ফাইল চিত্র।
তৃণমূলের নতুন সাংগঠনিক কাঠামোর মতোই কি প্রার্থী তালিকাতেও নতুনদের প্রাধন্য থাকবে? দলের অন্দরে এই চর্চা এখন জোরদার। আর তাতেই সামনে আসছে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের ভূমিকার কথা। কারণ সূত্রের খবর, সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় অধিকাংশ কেন্দ্রেই পিকে’র সংস্থা ‘বিকল্প’ বা নতুন মুখের প্রস্তাব রাখছে। দলের অনেকের মতে যা বর্তমান বিধায়কদের বাদ রেখে একটি ‘সমান্তরাল’ তালিকা।
প্রার্থী বাছাইয়ের এই পদ্ধতি নিয়ে আলোচনাকে আমল দিতে চাননি তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলে মনোনয়নের ক্ষেত্রে প্রথম ও শেষ কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য কেউ নয়। তা নিয়ে বিধায়ক বা অন্য কারও উতলা হওয়ার কিছু নেই।’’
দলের কাছে প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া যে এ বার বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, তৃণমূল নেত্রী মমতা আগেই সে কথা স্পষ্ট করেছেন। সেই লক্ষ্যে লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে বিধায়কদের কাজের পর্যালোচনাও হচ্ছে নিবিড় ভাবে। তাতেও অবশ্য পিকে’র ভূমিকা রয়েছে যথেষ্ট। তবে দলের শীর্ষনেতৃত্ব সেই পর্যবেক্ষণগুলি নিজেদের মতো করে যাচাই করছেন। এক শীর্ষনেতার দাবি, ‘‘পিকে’র সংস্থা কোনও প্রস্তাব বা সুপারিশ করলেই যে তা অক্ষরে অক্ষরে মানতে হবে তেমন নয়। বরং বহু ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার দিকটি দলনেত্রী নিজের মতো করে বুঝে নিতে চান।’’
আরও পড়ুন: দীপাবলিতে বাজি বন্ধে রাজ্যের ভরসা ‘মানবিক’ জনতাই
আরও পড়ুন: প্রেমিক মনে বসন্ত ডিসেম্বরেই
প্রার্থী তালিকায় সম্ভাব্য রদবদলের মডেল হিসেবে ২০০১ সালের সিপিএমের প্রার্থী তালিকাকে আলোচনায় আনছেন তৃণমূলের অনেক শীর্ষনেতা। একজনের মন্তব্য, ‘‘২০০১ সালের নির্বাচনে সিপিএমের তৎকালীন রাজ্য সম্পাদক অনিল বিশ্বাস প্রার্থী তালিকায় ব্যাপক রদবদল ঘটিয়ে সুফল পেয়েছিলেন। তাই প্রার্থী বদল হলে জয়ের সম্ভাবনা কমে যায়, এটা কোনও স্বীকৃত সত্য নয়। বদলের দরকার হয় বাস্তব প্রয়োজনের ভিত্তিতে।’’
এ বারের ভোটে ২৯৪টি কেন্দ্রই তৃণমূলের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। তাই ‘বিকল্প’ সন্ধানের ব্যাখ্যাও রয়েছে দলে। বিধায়কদের রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক কাজে সক্রিয়তা, শারীরিক সক্ষমতা ও তাঁদের ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি— দলের প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়ায় এ সবের মূল্যায়ন হবে। পাশাপাশি নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে দেওয়ার দলীয় অবস্থান থেকে ‘বিকল্পে’র সন্ধান করা হতে পারে বলেও মনে করছেন দলের একাংশ। প্রার্থী নিয়ে আইপ্যাকের সমীক্ষায়ও এই মূল্যায়নের প্রতিফলন হতে পারে।
এই প্রক্রিয়ায় অবশ্য বহু কেন্দ্রে নতুন ‘প্রত্যাশীদের’ সক্রিয়তা বেড়েছে। যা গুঞ্জন বাড়িয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। এ বারেও টিকিট প্রত্যাশী বিধায়কদের একাংশ মনে করছেন, রাজনীতিতে এই কৌশল সব সময় ফলপ্রসূ হয় না।