Bogtui

আবার বগটুই, পঞ্চায়েতের আগে স্মৃতি উস্কে দিতে তৎপর বিজেপি, আসছে বেসরকারি প্রতিনিধি দল

গত বছরের মার্চে গণহত্যার অভিযোগ উঠেছিল বীরভূমের বগটুই গ্রামে। সেই স্মৃতি উস্কে দিতে চায় বিজেপি। তারই লক্ষ্যেই রাজ্যে আসছেন বেসরকারি সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৯:০০
Share:

বীরভূমের বগটুইকাণ্ডের স্মৃতি উস্কে দিতে তৎপর গেরুয়া শিবির। — ফাইল চিত্র।

পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ক্ষণ ঘোষণা না হলেও সব দলই একটু একটু করে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। রাজ্য বিজেপিও গ্রামে যাওয়ার কর্মসূচি নিয়েছে। শুরু হচ্ছে যুব মোর্চার গ্রাম সম্পর্ক অভিযান। তারই মধ্যে বীরভূমের বগটুইকাণ্ডের স্মৃতি উস্কে দিতে তৎপর গেরুয়া শিবির। সব কিছু ঠিক থাকলে, অতীতে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের অভিযোগ নিয়ে রাজ্যে আসা বেসরকারি সংস্থা ‘লইয়ার্স ফর জাস্টিস’-এর প্রতিনিধিরা ফেব্রুয়ারিতেই আবার আসছেন কলকাতায়। এ বার ওই দলের মুখ্য গন্তব্য হবে বগটুই। সামনে ওই সংস্থা থাকলেও আসলে পিছন থেকে বিজেপিই তাদের গোটা সফর পরিচালনা করতে চায়। তার জন্য রাজ্য স্তরের কয়েক জন নেতাকে দায়িত্বও দেওয়া হবে। তবে বিজেপির পক্ষে এখনও পর্যন্ত এ ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি।

Advertisement

গত বছর ২১ মার্চ গণহত্যার অভিযোগ ওঠে বগটুইয়ে। রামপুরহাট-১ ব্লকের বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা তৃণমূল নেতা ভাদু শেখ খুন হওয়ার ‘প্রতিক্রিয়া’য় বগটুইয়ের গ্রামে কয়েকটি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তাতে সব মিলিয়ে মৃত্যু হয় দশ জনের। সেই সময়ে এ নিয়ে উত্তপ্ত হয় রাজ্য রাজনীতি। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যো‌পাধ্যায় বগটুই গিয়ে ক্ষতিপূরণ ও তদন্তের ঘোষণা করেন। যদিও পরে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ সিবিআই তদন্ত শুরু হয়।

পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে গেরুয়া শিবিরের উদ্যোগে আসা ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা আগামী শনি, রবি ও সোমবার বীরভূম জেলায় থাকবে বলে গেরুয়া শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই সময়েই বগটুই যাবেন ওই প্রতিনিধিরা। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দল রাজ্যে আসবে আগামী শুক্রবার। রায়গঞ্জে হামলার অভিযোগ ওঠা একটি মন্দির পরিদর্শন করবেন তাঁরা। সেখানে স্থানীয় বাসিন্দা এবং মন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার পরে তাঁরা ওই দিনই মালদহ হয়ে বোলপুরে আসবেন। পরের দু’দিন বীরভূমে থাকার কথা। সেখানে বগটুইকাণ্ডের তথ্যানুসন্ধার ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা এবং ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নিয়ে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে খোঁজ খবর নেবেন। এর পরে সেখানে ‘শুনানি’ হওয়ার কথা। পরে প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গেও কথা বলার চেষ্টা করবেন ‘লইয়ার্স ফর জাস্টিস’-এর প্রতিনিধিরা।

Advertisement

প্রসঙ্গত, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ওই সংগঠনের প্রতিনিধিরা কলকাতায় এসেছিলেন। সেই দলে ছিলেন প্রাক্তন বিচারপতি এল নরসিংহ রেড্ডি, প্রাক্তন আইপিএস অফিসার রাজপাল সিংহ, মহিলাদের অধিকার সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কাজ করা আইনজীবী চারু ওয়ালি খান্না, সাংবাদিক সঞ্জীব নায়ক এবং দুই আইনজীবী ওমপ্রকাশ ব্যাস এবং রোজি তাবা। ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এমন বিজেপিকর্মীদের সঙ্গেই মূলত কথা বলেন তাঁরা। সেই সঙ্গে প্রাথমিকে নিয়োগের পরীক্ষা (টেট)-য় পাশ করা চাকরিপ্রার্থী থেকে আইনি বাধার মুখে পড়া ব্লগার ও ইউটিউবারদের অভিযোগও শোনেন।

জানুয়ারিতে ওই দলকে সাহায্য করার জন্য রাজ্য বিজেপিও একটি কমিটি তৈরি করে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের তৈরি করা ওই কমিটিতে ছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী, দুই প্রাক্তন আইপিএস অফিসার ভারতী ঘোষ এবং আর কে হান্ডা। ছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবী অপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য সংগঠনের পক্ষে তিন নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়, মধুছন্দা কর এবং শিশির বাজোরিয়া। তবে এ বার কারা দায়িত্বে থাকবেন তা এখনও জানা যায়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement