বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল ছবি।
লোকসভা নির্বাচন পরিচালনার জন্য চূড়ান্ত কমিটি গড়ে ফেলল রাজ্য বিজেপি। অনেক জল্পনা ছিল বিজেপির নির্বাচন পরিচালন কমিটির মাথায় কে থাকবেন তা নিয়ে। এর আগে ১০১ জনের কমিটিতে ৩৫টি বিভাগ তৈরি করা হয়েছিল। সেই সব কমিটির প্রধানদের নাম ঠিক করলেও চেয়ারম্যান কে হবেন তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি রাজ্য বিজেপি। যা নিয়ে অনেক জল্পনা এবং বিতর্ক তৈরি হয় বিজেপির অন্দরে। অবশেষে সেই কমিটির উপরে আরও একটি কমিটি তৈরি করা হল। যার মাথায় রইলেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। শনিবার দলের সল্টলেকের রাজ্য দফতরে একটি বৈঠক হয়। সেখানে শীর্ষ নেতৃত্ব আলোচনা করে এই কমিটি তৈরি করেছেন। যে কমিটিতে খুব বেশি চমক নেই, বরং সব দিকের ভারসাম্য বজায় রাখা হয়েছে।
ওই কমিটিতে সুকান্তের পরেই নাম রয়েছে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। এর পরে রাজ্য থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়া সুভাষ সরকার, নিশীথ প্রামাণিক, শান্তনু ঠাকুর এবং জন বার্লার নাম রয়েছে। এর পরেই জায়গা পেয়েছেন দিলীপ ঘোষ। এখন রাজ্য বা সর্বভারতীয় কোনও দায়িত্বই নেই মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপের। ইদানীং, তাঁর কাজকর্ম দেখে এটাও মনে হয়েছে যে তিনি নিজের আসন ছাড়া অন্য এলাকা নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামাতে চাইছেন না। তবে রাজ্য বিজেপি যে, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি হিসাবে দিলীপকে লোকসভা নির্বাচনেও গুরুত্ব দিতে চায় সেই বার্তা দিয়ে দিল কমিটিতে জায়গা দিয়ে। দিলীপের পাশাপাশি কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন আর এক প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহও।
২০ জনের এই কমিটিতে রাজ্যের পাঁচ সাধারণ সম্পাদক লকেট চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতো, অগ্নিমিত্রা পাল, দীপক বর্মণ এবং জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় রয়েছেন। এ ছাড়াও রয়েছেন সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সতীশ ধন্দ। সেই হিসাবে রাজ্য বিজেপির এই নির্বাচন পরিচালন কমিটিতে তেমন কোনও চমকই নেই। সাধারণ যে রাজ্য কমিটি তার মধ্যে জায়গা পেয়েছেন শুভেন্দু, দিলীপ এবং রাহুল। বিজেপির অন্য কোনও মোর্চা নেতৃত্ব কমিটিতে না থাকলেও মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী ফাল্গুনি পাত্র পদাধিকার বলে রয়েছেন। তবে এটা কিছু নতুন বিষয় নয়। সব রাজ্যেই বিজেপির সব গুরুত্বপূর্ণ কমিটিতেই মহিলা মোর্চার প্রতিনিধিত্ব থাকে। এটা দলের রীতি।
যদিও বিজেপি সূত্রে যা জানা গিয়েছে, সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে জগন্নাথ মূলত রাজ্য নেতা হিসাবে ভোট পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন। বড় ভূমিকা থাকবে অমিতাভ এবং ধন্দের। বাকিরা প্রচারের দায়িত্ব পেলেও সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত ও কর্মসূচি সামলাবেন এই তিন জনে। এর উপরে থাকবেন বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত চার কেন্দ্রীয় নেতা। পর্যবেক্ষক মঙ্গল পাণ্ডে, দুই সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য এবং আশা লাকড়া বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্য হিসাবে কমিটিতে রয়েছেন। একই ভাবে রয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুনীল বনসল। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা দেশেই যুব মোর্চার কাজ দেখার দায়িত্ব রয়েছে সুনীলের উপরে। এ ছাড়াও তিনটি রাজ্য সামলাচ্ছেন তিনি। বাংলার পাশাপাশি ওড়িশা ও তেলঙ্গানার দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। তিনটি রাজ্যেই লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী মনোনয়ন থেকে অন্য সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দূত হিসাবে বনসলই হবেন রাজ্য বিজেপির নির্বাচনী শক্তিকেন্দ্র।