প্রতীকী ছবি।
দ্বাদশ স্থান থেকে একেবারে সপ্তদশ! এক বছরে পাঁচ ধাপ পতন।
পশ্চিমবঙ্গে গত এক বছরে নাগরিকদের বিচার দেওয়ার ক্ষেত্রে সামগ্রিক পরিস্থিতির এতটাই অবনতি হয়েছে বলে ইঙ্গিত দিচ্ছে টাটা ট্রাস্টের ‘ইন্ডিয়া জাস্টিস রিপোর্ট ২০২০’। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ২০১৯ সালের ওই রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, বিচার পরিষেবায় সামগ্রিক ভাবে ১৮টি বড় ও মাঝারি রাজ্যের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের স্থান ছিল ১২ নম্বরে। ২০২০ সালের রিপোর্টে ১৭তম স্থানে নেমে এসেছে বাংলা। তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছে মহারাষ্ট্র। পশ্চিমবঙ্গের নীচে এবং তালিকায় নিম্নতম স্থানে উত্তরপ্রদেশ। প্রতিবেশী বিহার বা ঝাড়খণ্ডের অবস্থাও গত এক বছরে উন্নত হয়েছে।
ওই রিপোর্ট প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি মদন বি লোকুর অবশ্য মনে করেন, সামগ্রিক ভাবে তালিকায় অবস্থান দেখে কোনও নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছনো যায় না। কারণ, পুলিশ, সংশোধনাগার, বিচার ব্যবস্থা এবং আইনি পরিষেবা— এই চারটি বিষয়ের নিরিখে তালিকায় স্থান নির্ধারিত করা হলেও অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, অনেক রাজ্যই একটি বিষয়ে দারুণ উন্নতি করলেও অন্য বিষয়ে হয়তো সমান তালে এগোতে পারেনি। নাগরিকদের যথাযোগ্য বিচার দিতে গেলে ঠিক কী কী পরিকাঠামোগত উন্নতি প্রয়োজন, তা বিশদ ভাবে ব্যাখ্যা করেন লোকুর।
রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, পুলিশ, আদালত, জেলে কর্মী-সংখ্যার বিচারে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। তবে তুলনায় জেলের অফিসার এবং নিম্ন আদালতে বিচারকের শূন্য পদ এই রাজ্যে অনেক কম। গত বছরের তুলনায় বকেয়া মামলার সংখ্যাও বেড়েছে। তবে অনেকেই মনে করেন, এই বকেয়া মামলার সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য কোভিড অতিমারি পরিস্থিতি এবং লকডাউন অনেকটাই দায়ী।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই রিপোর্টের মুখ্য সম্পাদক মায়া দারুওয়ালা জানান, বিচার দেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশ, জেল, বিচার ব্যবস্থা এবং আইনি সহায়তা— এই চারটি স্তম্ভ সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রেক্ষিতে রিপোর্টে ধরা পড়া দেশের ছবিও তুলে ধরেন তিনি। তাতে দেখা গিয়েছে, জেলে বন্দির সংখ্যা সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতার তুলনায় অনেক বেশি। অর্থাৎ এখনও স্থানাভাব ব্যাপক। ৭০ শতাংশ বন্দিই বিচারাধীন। তাঁরা হয় তদন্ত শেষ হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন বা বিচারের প্রতীক্ষায়। গত দু’বছরে হাইকোর্টে ১০ শতাংশ এবং নিম্ন আদালতে পাঁচ শতাংশ মামলা বেড়েছে। গ্রামীণ নাগরিকদের কাছে বিচার ব্যবস্থা এখনও অনেকটাই ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে।