ফাল্গুন থাকতে থাকতেই গৃহপ্রবেশ সেরে ফেলতে চান বিজেপি নেতৃত্ব। তাই দ্রুত নতুন দফতরে যাওয়ার পরিকল্পনা সেরে ফেলেছে বিজেপি। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
লগ্ন শুভ। নিশ্চিত প্রমাণ পেতেই বাসাবদলের দিনক্ষণ পাকা করে ফেলেছে রাজ্য বিজেপি। সব ঠিক থাকলে ফাল্গুনের কৃষ্ণা তৃতীয়া অর্থাৎ আগামী ১০ মার্চ মধ্য কলকাতার পুরনো রাজ্য দফতর ছেড়ে সল্টলেকের সেক্টর ফাইভে চলে যাবে বিজেপির সদর দফতর।
চৈত্র এমনিতে শিবের মাস হলেও হিন্দুরা বিশেষ শুভকাজ করেন না এই সময়ে। তাই হাতে সময় কম। ফাল্গুন থাকতে থাকতেই গৃহপ্রবেশ সেরে ফেলতে চান বিজেপি নেতৃত্ব। ১৫ মার্চ চৈত্র মাস শুরু হয়ে যাচ্ছে। তার আগেই দলের বুথ সশক্তিকরণ কর্মসূচি শুরু হয়ে যাবে। তাই দ্রুত নতুন দফতরে যাওয়ার পরিকল্পনা সেরে ফেলেছে বিজেপি।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগেই দক্ষিণ কলকাতার হেস্টিংসে আলাদা দফতর বানিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। এসেছিলেন সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। তবে এ বার এখনও পর্যন্ত বিজেপির যা পরিকল্পনা তাতে রাজ্য নেতারাই শুধু থাকবেন গৃহপ্রবেশে। কেন্দ্রের কেউ আসছেন না। এই ব্যাপারে দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘নতুন দফতর বলা হলেও আসলে তা নয়। মুরলীধর সেন লেনেই রাজ্য দফতর থাকছে। কাজের জায়গা কম বলেই এই বদল। পাকাপাকি ভাবে নতুন দফতর হলে তখন বড় আকারে উন্মোচন হবে।’’ বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, নিউ টাউন এলাকায় জমি কিনে বড় দফতর বানানোর প্রক্রিয়াও ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে।
ছোট্ট দফতর থেকে আর পারা যাচ্ছে না বলে অনেক আগে থেকেই বাসাবদল চেয়ে এসেছে রাজ্য বিজেপি। সেই লক্ষ্যেই হেস্টিংসে নির্বাচনী দফতর খোলা হয়েছিল। এখন সেটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ঠিক হয়েছিল ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই সল্টলেকের দফতর থেকে কাজ শুরু হবে। তবে নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় তা পিছিয়ে যায়। অবশেষে ফাল্গুনের মধ্যেই স্থানান্তর পাকা।
মেট্রোর সেক্টর ফাইভ স্টেশনের কাছেই তৈরি হচ্ছে নতুন দফতর। উইপ্রো মোড়ের কাছে বাড়িটি পাঁচতলা। বেশিটাই নতুন করে বানানো। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই হেস্টিংস থেকে যাবতীয় আসবাব চলে এসেছে সেখানে। কিছু কিছু জিনিস গিয়েছে মুরলীধর থেকেও।
তবে মুরলীধরের দফতরের গুরুত্ব অনেকটাই কমে যাবে। প্রধান নেতাদের বসার জায়গা সবই হবে সেক্টর ফাইভে। তবে পুরনো বাড়ি একেবারে ছেড়ে না দেওয়ার ভাবনা বিজেপির। দলের পুরনো নেতারা বলেন, বিজেপির আদিপুরুষ তথা জনসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ও এক সময় এই দফতরে বসেছেন। ফলে সেটি ছাড়া চলবে না। তাঁদের আরও যুক্তি, ওই ছোট দফতর থেকেই বিজেপি এত বড় হয়েছে। এখন ‘সুখের দিনে’ পুরনোকে ভুললে চলবে কেন!