পুরভোটে কি ব্যালট, আর্জি চায় কমিশন

এই পরিস্থিতিতে কোন জেলায় কত ইভিএম কী অবস্থায় আছে, বিভিন্ন জেলা থেকে তার তথ্য চেয়েছে কমিশন।

Advertisement

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৯ ০৩:২১
Share:

রাজ্য নির্বাচন কমিশন।—ফাইল চিত্র।

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) বা বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্রের বদলে ব্যালট পেপারে ফেরার ডাক দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের পুরসভাগুলির নির্বাচন ভোটযন্ত্রে হবে, নাকি ব্যালটে, তা নিয়ে প্রশ্ন ও জল্পনা জোরদার হয়েছে। এই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি রাজ্য নির্বাচন কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলির আবেদনের দিকেই চোখ রেখে বসে আছে তারা।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে কোন জেলায় কত ইভিএম কী অবস্থায় আছে, বিভিন্ন জেলা থেকে তার তথ্য চেয়েছে কমিশন। তিন-চারটি বাদে সব জেলাই ইভিএমের সবিস্তার তথ্য কমিশনে পাঠিয়েছে বলে প্রশাসনিক মহলের খবর। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাচ্ছে, কমিশনের অধীনে প্রায় ১২ হাজার ইভিএম রয়েছে। তার মধ্যে ৩০-৩৫ শতাংশ ইভিএম সক্রিয় আছে। ফলে কমিশনকে নতুন করে ইভিএম কিনতে হবে। লোকসভা নির্বাচনে ইভিএমের সঙ্গে ভিভিপ্যাট ব্যবহৃত হয়েছিল। কিন্তু রাজ্য কমিশনের কাছে থাকা ইভিএমে ভিভিপ্যাট ব্যবহার করা যাবে কি না, সেই বিষয়ে এখনই মন্তব্য করতে রাজি নন কমিশনের কর্তারা। তবে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে ইভিএম কিনতে পারবে না রাজ্য কমিশন। সরাসরি ইলেকট্রনিক্স কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেড (ইসিআইএল) থেকে তা কিনতে হবে। অন্য দিকে, গত বছর পঞ্চায়েত ভোট হওয়ায় যথেষ্ট ব্যালট বাক্স রয়েছে কমিশনের কাছে।

ইতিমধ্যে রাজ্যের ১৭টি পুরসভায় নির্বাচিত বোর্ডের মেয়াদ ফুরিয়েছে। সেখানে দায়িত্বে আছেন প্রশাসকেরা। তার মধ্যে হাওড়া বাদে সব পুরসভায় ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাস এবং ওয়ার্ড সংরক্ষণের কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু হাওড়ায় ওয়ার্ড নম্বর বিন্যাসের কাজ এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। নির্ধারিত সময়ে হলে আগামী বছর কলকাতা-সহ ৯১টি পুরসভায় ভোট হওয়ার কথা। সেখানে ব্যালট পেপার ব্যবহার হবে বলে একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে ঘোষণা করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা।

Advertisement

তবে পুরভোটে ব্যালট ব্যবহার নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও রাজনৈতিক দলেরই আবেদন জমা পড়েনি রাজ্য নির্বাচন কমিশনে। কমিশন সূত্রের বক্তব্য, ভোট কবে হবে, সেই বিষয়ে সরকারের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও কথাবার্তা হয়নি। ফলে সেই ভোটে ব্যালট, নাকি ইভিএম ব্যবহার করা হবে— তা স্থির করার সময় হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলির তরফে আবেদন আসার পরেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন।

তৃণমূল সরাসরি ব্যালটের কথা বললেও তা নিয়ে মাথাব্যথা নেই বিজেপির। ওই দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘ইভিএমে লোকসভা নির্বাচন হয়েছিল। তাতে তৃণমূল মুখ থুবড়ে পড়েছে। আবার ব্যালটে বার অ্যাসোসিয়েশনের ভোট হয়েছিল। সেখানেও আমরা জিতেছি। ফলে যাতেই ভোট হোক, তৃণমূল হারবে।’’ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান জানান, ইভিএম না ব্যালটে ভোট, সেটার থেকে জরুরি কমিশনের নিরপেক্ষতা বজায় রাখা। মানুষ গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারছে কি না, সেটাই বড় বিষয়। তাঁর সুরেই সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মানুষ যাতে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, সেটাই বড় কথা। ইভিএম বা ব্যালটটা বিষয় নয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement