WB panchayat Election 2023

মনোনয়ন জমা দেওয়ার কেন্দ্রের ১ কিমির মধ্যে জারি থাকবে ১৪৪ ধারা, কড়া নির্দেশ কমিশনের

অতীতে নানা বিষয়ে জাতীয় স্তরের একাধিক কমিশনের সঙ্গে রাজ্য এবং রাজ্যের কমিশনগুলির বিরোধ প্রকাশ্যে এসেছে। কিন্তু এ বার কমিশনের পদক্ষেপ নিয়ে রবিবার রাত পর্যন্ত নবান্নের প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২৩ ১০:১৭
Share:

নোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কেন্দ্রে জারি ১৪৪ ধারা। — ফাইল চিত্র।

পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্বের প্রথম দু’দিনে অশান্তির সাক্ষী থেকেছে রাজ্য। এ বার অন্তত বাকি দিনগুলি শান্তিপূর্ণ রাখতে ১৪৪ ধারা প্রয়োগ করল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। রবিবার কমিশনের তরফে সব জেলার ডিএম, এসপিদের নির্দেশ পাঠানো হয়েছে যে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কেন্দ্রের ১ কিলোমিটার ব্যাসার্ধে ১৪৪ ধারা জারি করতে হবে। নিষিদ্ধ করতে হবে জমায়েত। বেলা ১১টা থেকে ৩টে পর্যন্ত এই বিধি কার্যকর হবে। মনোনয়ন দিতে যাওয়ার সময়ে প্রার্থীর সঙ্গে এক জন সহযোগীকে ভিতরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। এ দিনের নির্দেশকে তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা। তাঁদের মতে, পঞ্চায়েত ভোটের আইনশৃঙ্খলা এবং নিরাপত্তা নিয়ে মামলা হয়েছে। আজ, কলকাতা হাই কোর্টে তার শুনানি। তার আগে এই পদক্ষেপ কমিশনের মুখরক্ষার প্রচেষ্টা কি না, সেই প্রশ্ন উঠছে। আজ, হাই কোর্টে ভোটের ডিউটির জন্য নিরাপত্তার আর্জি জানাবে রাজ্য সরকারি কর্মীদের সংগ্রামী যৌথ মঞ্চও। অনেকে অবশ্য প্রশ্ন করছেন, মনোনয়ন কেন্দ্রের বাইরে না হয় চার ঘণ্টার জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হল। কিন্তু এলাকায়-এলাকায় যে অশান্তি হচ্ছে তা আটকানোর দায় কার?

Advertisement

এরই মধ্যে নতুন পদক্ষেপ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। তারা জানিয়েছে, গত কয়েক দিনে পশ্চিমবঙ্গে যে অশান্তি হয়েছে সে ব্যাপারে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে কমিশনের ডিজি (তদন্ত)-কে বিশেষ পর্যবেক্ষক হিসেবে পশ্চিমবঙ্গে পাঠাচ্ছে তারা। রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে আলোচনা করে স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করবে কমিশন। গত কয়েক দিনে পঞ্চায়েত ভোটের হিংসা সংক্রান্ত যে খবর সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে তার ভিত্তিতেই এই পদক্ষেপ বলে কমিশন জানিয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটের হিংসা নিয়ে এমনিতেই রাজ্যকে বিরোধী শিবির এবং সরকারি কর্মীদের একাংশ কাঠগড়ায় তুলেছেন। এই পরিস্থিতিতে

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পদক্ষেপও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। অতীতে নানা বিষয়ে জাতীয় স্তরের একাধিক কমিশনের সঙ্গে রাজ্য এবং রাজ্যের কমিশনগুলির বিরোধ প্রকাশ্যে এসেছে। কিন্তু এ বার কমিশনের পদক্ষেপ নিয়ে রাত পর্যন্ত নবান্নের প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

Advertisement

পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা কবে হবে তা নিয়ে নানা জল্পনা ছিল। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব রাজীব সিন্হা রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের পদে বসার এক দিনের মধ্যেই নির্বাচন ঘোষণা করে পরের দিন থেকেই মনোনয়ন পর্ব শুরুর নির্দেশ দেন। মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়ও তুলনায় কম দেওয়া হয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণেও সেই সময় কমের বিষয়টি উঠে এসেছে। কমিশনের মনোনয়ন পর্বের সময়সীমা বাড়ানো উচিত বলেও মনে করেছেন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবগণনম।

আবার মনোনয়ন পর্বের গোড়া থেকেই গোলমাল শুরু হয়েছে। খড়গ্রামে খুন হয়েছেন এক কংগ্রেস কর্মী। শাসক দলের দিকেই আঙুল উঠেছে। ডোমকলে অস্ত্র-সহ শাসক দলের এক নেতা ধরা পড়েছেন। উত্তর থেকে দক্ষিণ, রাজ্যের প্রায় সব প্রান্তেই ভোট নিয়ে অশান্তি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসন এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়েও। আদৌ তারা বিরোধীদের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা করতে সচেষ্ট কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে।

এই পরিস্থিতিতে রাজ্য পুলিশের নিরাপত্তায় ভোটের ডিউটিতে যেতে আপত্তি রয়েছে সরকারি কর্মীদের বড় একটি অংশের। এ নিয়েই কোর্টে মামলা করবে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। তাদের আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত জানিয়েছেন, গত দু’টি নির্বাচনে রাজ্য পুলিশের নিরাপত্তায় থেকেও কর্মীরা আক্রমণের শিকার হয়েছেন। তাই সরকারি কর্মীদের ভোটের ডিউটিতে পাঠানো হলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা দেওয়া হোক, এই আর্জি জানানো হবে। সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত ভোটে প্রায় ৪৫০ কোটি টাকা খরচ হবে বলে ধরেছে রাজ্য সরকার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement