BJP

হিন্দু মন পেতেই মুসলিম যোগ চাইছে বঙ্গ বিজেপি

কট্টর হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি বাংলায় যে অচল, ধীরে ধীরে অনুভব করছেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা। তাঁদের মতে, বাংলার হিন্দুরা মন্দির করার পক্ষে। কিন্তু মসজিদ ভেঙে মন্দির করার বিপক্ষে।

Advertisement

বিপ্রর্ষি চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২৩ ০৭:২৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের তুলনায় প্রায় তিন গুণ বেশি সংখ্যালঘু প্রার্থী দিল রাজ্য বিজেপি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে যেখানে তারা ২১০ জন মতো সংখ্যালঘু প্রার্থী দিয়েছিল। এ বার সেখানে তিন স্তর মিলিয়ে সংখ্যালঘু প্রার্থীর সংখ্যা ৬৫০। যাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি, অন্তত ১৫০ জন প্রার্থী মুর্শিদাবাদ দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলায় রয়েছে। এ ছাড়া উল্লেখযোগ্য সংখ্যা রয়েছে মথুরাপুর এবং বীরভূম সাংগঠনিক জেলায়। তবে এর কোনও রাজনৈতিক ‘তাৎপর্য’ নেই বলে মনে করছে তৃণমূল এবং সিপিএম। প্রসঙ্গত, সামগ্রিক ভাবে বিজেপি গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের তুলনায় প্রায় ২০% বেশি আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছে।

Advertisement

কট্টর হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি বাংলায় যে অচল, ধীরে ধীরে অনুভব করছেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা। তাঁদের মতে, বাংলার হিন্দুরা মন্দির করার পক্ষে। কিন্তু মসজিদ ভেঙে মন্দির করার বিপক্ষে। তাঁদের মুসলিম-বিদ্বেষ নেই। তাই হিন্দু ভোটারদের মন পেতে দলে আরও বেশি সংখ্যালঘুদের যুক্ত করা প্রয়োজন। দলের সংখ্যালঘু শাখার রাজ্য সভাপতি চার্লস নন্দীর কথায়, “বাংলার ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র রয়েছে। আমাদের হিন্দু ভোট পেতে হলে দলে আরও সংখ্যালঘু প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে হবে। অন্য রাজনৈতিক দলগুলি ছদ্ম ধর্মনিরপেক্ষ। আমরা প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষ। তাই প্রকাশ্যে আমাদের রাজনীতির কথা বলতে পারি। আবার এই সংখ্যক সংখ্যালঘুদের মনোনয়নও দিতে পারি।”

লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে ইতিমধ্যে সংখ্যালঘুদের মধ্যে প্রচার শুরু করেছে বিজেপি। সূত্রের খবর, তারা মনে করছে অঞ্চল ভেদে সংখ্যালঘুদের চরিত্র ও অবস্থান আলাদা। তাই বাংলার জন্য আগেই ‘দ্বিমুখী’ কৌশল নিয়েছিল বিজেপি। গত ১১ বছর শাসক দলের ‘সন্ত্রাসে’ সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘুদের প্রাণহানি হয়েছে বলে প্রচার করছে তারা। কার্যত সেই প্রচারকে সামনে রেখে বগটুইয়ে স্বজনহারাদের দলে শামিল ও প্রার্থী করেছে গেরুয়া শিবির। ভাঙড়ে নিজেদের প্রার্থী না থাকা সত্ত্বেও নওশাদ সিদ্দিকী এবং আইএসএফের উপর আক্রমণ নিয়ে মুখ খুলেছে তারা। রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “আমাদের ডিএনএ এক। নির্দিষ্ট সময় খণ্ডে আমাদের উপাসনা পদ্ধতি পৃথক হতে পারে। কিন্তু আমাদের পূর্বপুরুষ এক। তাই আমরা বারবারই সংখ্যালঘুদের ভারতীয় সভ্যতা, সংস্কৃতির মূল ধারায় যুক্ত হতে অনুরোধ করেছি।”

Advertisement

তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ পাল্টা বলেন, “ওরা হিন্দুরও বন্ধু নয়। মুসলিমেরও বন্ধু নয়। আমরা যাদের বিভিন্ন দলীয় মাপকাঠিতে মেপে টিকিট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ওরা তাদের কিছুর বিনিময়ে টিকিট দিয়েছে। এতে নির্বাচনের ফলাফলের পরিবর্তন হবে না।” সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, “ওদের রাজনীতি মানুষের কাছে ধরা পড়ে গিয়েছে। বাংলার রাজনীতিতে যে এই বিভাজনের কোনও জায়গা নেই, সেটা বুঝে ভেক নিয়েছে। ওরা এখন যা-ই করুক, আসলে ওদের নীতি বিভাজনের নীতি। মানুষ সেটা জানে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement