প্রতীকী ছবি।
চার বছরে প্রায় চার গুণ। মাছের নানা রকমের পদ বিক্রি করেই বিপুল আয় বাড়িয়েছে রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগম।
বছর চারেক আগে নিগমের দুরবস্থা দেখে এক সময়ে কয়েকটি অতিথিশালার ঝাঁপ বন্ধ করার কথা ভেবেছিল নিগম। কিন্তু ইচ্ছা ও উদ্ভাবনের তাগিদ থাকলে তা যে খেলাটা ঘোরানো যায় তা টের পাচ্ছেন মৎস্য নিগমের আধিকারিক থেকে কর্মীরা। সারা রাজ্যে মৎস্য উন্নয়ন নিগম পরিচালিত আটটি অতিথিশালা রয়েছে। নিগমের অতিথিশালাগুলি হল ওল্ড দিঘা, বকখালির কাছে হেনরি আইল্যান্ড, বকখালি, নিউ দিঘা, বর্ধমানের যমুনাদিঘি, বাঁকুড়ার বিষ্ণপুর, শিলিগুড়ি এবং ইএম বাইপাসের ক্যাপ্টেন ভেড়ি। তা ছাড়া, খাস কলকাতায় নলবনের ফুডপার্কে নিগমের জমাটি রেস্তরাঁ-পানশালা। নবান্ন ও বিকাশ ভবনের রেস্তরাঁ সামলাচ্ছে নিগম।
নিগম সূত্রের খবর, ২০১৪-১৫ সালে রেস্তরাঁ-অতিথিশালায় মাছের পদ বিক্রি থেকে আয় হয়েছিল ৫৩ লক্ষ ৫৩ হাজার ৫০৪ টাকা। ২০১৭-১৮ সালে তা বে়ড়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৯৯ লক্ষ ৮৯০ টাকা। অর্থাৎ চার বছর আগের হিসাব ধরলে বৃদ্ধি প্রায় চার গুণ। কিন্তু নিগমের আয় বৃদ্ধির পিছনে রহস্যটা কী?
রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৌম্যজিৎ দাসের কথায়, ‘‘আমরা যেমন প্রতিটি অতিথিশালায় বিভিন্ন মরসুমে মাছের রকমারি রান্নার পদের আয়োজন করেছি ঠিক তেমনি অতিথিদের জন্য বিশেষ ছাড়েরও ব্যবস্থা রয়েছে। পাশাপাশি, অতিথিশালায় দক্ষ রাঁধুনি রাখা হয়েছে। ওই সমস্ত রাঁধুনির প্রশিক্ষণের জন্য একটি বিখ্যাত রেস্তরাঁর সঙ্গে গাঁটছাড়া বেঁধেছি।’’ সেই সঙ্গে রেস্তরাঁর মেনু ঘন ঘন পাল্টে আকর্ষক করে তোলার চেষ্টাতেও খামতি নেই। বিপণনের তাগিদে বছরে নানা উৎসবে মাছের ‘ফুড ফেস্টিভ্যাল’ও আয়োজন করছে নিগম। মাছের বিরিয়ানি, কাবাব থেকে ধ্রুপদী ভাপা, ভাজা, ঝোল, ঝাল— যা যা বাঙালির মুখে রোচে, রয়েছে সব কিছুরই ব্যবস্থা।
নিগম কর্তাদের মতে, এ সবই কর্পোরেট যুগে টিকে থাকার কৌশল। বিভিন্ন হোটেলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ২০১৫ থেকে অনলাইন বুকিং চালু করেছে নিগম। রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের কথায়, ‘‘আমাদের সব ক’টি অতিথিশালায় অনলাইন বুকিংয়ের সুবিধা থাকার জন্য পর্যটক সংখ্যা বেশ বেড়েছে। পাশপাশি, এক বার যাঁরা আমাদের অতিথিশালায় ঘুরে গিয়েছেন তাঁদের জন্মদিন বা বিবাহবার্ষিকীর মাস খানেক আগে এসএমএস পাঠানো হয়।’’ মন্ত্রীর কথায়, ‘‘যাঁরা প্রথম বার আমাদের অতিথিশালায় ঘুরে গিয়েছেন তাঁদের মোবাইলে এসএমএস করে বিশেষ ছাড়ের কথা বলা হয়। দেখা গিয়েছে অনেকেই তাতে উৎসাহিত হচ্ছেন।’’