প্রতীকী ছবি।
জোরজবরদস্তি নয়। রেশনে ভর্তুকির ভার কমাতে আমজনতার উপরেই ভরসা করতে চাইছে রাজ্য সরকার। সেই ভাবেই ভর্তুকিহীন রেশন কার্ডের সংখ্যা বাড়াতে চায় তারা।
ভর্তুকিহীন ডিজিটাল রেশন কার্ডের জন্য আবেদন প্রক্রিয়া গ্রহণের কাজ শুরু হবে ৫ নভেম্বর। ১০ নম্বর ফর্মে এই আবেদন করা যাবে। যে-কোনও কাজের দিনে খাদ্য দফতরের বিশেষ শিবির, খাদ্য ও সরবরাহ ইনস্পেক্টরের অফিসে ওই ফর্ম জমা দেওয়া যাবে। ফর্ম মিলবে নির্দিষ্ট রেশন দোকান, খাদ্য দফতরের অফিস এবং অনলাইনে। ১০ নম্বর ফর্ম www.wbpds.gov.in থেকে ডাউনলোড করে অনলাইনে জমা দেওয়া যাবে। এই বিষয়ে শীঘ্রই বিজ্ঞাপন বেরোবে বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর। অনলাইনে আবেদনের ক্ষেত্রে আধার কার্ড আপলোড করে পরিচয়ের প্রমাণ দিতে হবে।
১০ নম্বর ফর্ম পূরণের পরে যে-ডিজিটাল রেশন কার্ড মিলবে, তাতে গণবণ্টন ব্যবস্থার সামগ্রী পাওয়া যাবে না। যদিও রেশন দোকান থেকে অন্য সামগ্রী (তেল, সাবান, মশলা, টুথপেস্ট) কিনতে পারবেন তাঁরা। ডিজিটাল রেশন কার্ড ব্যবহার করে খাদ্য দফতরের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধা একটি বেসরকারি বিপণন সংস্থা থেকে ছয় শতাংশে ছাড়ে গেরস্থালির সামগ্রী কেনা যাবে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
ওই ডিজিটাল রেশন কার্ডকে পরিচয়পত্র হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে। তাতে নাম-ঠিকানার পাশাপাশি থাকবে জন্ম-তারিখও। আবেদনের এক মাসের মধ্যেই হাতে কার্ড পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দিচ্ছেন খাদ্যমন্ত্রী। অনলাইনে আবেদন করলে তা সরাসরি হায়দরাবাদে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সে-ক্ষেত্রে আবেদনকারী কোনও ভুল করলে তার দায় খাদ্য দফতরের উপরে বর্তাবে না। এক কর্তার কথায়, ‘‘বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ ওঠে দফতরের ভুলের জন্য অনেকের রেশন কার্ডে ভুলভ্রান্তি রয়েছে। অনলাইনে স্বয়ং আবেদনকারী আবেদন করছেন। ফলে তাতে ভুল থাকার কথা নয়। তাই আবেদনকারীর উপরে ভরসা রেখে সরাসরি তা হায়দরাবাদে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।’’
তবে খাদ্য দফতরের ‘ভুলভ্রান্তির’ দরুন সচ্ছলদেরও অনেকে ভর্তুকিযুক্ত রেশনসামগ্রী পেয়ে যান। আবার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও অনেকে গণবণ্টন ব্যবস্থার মাধ্যমে ভর্তুকির সামগ্রী নেন। ১০ নম্বর ফর্মের মাধ্যমে ভর্তুকি ছেড়ে দিয়ে নতুন রেশন কার্ড নেওয়ার জন্য তাঁদের কাছে আবেদন জানাচ্ছে খাদ্য দফতর। তবে কার্ড পরিবর্তনের জন্য সরকার কোনও ভাবেই জোর খাটাবে না। কারণ, ওই কার্ডের
মাধ্যমে মানুষ খাদ্যসামগ্রী নিচ্ছেন। তা কোনও ভাবেই কেড়ে নেওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘কেউ যদি স্বেচ্ছায় কার্ড পরিবর্তন করেন, তা হলেই ভাল হয়। ভর্তুকির জন্য আমাদের বাড়তি কয়েকশো কোটি গুনতে হতে পারে। কিন্তু কারও কাছ থেকে আমরা জোর করে কার্ড কেড়ে নিতে পারি না।’’