মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি। ছবি: সংগৃহীত।
শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশ ও স্বাস্থ্য যাচাইপত্র বাধ্যতামূলক করার নিয়ম ফিরিয়ে আনল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সোমবার পর্ষদের তরফে এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানেই নিয়োগের ক্ষেত্রে এই দুই যাচাইপর্ব ফেরানোর কথা জানানো হয়েছে। ২০১৬ সালে সরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশ ও স্বাস্থ্য যাচাইয়ের নিয়ম শিথিল করা হয়েছিল।
ফলে সেই সময় থেকে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগ হয়েছিল এই দু’টি যাচাইপত্র ছাড়াই। সোমবার প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২০১৮ সালে শিক্ষকদের আদর্শ আচারণবিধি প্রকাশের সময়েই এই নীতি ফিরিয়ে আনার কথা বলা হয়েছিল। আগে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের সুপারিশ মেনে শিক্ষা দফতর শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগ করত। সে ক্ষেত্রে পুলিশ ও স্বাস্থ্য যাচাইপত্র পাওয়ার পরেই তাঁদের নিয়োগপত্র দিত মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। কিন্তু গত কয়েক বছর এই নিয়োগের ক্ষেত্রে শিথিলতা থাকায় যাচাইপত্র ছাড়াই নিয়োগ হয়েছিল।
কিন্তু গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানানো হয়েছিল, খুব তাড়াতাড়িই শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে যাচাইপত্রপর্ব ফিরিয়ে আনা হবে। সেই মতোই সোমবার বিজ্ঞপ্তি জারি করে সেই সিদ্ধান্তের কথা পাকাপাকি ভাবে জানিয়ে দিল পর্ষদ। এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘গত কয়েক বছর ধরে যে সব ভাবী শিক্ষক আন্দোলন করে আসছেন, তাঁদের নিয়োগের ক্ষেত্রে অন্তরায় তৈরি করতেই কি মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এমন সিদ্ধান্ত? এই সিদ্ধান্ত দেখে আমাদের তাই মনে হচ্ছে। গান্ধীমূর্তির পাদদেশে যাঁরা গত কয়েক বছর ধরে নিয়োগের দাবিতে অবস্থান করছেন, তাঁদের অনেকই তো যোগ্য প্রার্থী, আর তাঁদের বিরুদ্ধে তো ইচ্ছাকৃত ভাবে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।’’
বিরোধী শিক্ষক সংগঠনের এমন সমালোচনা মানতে চাননি পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির কার্যকরী সভাপতি বিজন সরকার। তাঁর কথায়, ‘‘মধ্যশিক্ষা পর্ষদ যে নিয়ম ফিরিয়ে এনেছে তা নতুন কোনও বিষয় নয়। আগেও এই নিয়ম ছিল, সেই নিয়মই আবারও ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। এখানে সমালোচনার জায়গা কোথায়? বিরোধী শিক্ষক সংগঠন যদি সমালোচনা করার জন্য সমালোচনা করেন, তাতে শিক্ষা দফতর বা সরকারের কিছুই করার নেই।’’ তাঁর আরও প্রশ্ন, এমন পদ্ধতিতে শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী নিয়োগে স্বচ্ছতা আসবে। বিরোধীরা কি চান না নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আসুক?