মদ বিক্রি করা যাবে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট বয়সের উপরের ক্রেতাদেরই
করোনা পরিস্থিতিতে বাড়ি বাড়ি সব রকমের মদ পৌঁছে দেওয়ার পরিষেবা শুরু করেছিল রাজ্য সরকার। সেই ব্যবস্থা রাজ্যের আবগারি দফতরের পোর্টাল থেকে হলেও পৌঁছে দেওয়ার কাজ করতে হত বিভিন্ন মদের দোকানকে। এলাকাভিত্তিক ভাবে মদের দোকান নিজস্ব কর্মীদের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি অর্ডার মাফিক বিয়ার, হুইস্কি, রাম, দেশি ইত্যাদি পৌঁছে দিত।
সেই পরিষেবা এখনও কোথাও কোথাও চালু থাকলেও তা পুরোপুরি সক্রিয় নয়। এই পরিস্থিতিতে পাকাপাকি ভাবে বিভিন্ন ই-রিটেল সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করে এই পরিষেবা বড় আকারে চালু করতে চাইছে রাজ্য সরকার। সরকারি ভাবে এটিকে মদের ‘ই-রিটেল’ বলা হলেও আবগারি দফতরের অনেকেই এটিকে ‘দুয়ারে মদ’ প্রকল্প নাম দিয়েছেন।
আবগারি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত অগস্ট মাসেই এই প্রক্রিয়া শুরু হয়। আবগারি দফতরের অধীন ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট বেভারেজেস কর্পোরেশন’ (বেভকো) মদের ই-রিটেল করতে আগ্রহীদের আবেদনপত্র চেয়েছিল। সেই সব সংস্থাকেই আবেদন করতে বলা হয়েছিল, যারা অনলাইনে মদ্যপ্রেমীদের বরাত নিতে পারবেন এবং বিভিন্ন খুচরো দোকান থেকে মদ কিনে ক্রেতাদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারবেন। তবে এই ব্যবস্থায় একটি শর্ত দেওয়া ছিল যে, মদ বিক্রি করা যাবে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট বয়সের উপরের ক্রেতাদেরই।
আবগারি দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, অগ্রিম ২৫ হাজার টাকা দিয়ে অনেক আবেদন জমা পড়েছিল দফতরে। তার মধ্যেই বাছাই করে চারটি সংস্থাকে বাছা হয়েছে। মনে করা হচ্ছে এই সংস্থাগুলি সরকারের ও ক্রেতাদের চাহিদা পূরণ করতে পারবে। এর মধ্যে একটি কলকাতার। বাকি একটি মুম্বইয়ের, একটি বেঙ্গালুরুর ও একটি চেন্নাইয়ের সংস্থা।
দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি মাসেই এই চার সংস্থা ‘বাজিমাত ড্রিংকস’, ‘নেচারস বাস্কেট’, ‘দুনজো ডিজিটাল’ এবং ‘প্লটিনাস অ্যানালিটিকা’র নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। কোন সংস্থা কোন এলাকায় কাজ করবে, কী ভাবে অনলাইনে বরাত নেওয়া হবে বা বিক্রি হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। ফেব্রুয়ারি মাসের গোড়াতেই চার সংস্থার সঙ্গে ‘মউ’ (মেমোরেন্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং) সাক্ষরিত হবে। তার পরেই নিয়মকানুন সব চূড়ান্ত হয়ে যাবে। ‘বেভকো’ ঠিক করেছে আগামী অর্থবর্ষের গোড়ার দিকে, অর্থাৎ এপ্রিল মাস নাগাদ শুরু হয়ে যাবে বাড়ি বাড়ি মদ পৌঁছে দেওয়ার পরিষেবা।
তবে বাড়ি বাড়ি মদ পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ করোনাকালে অনেক রাজ্যেই তা শুরু হয়েছিল। কিছু রাজ্যে তা পাকাপাকি হয়ে গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গেও কিছু সংস্থা এই সীমিত ভাবে এই পরিষেবা দিয়ে থাকে। তবে সে ক্ষেত্রে অনেক বেশি দাম দিতে হয় ক্রেতাদের। আবগারি দফতর নতুন যে ব্যবস্থা করছে, তাতে বাড়িতে বসে মদ পেতে কতটা বেশি খরচ করতে হবে, তা অবশ্য এখনও জানা যায়নি। বাছাই সংস্থাগুলির সঙ্গে চুক্তির পরেই এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে বলে আবগারি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।