গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
ধীরে ধীরে কি করোনামুক্তির পথে এগোচ্ছে রাজ্য? ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্তের প্রবণতায় ইঙ্গিত তেমনটাই। প্রতিদিন নতুন আক্রান্তের সংখ্যা নেমে গেল আড়াইশোর কাছাকাছি। সংক্রমণের হারও কমেছে অনেকটাই। সুস্থতার হার বহু দিন ধরেই নিম্নমুখী। মৃতের সংখ্যাও কমে এক অঙ্কে এসে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ সব মাপকাঠিতেই করোনা যুদ্ধে জয়ের ইঙ্গিত। শুরু হয়ে গিয়েছে টিকাদানও। ফলে নতুন করে ব্যাপক হারে বাড়তে পারে, এমন সম্ভাবনাও কম। তবু মাস্ক পরা, হাত ধোয়া, স্যানিটাইজার ব্যবহারের মতো সাবধানতার রাশ আলগা করতে নারাজ রাজ্য প্রশাসন।
রবিবার ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল চারশোর কাছাকাছি (৩৮৯)। সোমবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী সেই সংখ্যা নেমে এসেছে ২৫২-তে। অর্থাৎ ১৩৭ জন কম আক্রান্ত হয়েছেন সোমবার। এই নিয়ে রাজ্যে মোট কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫ লক্ষ ৬৮ হাজার ৩৫৫।
তবে সোমবারের বুলেটিন অনুযায়ী টেস্টের সংখ্যাও ব্যাপক হারে কমেছে। রবিবার পরীক্ষা করা হয়েছিল ২৫ হাহজার ২০৭টি। সোমবার সেই সংখ্যা কমে হয়েছে ১৮ হাজার ২৪৩। অর্থাৎ প্রায় ৭ হাজার কম। সেই কারণে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা সোমবার কমলেও সংক্রমণের হারও কমেছে। ২৪ ঘণ্টায় যত সংখ্যক মানুষের নমুনা পরীক্ষা হয় এবং তার মধ্যে যত জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তার শতকরা হারকেই বলা হয় ‘পজিটিভিটি রেট’ বা ‘সংক্রমণের হার’। রবিবার এই হার ছিল ১.৫৪ শতাংশ। সোমবার কমে হয়েছে ১.৩৮ শতাংশ।
সুস্থতার হার বহু দিন ধরেই নিম্নমুখী। সোমবার তাতে আরও উন্নতি হয়েছে। বুলেটিন অনুযায়ী সোমবার করোনা মুক্ত হয়েছেন ৪১৭ জন। এই নিয়ে রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্ত হয়েও সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫ লক্ষ ৫২ হাজার ৮২। সুস্থতার হার ৯৭.১৪ শতাংশ। রবিবার এই হার ছিল ৯৭.১১ শতাংশ। রাজ্যে এই মুহূর্তে সক্রিয় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সংখ্যা ৬ হাজার ১৫১।
গত ২০ জানুয়ারি মৃত্যুর সংখ্যা ১০ এর নীচে নেমেছিল (৬)। মাঝে ২৩ জানুয়ারি ১০ জনের মৃত্যু বাদ দিলে সেই প্রবণতা এখনও রয়েছে। সোমবার মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। রবিবার মারা গিয়েছিলেন ৮ জন। এ পর্যন্ত রাজ্যে মোট কোভিডের বলি হয়েছেন ১০ হাজার ১২২ জন।
জেলা ভিত্তিক হিসাবে সব জেলাতেই আক্রান্তের সংখ্যা নেমে গিয়েছিল ১০০-র নীচে। তবে রবিবার উত্তর ২৪ পরগনায় ফের নতুন আক্রান্তের সংখ্যা শতক পার করেছিল (১৩০)। সোমবার ফের কোনও জেলাতেই নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ১০০-র বেশি হয়নি। সবেচেয়ে বেশি আক্রান্ত উত্তর ২৪ পরগনায় (৭৪)। কলকাতায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে ৫৭ জনের শরীরে।