খাদ্য নিয়ে গরমিল হলে তদন্তকারীরা খুঁজে বের করুন, বললেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। নিজস্ব চিত্র।
স্কুল পড়ুয়াদের খাবারের টাকা অন্যত্র খরচ হচ্ছে কি না দেখতে ক্যাগ (কমপট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অব ইন্ডিয়া) আসছে রাজ্যে। এ নিয়ে বাংলায় বিজেপি শিবিরের ‘উৎসাহ’-এর জবাব দিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। শুক্রবার তিনি জানিয়েছেন, শুধু ক্যাগ কেন— যে কোনও তদন্তকারী সংস্থাই মিড ডে মিলের তহবিলের তদন্ত করতে আসতে পারে। তিনি তাদের স্বাগতই জানাবেন। এমনকি, এ ব্যাপারে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যকেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তিনি।
রাজ্যের মিড ডে মিলের জন্য বরাদ্দ অর্থ সরকার অন্য খাতে খরচ করছে বলে অভিযোগ করেছিলেন শুভেন্দু। বেশ কয়েকটি টুইটে ওই অর্থ কোথায় কোথায় খরচ করা হয়েছে, তার সবিস্তার ব্যাখ্যাও দেন বিরোধী দলনেতা। সে প্রসঙ্গেই ব্রাত্য বলেছেন, ‘‘এমন একটা ভাব করা হচ্ছে, যেন একটা সংস্থা আমাদের ধরতে আসছে। আমাদের যেন ক্যাঁক করে ধরবে। কিন্তু ক্যাঁক বা ক্যাগ যে কোনও জায়গা থেকে তারা আসতে পারে। আমি তাদের স্বাগত জানাবে। তারা দেখুক। খুঁজে বার করুক। এ নিয়ে আমাদের কোনও বক্তব্য নেই।’’
গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই মিড ডে মিল নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। বেশ কয়েকটি জেলায় মিড ডে মিলের খাবারে অবাঞ্ছিত জিনিস পাওয়া গিয়েছে। এর মধ্যে খিচুড়িতে আরশোলা, এমনকি, সাপেরও দেখা মিলেছে কোথাও কোথাও। তা নিয়েই সরব হয়েছিলেন বিরোধীরা। পরে কেন্দ্র থেকে মিড ডে মিলের গুণাগুণ পরীক্ষা করতে একটি দলও আসে রাজ্যে। সম্প্রতিই তারা রিপোর্ট দিয়েছে কেন্দ্রকে। ব্রাত্য এ প্রসঙ্গেও শুভেন্দুর নাম না করে কটাক্ষ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের বিরোধী দলনেতা যে সবাইকে বলছিলেন, ওঁদের অনুরোধে এসেছে। আসলে তা নয়। দেখা যাচ্ছে সমস্ত রাজ্যেই যাচ্ছে। সমস্ত রাজ্যেই ইনস্পেকশন হচ্ছে। খাদ্যের গুণাগুণ বিচার করা সমস্ত বাচ্চারা পুষ্টি পাচ্ছে কি না... ইত্যাদি খতিয়ে দেখছে। আর দেখা যাচ্ছে তারা আমাদের ভূয়সী প্রশংসা করছে। দেশের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় আমাদের রাজ্যের নাম বেশ উঁচুর দিকেই রয়েছে।’’
মিড ডে মিলের অর্থ মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরে, এমনকি, বগটুই কাণ্ডের ক্ষতিপূরণ দিতেও ব্যবহার করা হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন শুভেন্দু। যার জবাবে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, ‘‘কোন খাতে কত খরচ হয়, সেটা প্রশাসনিক বিষয়। কিছু নীতিগত বিষয় থাকে। সেটাকেই কুৎসার আকারে পরিবেশন করা হচ্ছে। মোদী-শাহরা যখন এ রাজ্যে সফরে আসেন, তখন সেই সফরের টাকা কোথা থেকে আসে? কোনও না কোনও সরকারি খাত থেকেই তা মেটানো হয়।’’ শুক্রবার ব্রাত্যও মিড ডে মিলের বরাদ্দ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘যদি কোথাও খাদ্য নিয়ে গরমিল থাকে, আর কেন্দ্রীয় কোনও সংস্থা যদি তদন্ত করতে আসতে চায়, তবে তা খুঁজে বের করুক। মুখ্যমন্ত্রী বাচ্চাদের যে খাবার দেন, সেটা বহু রাজ্যই দিতে পারে না। কেন্দ্রীয় দল এই বিষয়টিতে কার্যত সিলমোহর দিয়েছে। তাই যে কোনও ইনস্পেকশন হতে পারে। তা নিয়ে আমাদের কোনও আপত্তি নেই।’’