কর্মবিরতির পর এ বার প্রশাসনিক ধর্মঘটের ডাক দিল সরকারি কর্মচারী ইউনিয়নগুলি। ফাইল চিত্র।
প্রশাসনিক ধর্মঘটের দিন বদল করল সরকারি কর্মচারী ইউনিয়নগুলি। আগামী ৯ মার্চের পরিবর্তে ধর্মঘটের দিন ১০ মার্চ স্থির করা হয়েছে। বুধবার এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর বিবৃতি জারি করে তা জানিয়ে দিয়েছে সরকারি কর্মচারীদের যৌথ মঞ্চ।
সরকারি কর্মচারী ইউনিয়নগুলি ৯ মার্চ প্রশাসনিক ধর্মঘটের ডাক দেওয়ার পরেই এ ব্যাপারে ভিন্ন অবস্থান নিয়েছিল বঙ্গীয় শিক্ষা ও শিক্ষক কর্মচারী সমিতি। তাদের বক্তব্য, ছিল, ওই দিন মাধ্যমিকের শারীরশিক্ষার পরীক্ষা রয়েছে। রয়েছে মাদ্রাসা বোর্ডেরও দ্বিতীয় ভাষার পরীক্ষা। মূলত সেই কারণেই এই প্রশাসনিক ধর্মঘটের দিন বদল করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে যৌথ মঞ্চের পক্ষে।
গত সোম ও মঙ্গলবার সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে কর্মবিরতিতে ভাল সাড়া মেলায় ধর্মঘটের কর্মসূচি নিয়েছে সরকারি কর্মচারী ইউনিয়নগুলি। কো-অর্ডিনেশন কমিটির তরফে বিশ্বজিৎ গুপ্ত চৌধুরী জানিয়েছেন, মূলত তিনটি দাবিকে সামনে রেখে তাঁরা ধর্মঘটে শামিল হবেন— বকেয়া মহার্ঘ ভাতা প্রদান, সরকারি পদে স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগ এবং বিভাজনের রাজনীতি বাদ দিয়ে সুষ্ঠু ভাবে প্রশাসন পরিচালনা। যে সমস্ত কর্মচারী ইউনিয়ন দু’দিনের কর্মবিরতিতে অংশগ্রহণ করেছিল, তাদেরও এই ধর্মঘটে শামিল হওয়ার কথা রয়েছে।
গত শনিবার নবান্ন থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল রাজ্য সরকারের তরফে। সেই বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সোম ও মঙ্গলবার কোনও সরকারি কর্মচারী কাজে যোগ না দিলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশাসনিক ধর্মঘট ডাকা কর্মচারী সংগঠনগুলির মতে, ধর্মঘট রুখতেও রাজ্য সরকার ওই ধরনের কড়া বিবৃতি জারি করবে। তবে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফে তাপস চক্রবর্তী বলেছেন, “যে সমস্ত দাবিকে সামনে রেখে ধর্মঘট ডাকা হয়েছে, তাতে সম্পূর্ণ সমর্থন রয়েছে আমাদের। তাই রাজ্য সরকার কী নির্দেশিকা জারি করবে, তা নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। কারণ দু’দিনের কর্মবিরতিতে সরকারি কর্মচারীরা দেখিয়ে দিয়েছেন, রাজ্য সরকারের কোনও হুঁশিয়ারির কাছে মাথা নত করবেন না তাঁরা।”
৯ তারিখের ধর্মঘটের বিরোধিতা করেছে তৃণমূলের সরকারি কর্মচারী ফেডারেশন। তাদের তরফে নেতা মনোজ চক্রবর্তী বলেন, “নীতিগত ভাবে আমরা বন্ধ ধর্মঘট, লকআউট, কর্মবিরতির বিপক্ষে। সরকারি কর্মচারীদের যদি কোনও দাবি আদায়ের বিষয় থাকে সে ক্ষেত্রে আলাপ-আলোচনাই একমাত্র পথ। আমি আন্দোলনের পর আন্দোলন করে গেলাম, অথচ কোনও ফল হল না, এতে সরকারি কর্মচারীদের মনে হতাশা আসবে। যে বা যারা ধর্মঘট ডেকেছেন, তাদের উচিত নিজেদের অনড় মনোভাব ছেড়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে নিজেদের দাবি আদায়ের বিষয়ে আলোচনায় বসা।”