West Bengal Assembly Election 2021

কংগ্রেসকে নিয়ে ফেব্রুয়ারির শেষ রবিবার বামেদের ব্রিগেড সমাবেশ

জাতীয় রাজনীতিতে ‘সম মনোভাবাপন্ন’ বিজেপি-বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকেও আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে ব্রিগেড সমাবেশে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২১ ১৪:৩৩
Share:

২০১৯ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি শেষবার ব্রিগেড সমাবেশ করেছিল বামেরা। ভাল জমায়েতও হয়েছিল সমাবেশে। । -ফাইল চিত্র।

সবকিছু পরিকল্পনামাফিক চললে ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ রবিবার ব্রিগেড সমাবেশ ডাকছে বামফ্রন্ট। বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যের সর্ব স্তরের কর্মীদের অক্সিজেন দেওয়ার পাশাপাশি শক্তিপ্রদর্শন করতে বড় সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ফ্রন্টের বড় শরিক সিপিএম। সেই সিদ্ধান্তে সায় দিয়েছে বাকি আটটি শরিকদলও। প্রথমে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে বা মার্চ মাসের প্রথম রবিবার সমাবেশ হবে। কিন্তু দিল্লির সূত্রে বামেরা জেনেছে, মার্চ মাসের গোড়াতেই পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোটের নির্ঘন্ট জারি হয়ে যাবে। তাই সিদ্ধান্ত হয়েছে, ২৮ ফেব্রুয়ারি, রবিবার ব্রিগেড সমাবেশ ডাকা হবে। তবে ওইদিনটি এখনও চূড়ান্ত সম্মতির অপেক্ষায়।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সিপিএমের এক কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা বলেছেন, ‘‘ একুশের বিধানসভা ভোটের আগে যে বড় সমাবেশ হবে, তা আগেই স্থির ছিল। কিন্তু নির্বাচনী সময়সূচির কথা মাথায় রেখে ব্রিগেড সমাবেশ ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ রবিবার করা হচ্ছে।’’ ব্রিগেড সমাবেশের প্রয়োজনীয়তা প্রসঙ্গে তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘তৃণমূল এবং বিজেপি— দু’দলই চাইছে রাজ্যে স্পষ্ট মেরুকরণের ভোট হোক। তাতে দু’পক্ষেরই সুবিধা। কিন্তু তেমন হলে বাম-কংগ্রেস জোটের ক্ষতি হবে। তাই বড় সমাবেশ করে ফ্রন্টের নীচুতলার কর্মীদের বার্তা দিতে হবে যে, আমরাও এই দুই শক্তির বিকল্প হিসেবে লড়াইয়ের ময়দানে রয়েছি। সেই বার্তা দেওয়ার জন্য ব্রিগেড সমাবেশই হচ্ছে শ্রেষ্ঠ উপায়।’’

প্রসঙ্গত, ৪ জানুয়ারি রাজ্য কমিটির বৈঠকে ব্রিগেড সমাবেশে কংগ্রেসের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ বারের ব্রিগেডের গুরুত্ব অনুভব করে রাজ্য কমিটির বৈঠকে ছিলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও। সিপিএম সূত্রে জানা যাচ্ছে, জাতীয় রাজনীতিতে ‘সম মনোভাবাপন্ন’ বিজেপি-বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকেও আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে ব্রিগেড সমাবেশে।

Advertisement

আরও পড়ুন: কাউকে কোনও জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়নি, টুইট তৃণমূলের

২০১৯ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি শেষবার ব্রিগেড সমাবেশ করেছিল বামেরা। ভাল জমায়েতও হয়েছিল সমাবেশে। কিন্তু তার প্রতিফলন ভোটের বাক্সে পড়েনি। বরং বামেদের ব্রিগেড সমাবেশের সন্ধ্যায় সিবিআইয়ের পদস্থ অফিসারেরা কলকাতার তত্কালীন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাড়িতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গেলে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে যায়। সিবিআই অফিসারদের কার্যত পাকড়াও করে নিয়ে যাওয়া হয় পার্ক ষ্ট্রিট থানায়। পুলিশ কমিশনারের বাড়িতে ‘সিবিআই হানার’ প্রতিবাদে ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেলে ধরনায় বসে পড়েন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে বামেদের ব্রিগেড সমাবেশ থেকে সংবাদমাধ্যমের যাবতীয় আলো ঘুরে যায় সিবিআই বনাম রাজ্য সরকারের ল়ড়াই এবং তার অব্যবহিত পরে মুখ্যমন্ত্রীর ধর্নার দিকে। সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বারের ব্রিগেড সমাবেশ নিয়ে অনেক সতর্ক রাজ্য সিপিএম। সমাবেশের প্রস্তুতি থেকে প্রচার— সবকিছুতেই প্রথম থেকে নজর রাখছেন সিপিএমের রাজ্যনেতৃত্ব।

আরও পড়ুন: আজ আছে কাল নেই, শীতের লুকোচুরি চলছেই

মূলত সিপিএম তথা বামফ্রন্টের আহ্বানে ব্রিগেড সমাবেশ হলেও জোটের শরিক কংগ্রেসকেও সমান গুরুত্ব দেওয়ার উপর জোর দিচ্ছে সিপিএম। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে দু’পক্ষের জোট হলেও তা একেবারেই আশানুরূপ সাফল্য পায়নি। তাই এ বার অনেক আটঘাট বেঁধে নামতে চায় দু’পক্ষ। যদিও ইতিমধ্যেই কংগ্রেসের একাংশের তরফে প্রদেশ সভাপতি তথা লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরীকে জোটের ‘মুখ্যমন্ত্রীর মুখ’ হিসাবে তুলে ধরার দাবি উঠেছে। কংগ্রেসের বক্তারা সে বিষয়ে ব্রিগেডে কিছু বলেন কি না। বা বললেও সিপিএম তথা বামফ্রন্টের তরফে সে বিষয়ে কিছু উচ্চবাচ্য করা হয় কি না, তা নিয়েও কৌতূহল থাকবে। সিপিএম অবশ্য আপাতত ব্রিগেডের প্রস্তুতি এবং তার সাফল্য নিয়েই বেশি চিন্তিত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement