ছবি সংগৃহীত।
কেন্দ্রের উদ্যোগে মোটর ভেহিক্ল বা মোটরযান আইন সংশোধন করা হয়েছে। দেশের অন্য সব রাজ্যে ১ সেপ্টেম্বর থেকে তা বলবৎ হতে চলেছে। কিন্তু সংশোধিত সেই আইন এখনই পশ্চিমবঙ্গে চালু করতে চায় না তৃণমূল সরকার। রাজ্য তড়িঘড়ি ওই আইন চালু করার পক্ষপাতী নয় বলে পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর।
অন্যান্য রাজ্য সংশোধিত আইন চালু করতে পারলে পশ্চিমবঙ্গ পারবে না কেন? রাজ্য প্রশাসনের অভিযোগ, নতুন আইনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ট্র্যাফিক বিধি ভাঙার ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত জরিমানার সুপারিশ করা হয়েছে। তা ছাড়া লাইসেন্স প্রদান এবং গাড়ির স্বাস্থ্যপরীক্ষার ভার বেসরকারি সংস্থার হাতে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি নিয়েও আপত্তি আছে রাজ্য সরকারের।
সংশোধিত আইনে গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ও লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে আধার কার্ড বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আইনে বলা হয়েছে, অল্পবয়সিরা দুর্ঘটনা ঘটালে দায় চাপবে তাদের অভিভাবকদের ঘাড়েও। অভিভাবককেই প্রমাণ করতে হবে যে, তিনি অল্পবয়সি ছেলেমেয়েকে গাড়ি চালাতে কোনও রকম উৎসাহ দেননি, বরং নিষেধ করেছিলেন। নতুন আইনে মদ্যপান করে গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে জরিমানা দু’হাজার থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা করা হয়েছে। লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে ৫০০ টাকার বদলে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। জোরে গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে জরিমানা ৪০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে দু’হাজার টাকা পর্যন্ত করা হয়েছে। ‘ওভারলোডিং’ বা নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে বেশি পণ্য বহনের ক্ষেত্রে জরিমানা বাড়ানো হয়েছে বিপুল মাত্রায়। ওভারলোডিংয়ে অভিযুক্ত হলে সংশ্লিষ্ট যান-মালিকের ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। টন-প্রতি দু’হাজার টাকা জরিমানার কথাও আছে। এই সব নয়া বিধান নিয়েই আপত্তি। পরিবহণ আইনের বিভিন্ন ধারা নিয়ে ইতিমধ্যে আপত্তি তুলেছে পরিবহণ ব্যবসায়ী এবং শ্রমিকদের সংগঠনও।
পরিবহণ ব্যবসায়ী ও কর্মীদের স্বার্থে জরিমানা কমানোর পাশাপাশি রাজ্য গাড়ির স্বাস্থ্যপরীক্ষা এবং লাইসেন্স প্রদান নিয়ে বাস্তব সমস্যার কথা জানাতে চায় কেন্দ্রকে। তবে রাজ্যসভায় পাশ হয়ে যাওয়ার পরে ফের ওই আইন সংশোধনের সুযোগ কতটা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।