জল্পনার কেন্দ্রে সায়ন্তন।
বিজেপি-র রাজ্য কমিটি বুধবার বিকেলে ঘোষণা হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে দীর্ঘ দিন রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদে থাকা সায়ন্তন বসু কমিটির কোনও পদেই জায়গা পাননি। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নতুন জল্পনার কেন্দ্রে সায়ন্তন। বুধবার রাতেই বিধাননগরে তাঁর বাড়িতে যান তৃণমূলের কয়েক জন নেতা। সূত্রের খবর, তাঁদের মধ্যে এক জন তৃণমূলের বর্তমান বিধায়ক এবং এক জন প্রাক্তন বিধায়ক ছিলেন। তবে ওই নেতাদের এক জনের দাবি, এই বৈঠক নিছকই সৌজন্যমূলক। পুরনো পরিচিত হিসাবেই তাঁরা সায়ন্তনের বাড়িতে গিয়েছিলেন। চা খেতে খেতে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে সান্তনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। তাঁর মোবাইল ফোন বেজে গিয়েছে। তিনি ধরেননি।
প্রসঙ্গত, গত প্রায় পাঁচ বছর ধরে বিজেপি-র অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ছিলেন সায়ন্তন। বুধবার যে নতুন কমিটি ঘোষিত হয়েছে তাতে আরও দুই সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় সিংহ এবং রথীন্দ্র বসু বাদ পড়েছেন। যদিও সঞ্জয় এবং রথীন্দ্রকে সহ-সভাপতি করা হয়েছে। কিন্তু সায়ন্তনকে কমিটিতেই রাখা হয়নি। বিজেপি সূত্রে খবর, এর পরেই ক্ষুব্ধ সায়ন্তন দলের সব হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন। সেই সঙ্গে ঘনিষ্ঠমহলে নিজের ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন। এর পরেই তাঁর বাড়িতে তৃণমূল নেতাদের বৈঠক ঘিরে তাই গেরুয়া শিবিরেও শুরু হয়েছে আলোচনা।
শুধু সায়ন্তন নয়, বুধবার ঘোষিত কমিটি নিয়ে আরও অনেকের মধ্যেই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। দীর্ঘদিন সহ-সভাপতি থাকা দলের প্রবীণ নেতা প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়, রীতেশ তিওয়ারি, জয়প্রকাশ মজুমদাররাও কোনও পদ পাননি। জয়প্রকাশকে মুখপাত্র করা হলেও বাকি দু’জন কোনও পদেই নেই। বিজেপি-র অন্দরে ফিসফাস, রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের তুলনায় এই কমিটিতে বেশি করে সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীর ঘনিষ্ঠরা জায়গা পেয়েছেন। বিজেপি-র ছাত্র শাখা অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি) থেকে বিজেপি-তে আসেন অমিতাভ। বুধবার ঘোষিত কমিটিতে ছাত্র আন্দোলন থেকে রাজনীতিতে আসা দীপক বর্মণ, জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। আবার যুব শাখার সভাপতি হয়েছেন গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে আগে বিজেপি-তে যোগ দিয়ে কসবা আসনে প্রার্থী হওয়া ইন্দ্রনীল খাঁ। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ইন্দ্রনীলও প্রাক্তন এপিভিপি নেতা।
রাজ্য বিজেপি-র রাজ্য সম্পাদক দীপাঞ্জন গুহ এত দিন একই সঙ্গে কার্যালয় সচিব ছিলেন। এ বার কার্যালয় সচিবের দায়িত্ব দীপাঞ্জনের কাছ থেকে নিয়ে প্রণয় রায়কে দেওয়া হয়েছে। আবার সংবাদমাধ্যম বিষয়ক দফতরের দায়িত্বে থাকা সপ্তর্ষী চৌধুরীকে ওই বিভাগেরই সহকারী করা হয়েছে। তাঁর উপরে এসেছেন আগের কমিটির সম্পাদক তুষারকান্তি ঘোষ। এই দু’জনের পদের ভার কমে যাওয়ায় অসন্তোষ তৈরি হয়েছে বলেও খবর। একই সঙ্গে নতুন রাজ্য কমিটি নিয়ে খুবই ক্ষুব্ধ দলের দীর্ঘ দিনের নেতা রাজকমল পাঠক। গত পুরভোটের সময় থেকেই রাজকমলের সঙ্গে দলের মতবিরোধ সামনে এসেছিল। বুধবার দেখা গেল, তিনি কমিটি থেকেই বাদ গিয়েছেন। তবে আপাতত সব জল্পনা সায়ন্তনকে ঘিরেই।
(এই খবরটি প্রথম প্রকাশের সময়ে সংবাদ মাধ্যম বিষয়ক দফতরের দায়িত্ব পাওয়া তুষারকান্তি ঘোষকে ভুলবশত তুষারকান্ত দাস লেখা হয়েছিল। অনিচ্ছাকৃত এই ত্রুটির জন্য আমরা দুঃখিত।)