West Bengal Board of Secondary Education

রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করেই সিদ্ধান্ত? বিজ্ঞপ্তি জারির পরেও প্রত্যাহারের পথে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ

দেড় মাসে আগে জারি হয়েছিল বিজ্ঞপ্তি। ওই বিজ্ঞপ্তি এ বার প্রত্যাহার করে সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে চলেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সূত্রের খবর, দফতরের সঙ্গে আলোচনা না করেই ওই বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছিল।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:০৩
Share:

গত বছরের ডিসেম্বরে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বিজ্ঞপ্তির অংশ। বিজ্ঞপ্তি থেকে সরকার পোষিত স্কুলের প্রসঙ্গ বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পর্ষদ। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের পর এ বার মধ্যশিক্ষা পর্ষদেও একই ঘটনা। বিজ্ঞপ্তি জারি করার পরেও তা আংশিক প্রত্যাহার করতে হচ্ছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে! এর আগে প্রাথমিক স্তরে সেমেস্টার নিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। তা নিয়ে প্রশাসনিক সভায় প্রকাশ্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারের শীর্ষস্তরের সঙ্গে আলোচনা না করেই কেন ‘নীতিগত সিদ্ধান্ত’ নেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ধমকও খেতে হয়েছিল শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে। তার পরে তড়িঘড়ি বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করে নেয় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। এ বার মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এক বিজ্ঞপ্তি নিয়েও আপত্তি জানিয়েছে রাজ্য। স্কুল শিক্ষা দফতর থেকে বিজ্ঞপ্তিটি প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

বিজ্ঞপ্তিটি গত বছরের ডিসেম্বরের। সেখানে বলা হয়েছিল, ২০২২ সালের আগে যে সব স্কুলে পরিচালন সমিতির মেয়াদ শেষ হয়েছে, তা আর বৃদ্ধি করা যাবে না। সেখানে অবিলম্বে প্রশাসক নিয়োগ করতে হবে। পরবর্তী কালে নতুন পরিচালন সমিতি তৈরি না হওয়া পর্যন্ত ওই প্রশাসকই স্কুল পরিচালনার যাবতীয় কাজ দেখবেন। বিজ্ঞপ্তি জারির দেড় মাস কেটে যাওয়ার পরে তা প্রত্যাহার করে নিতে হচ্ছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে। রাজ্যের তরফে পর্ষদকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সরকার পোষিত স্কুলের পরিচালন সমিতি সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা স্কুল শিক্ষা দফতরের।

রাজ্যের বার্তা পাওয়ার পরেই আগের বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করে সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। পর্ষদের সচিব সুব্রত ঘোষ জানান, সরকারি স্কুল, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল এবং সরকার পোষিত স্কুল— এই তিন ধরনের স্কুলের মধ্যে সরকার পোষিত স্কুলগুলিতে প্রশাসক বসানোর নির্দেশকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে। জেলা স্কুল পরিদর্শকদের এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। কেন এই সংশোধন করা হচ্ছে, সে প্রসঙ্গে সচিব বলেন, “সরকার পোষিত স্কুলের বিষয়ে যদি কোনও নির্দেশ দেওয়ার থাকে, সেটি (স্কুল শিক্ষা) দফতর থেকে দেওয়া হবে।” তবে দফতর থেকে এ বিষয়ে নির্দেশ আসার পরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কি না, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি পর্ষদ সচিব। তাঁর কথায়, “বিষয়টি নজরে আসার পর পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”

Advertisement

সাধারণ স্কুলগুলিতে প্রধানশিক্ষক, কোনও জনপ্রতিনিধি এবং কিছু শিক্ষানুরাগীরা এই পরিচালন সমিতিতে থাকেন। স্কুলের পরিচালন সমিতিগুলির মেয়াদ থাকে তিন বছরের। তবে সূত্রের খবর, অনেক স্কুলেই প্রায় বছর দশেক ধরে পরিচালন সমিতিতে সেই অর্থে বদল হয়নি। পুরনো কমিটিরই মেয়াদ বর্ধিত হয়ে চলতে থাকে। দফতর থেকে ২০২১ সালের ভোটের আগেও পুরনো পরিচালন সমিতির মেয়াদ বর্ধিত করা হয়েছিল। সূত্রের খবর, উচ্চ প্রাথমিকের বহু চাকরিপ্রার্থী সুপারিশপত্র নিয়ে স্কুলে যোগ দিতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। মূলত পরিচালন সমিতির বিরুদ্ধে টালবাহানার অভিযোগ রয়েছে বলে খবর যায় পর্ষদের কাছে। এই অবস্থায় দফতরের সঙ্গে আলোচনা না করেই ডিসেম্বর মাসে পর্ষদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে দেয়। কিন্তু তাতে দফতরের নির্দেশ লঙ্ঘিত হয়েছে। সেই কারণে ওই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের জন্য পর্ষদকে নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা দফতর।

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য এ বিষয়ে জানান, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সঙ্গে কথা হয়েছে দফতরের। তাঁর বক্তব্য, যেখানে পরিচালন সমিতির মেয়াদ বৃদ্ধি করার দরকার, সেখানে করা হবে। পর্ষদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টির সুরাহা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement