বঙ্গোপসাগর উপকূলে পরিযায়ী পাখির ঝাঁক। ছবি: প্রকৃতি সংসদ সূত্রে পাওয়া।
মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক জলাভূমি দিবসে রাজ্যে জুড়ে জলের পাখি সুমারির প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশ করল বন দফতর। সেই তালিকায় রাজ্যের ৫৪টি স্থানে অন্তত ১ লক্ষ ২৩ হাজার ৬৭৫টি জলচর পাখির অস্তিত্বের কথা জানানো হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) বিনোদকুমার যাদব প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশ করে বলেন, ‘‘১২ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন জলাভূমি, নদী তীরবর্তী এলাকা এবং সমুদ্র উপকূলে জলের পাখি সুমারি হয়েছে। মাত্র এক দিনের মধ্যে সবগুলি এলাকারা তথ্য সংকলিত করা সম্ভব হয়নি। চূড়ান্ত রিপোর্টে প্রজাতি বৈচিত্র এবং পাখির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।’’ চূড়ান্ত রিপোর্টে অন্তত ৮০ প্রজাতির জলচর এবং জলের উপর নির্ভরশীল পাখি প্রজাতির উপস্থিতি মিলবে বলে জানান তিনি।
বিনোদ জানান, প্রায় তিন সপ্তাহের এই কর্মসূচিতে বনকর্মী, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য, পাখি বিশারদ-সহ ৮০০-রও বেশি মানুষ অংশগ্রহণ করেছিলেন। সুন্দরবন, ফরাক্কার মতো স্বীকৃত ‘গুরুত্বপূর্ণ পক্ষী অঞ্চলের’ (ইম্পর্ট্যান্ট বার্ড এরিয়া) পাশাপাশি তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে অনেক উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের অনেক অল্পচেনা পাখির ডেরাও। ফলে উঠে এসেছে অনেক নতুন তথ্য।
উত্তরবঙ্গে পাখি সুমারি কর্মসূচির অন্যতম সংগঠক শিলিগুড়ির পরিবেশপ্রেমী সংগঠন ‘ হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশন’ (ন্যাফ)-এর কর্ণধার অনিমেষ বসু বলেন, ‘‘শীতকালে উত্তরবঙ্গে এক-দু’টি ফ্যালকেটেড ডাক-এর দেখা মেলে। সাইবেরিয়া, উত্তর জাপান, মঙ্গোলিয়া থেকে আসা এই হাঁস এ বার ছ’টি দেখা গিয়েছে। এ ছাড়া কোচবিহারে সন্ধান মিলেছে ‘বিপন্ন’ প্রজাতির পালাসেস ফিশ ইগলের।’’
সুন্দরবনে সুমারিতে গিয়েছিলেন কলকাতার পাখি পর্যবেক্ষকদের সংগঠন প্রকৃতি সংসদের অপূর্ব চক্রবর্তী। তিনি জানান, এ বার ব্যাঘ্র প্রকল্পের এলাকায় মোট ৩৭টি প্রজাতির ৯,৫৭৪টি পাখির দেখা মিলেছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা বনবিভাগের অন্তর্গত সুন্দরবনের অংশে পাওয়া গিয়েছে আরও ১৫ হাজার জলের পাখি।