মৌসুমী: হ্যাঁ, আশা করা যায়। যদি কেউ কাঠি না করে! বাঙালি কিছু করুক না করুক, কাঠি করার জন্য মুখিয়ে থাকে। এক দিন চিংড়ির একটা পদ খেতে গিয়ে দেখি, চিংড়ির পিছনেই কাঠি!
প্রশ্ন: মৌসুমীর প্রিয় খাবার কী?
মৌসুমী: গলা ভাত, ঘি, কাঁচা লঙ্কা, আলু সেদ্ধ আর ডিম সেদ্ধ। আর মাছ তো প্রিয়। কই মাছ ভাপা, ফুলকপি দিয়ে কই মাছ রান্না। আমি নিজেও ভাল রান্না করি।
প্রশ্ন: আপনার একটা রেসিপি যদি বলেন…
মৌসুমী: মন দিয়ে রান্না করো, তাতে একটু ভালবাসা দাও, তা হলেই হবে। আর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ভাবে রাঁধবে।
প্রশ্ন: আপনার সমসাময়িক অভিনেত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে?
মৌসুমী: ইন্ডাস্ট্রিতে কেউ কারও বন্ধু হয় না, তাই যোগাযোগ রাখি না। যত ক্ষণ কাজ, তত ক্ষণ আছ। এটাই ঠিক আছে।
প্রশ্ন: পরজন্মে বিশ্বাস করেন?
মৌসুমী: বড় মেয়ে চলে যাওয়ার পর আর খুব একটা বিশ্বাস করি না। এত মন্দির, মসজিদ, যজ্ঞ করে কিছুই হয়নি। আর কোনও ব্যাটাই তো ঠিক ভাবে বলতে পারে না! তা সে জ্যোতিষ হোক আর সাধু। বলে দেয়, “আপনার গতজন্মের কর্মফল।” কেন রে ভাই! গতজন্মের পাপ-পুণ্য সেই জন্মেই তো পার করে দিতে পারতেন ভগবান। যেটা হওয়ার সেটা হবেই। নিজেকে ভাল করার চেষ্টা করো।
প্রশ্ন: আরজি করের ঘটনা…
মৌসুমী: মর্মান্তিক ঘটনা, কথা বলতে চাই না। আসলে কী জানেন, রাজনীতি নোংরা নয়। আমরা রাজনীতিকে ঘেঁটে নোংরা করে ফেলেছি। সকলে ‘একলা খাব’ ভেবে চলে। বাচ্চাদের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়াবে না। বলবে, ভদ্র বাড়ির মানুষ রাজনীতিতে যোগ দেয় না। লোকে সমালোচনা করবে কিন্তু আগ্রহ দেখাবে না, কী ভাবে জিনিসটা ভাল হবে!