Suvendu Adhikari

মামলা থেকে বাঁচতে ডিএ ঘোষণা: শুভেন্দু

তিন শতাংশ মহার্ঘ ভাতার পাশাপাশি রাস্তা তৈরি ও সংস্কার, বেকারদের ঋণের সুযোগের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে এ দিন নতুন বরাদ্দের ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৬:৫৩
Share:

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।

রাজ্য সরকারের বাজেট বরাদ্দের প্রস্তাবকে পঞ্চায়েত ভোট জেতার কৌশল বলেই মনে করছে বিরোধীরা। সেই সঙ্গে উন্নয়নের বাস্তবোচিত দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা না-থাকার অভিযোগে একযোগে সরব হয়েছে বিজেপি ও বামেরা।

Advertisement

তিন শতাংশ মহার্ঘ ভাতার পাশাপাশি রাস্তা তৈরি ও সংস্কার, বেকারদের ঋণের সুযোগের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে এ দিন নতুন বরাদ্দের ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। এই সব ঘোষণার বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেই এ দিন রাজ্য সরকারকে বিঁধেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, ‘‘১৫ মার্চ সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলা উঠবে। সেই মামলা থেকে বাঁচতে তিন শতাংশ ডিএ ঘোষণা করা হয়েছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এই বাজেটে পশ্চিমবঙ্গের জ্বলন্ত সমস্যগুলি সমাধানের কোনও চেষ্টা নেই। মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন নেই।’’ তাঁর দাবি, পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোট- বৈতরণী পেরোনোর কথা মাথায় রেখেই এই বাজেট করা হয়েছে। সরকারি প্রস্তাবে তাদের দেউলিয়া অবস্থা স্পষ্ট। এই বাজেটকে ভোটমুখী বলেছে সিপিএমও।

বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের মন্তব্য, ‘‘মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতাই এই বাজেটে প্রতিফলিত। বিরোধীরা দেখবেন, সরকারের এই সিদ্ধান্তগুলিই বছর শেষে কেন্দ্রীয় পুরস্কার ও স্বীকৃতি পাবে।’’

Advertisement

এ দিনের বাজেটে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য তিন শতাংশ মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করেছেন অর্থ দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। ইতিমধ্যেই বকেয়া মহার্ঘ ভাতার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে কর্মচারী সংগঠন। সরকারি প্রস্তাবের বিরোধিতা করে, কর্মচারীদের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে বিরোধী দলনেতা এ দিন বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় হারেই রাজ্যে কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা দিতে হবে।’’ বেকারত্ব নিয়ে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করে তাঁর মন্তব্য, ‘‘মদ আর লটারি ছাড়া রাজ্যে আর কিছু নেই।’’

বাজেট নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে একই বন্ধনীতে রেখেছে সিপিএম। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার যে কায়দায় বাজেট করেছে সেই জুতোয় পা গলিয়েছে রাজ্য সরকার। এই বাজেট শেষে আমাদের ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে ৬ লক্ষ ৪৭ হাজার কোটি টাকা।’’ তাঁর মতে, ‘‘হাস্যকর ভোটমুখী বাজেট। বাস্তবের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। তথ্য ঠিক নেই।’’

পরিকাঠামো উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের ‘জ্বলন্ত সমস্যা’ সম্পর্কে সরকারের উদাসীনতার অভিযোগ করেছেন শুভেন্দু। সেই সূত্রেই বিধায়কদের এলাকা উন্নয়ন তহবিলে বরাদ্দ বৃদ্ধি নিয়ে কটাক্ষ করে বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘আসলে বিধায়কদের উপরে মানুষের চাপ তৈরি করতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। গত দু’টি অর্থবর্ষে বিধায়কদের পাওয়ার কথা ছিল ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা। কিন্তু কাজ হয়েছে মাত্র ৩০ লক্ষের।’’

এ বারের বাজেট প্রস্তাবের সমালোচনা করে বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ী বলেন, ‘‘এটা শাসক দলের একটা নির্বাচনী ইস্তাহার হয়ে গিয়েছে। এটা ত্রাণের বাজেট পরিত্রাণের বাজেট হয়ে উঠতে পারেনি।

রাজ্য বাজেটের সমালোচনা করে এসইউসি-র রাজ্য সম্পাদক চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বাজেটকে কর্মসংস্থানমুখী বলে দাবি করলেও চাকরি কোথায় হবে তার কোন দিশা নেই। আন্দোলনের চাপে বাজেটে তিন শতাংশ ডিএ ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু সরকারি কর্মীদের বঞ্চনা দূর করার ব্যবস্থা বাজেটে হয়নি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement