গঙ্গা পুজো করতে চায় বিজেপি। ছবি: সংগৃহীত।
গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজন সবটাই রাজ্য সরকারের হাতে। কিন্তু মকর সংক্রান্তির আগে সেই ধর্মীয় আবেগের ভাগ নিতে চায় রাজ্য বিজেপি। মঙ্গলবার তাই গঙ্গাকে ঘিরে উৎসবের আয়োজন করছে গেরুয়াশিবির। ওই দিন বাবুঘাটে গঙ্গা পুজো, আরতি ছাড়াও হবে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। গোটা পরিকল্পনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দলের ‘নমামি গঙ্গে’ শাখাকে।
গঙ্গাপারের লোকসভা আসন বারাণসী থেকে সাংসদ হয়ে প্রধানমন্ত্রী হন নরেন্দ্র মোদী। ২০১৪ সালে দায়িত্ব পেয়েই তিনি নমামি গঙ্গে প্রকল্পের সূচনা করেন। প্রাথমিক ভাবে এই প্রকল্পের মেয়াদ স্থির করা হয় ২০২১-এর ৩১ মার্চ। ২০১৪-১৫ থেকে ২০২০-২১ পর্যন্ত সময়ের জন্য বাজেট বরাদ্দ করা হয় ১৩,৬২৪.৮৬ কোটি টাকা। এর পরেও সেই প্রকল্পকে চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। সরকারকে সমর্থন দিতে বিজেপিও রাজ্যে রাজ্যে নমামি গঙ্গে নামে আলাদা শাখা খোলে। বাংলায় সেই শাখা প্রথম বড় মাপের কর্মসূচি নিয়েছে মঙ্গলবার। রাজ্য বিজেপির ওই শাখার আহ্বায়ক গোপাল সরকার জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হবে অনুষ্ঠান। উপস্থিত থাকতে পারেন দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এ ছাড়াও বিভিন্ন মঠ ও মিশনের সাধুসন্তদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
গত ৩০ ডিসেম্বর কলকাতায় হয় জাতীয় গঙ্গা পরিষদের বৈঠক। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ-সহ গঙ্গা প্রবাহমান এমন ৫ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে। সকলে কলকাতায় উপস্থিত থাকলেও মাতৃবিয়োগের জন্য আসতে পারেননি মোদী। তবে ভার্চুয়ালি বৈঠকে যোগ দেন। সেই বৈঠকে ‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্প সফল করার প্রসঙ্গ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গঙ্গার ভাঙন রোধ এবং নদীগর্ভের সংস্কারকে অগ্রাধিকার দিতে হবে বলে কেন্দ্রের কাছে দাবি জানান তিনি। পরে মোদী টুইট করে জানান, গঙ্গা পরিষদের এ দিনের বৈঠক ‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্পকে শক্তিশালী করার সুযোগ তৈরি করেছে। বৈঠকে পরিচ্ছন্নতার উদ্যোগ ও বর্জ্য শোধন ব্যবস্থাকে ছোট শহরগুলিতে ছড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
ওই বৈঠক ছিল সরকারি। এ বার নমামি গঙ্গে প্রকল্পের রাজনৈতিক সুবিধা নিতে গঙ্গা পারে যেতে চায় রাজ্য বিজেপি। সেনা বাহিনীর থেকে ইতিমধ্যেই অনুষ্ঠান করার অনুমতি নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বাজে কদমতলা ঘাটে দলের সাংস্কৃতিক শাখার উদ্যোগে নৃত্যানুষ্ঠানও হবে বলে জানা গিয়েছে। গঙ্গা পুজোর পরে গঙ্গা আরতিরও আয়োজন করার পরিকল্পনা। বারণসীর ঘাটে গঙ্গা আরতি অন্যতম দর্শনীয় পর্যটক ও পুণ্যার্থীদের কাছে। কলকাতাতেও এক দিনের জন্য তেমনই আবহ তৈরি করতে চায় বিজেপি।
তবে মূল লক্ষ্য যে রাজনৈতিক তার ইঙ্গিত আয়োজক গোপাল সরকারের কথায়। তিনি বলেন, ‘‘বাংলায় গঙ্গা-সহ কোনও নদীর সংস্কার ও স্বচ্ছতা নিয়ে কোনও ভাবনাচিন্তা নেই। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ্য কুইন্টাল ময়লা পড়ছে। আদি গঙ্গার অবস্থাও একই। এই সব বিষয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করাই আমাদের লক্ষ্য।’