আবহাওয়া এত ঘন ঘন রূপ বদলাতে শুরু করেছে যে, জ্বর-সর্দির জন্য করোনার আশঙ্কা আরও বেড়ে গিয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।
একে করোনা-আতঙ্ক। তার উপর দোসর আবহাওয়া বদল!
এমনিতেই মরসুম বদলের সময় জ্বর-সর্দি-কাশির মতো উপসর্গগুলো মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। তার উপর এ বছর আবহাওয়া এত ঘন ঘন রূপ বদলাতে শুরু করেছে যে, সে আশঙ্কা আরও বেড়ে গিয়েছে। তার উপর করোনোভাইরাসের উপসর্গগুলো সাধারণ জ্বর-সর্দি-কাশির মতো হওয়াতেই আরও আতঙ্ক ছড়িয়েছে মানুষের মধ্যে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, গত শনিবার থেকে বিহার এবং ঝাড়খণ্ডের উপর একটি ঝঞ্ঝার প্রভাবে এ রাজ্যের পশ্চিমের জেলাগুলোতে বৃষ্টি হচ্ছে। দক্ষিণবঙ্গের রাজ্যগুলোতে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও আবার শিলাবৃষ্টিও হয়েছে। আজ, রবিবারও কলকাতা এবং সংলগ্ন জেলাগুলোতে বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে।
আরও পড়ুন: রিপোর্ট নেগেটিভ, করোনা থেকে রক্ষা পেলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
ঝঞ্ঝার প্রভাবে গত কয়েক দিনের তুলনায় শনিবার থেকে তাপমাত্রা অনেকটাই কমে গিয়েছে। বিশেষ করে শুক্রবার যে ভীষণ গরম পড়েছিল, তা এনেকটাই কমে যায় শনিবার। ওই দিন বিকেলের পর থেকে কলকাতা-সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন অংশে ঝোড়ো হাওয়ায় কারণে তাপমাত্রা খুবই মনোরম হয়ে ওঠে। এমনকি রাতের দিকে বেশ শীত শীতও করছিল।
আরও পড়ুন: করোনা ঝুঁকির মধ্যে ভোট কী ভাবে, প্রশ্ন বিজেপির, নজর তৃণমূলের অবস্থানে
হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, রবিবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ ডিগ্রি নেমে গিয়েছে। ফলে বসন্তেও শীতল হাওয়া বইছে। রবিবার বর্ধমানের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৮.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাঁকুড়ার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৭.৯ এবং মেদিনীপুরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৮.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সপ্তাহ দুয়েক আগেই এ রাজ্যে পাহাড় থেকে সমতলে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হয়েছে। ঘন ঘন এই আবহাওয়ার পরিবর্তনে রোগের আশঙ্কাও বাড়ছে। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রভাব যে ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে সাধারণ জ্বর-সর্দি-কাশি হলেও মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হচ্ছে। ডাক্তারদের চেম্বারেও বাড়ছে ভিড়।
আলিপুরদুয়ার জেলার ডেপুটি চিফ মেডিক্যাল অফিসার সুবর্ণ গোস্বামী বলছেন, “অল্পবিস্তর জ্বর-সর্দি-কাশিকে একসঙ্গে ফ্লু বলি আমরা। আর জ্বর-সর্দি-কাশি যদি খুব বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে বলা হয় সিভিয়র অ্যাকুউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন। এর অনেক কারণ থাকে। তবে উপসর্গগুলো প্রায় একই। ঠিক যেমনটা নোভেল করোনাভাইরাসের উপসর্গ। তবে এটা মনে রাখা দরকার, নোভেল করোনাভাইরাসে কেউ হঠাৎ করে সংক্রামিত হয়ে পড়েন না, যদি না তিনি বাইরের সংক্রামিত দেশ থেকে ফিরেছেন বা সংক্রামিত কারও সংস্পর্শে আসেন। তা না হলে জ্বর-সর্দি-কাশিতে অহেতুক আতঙ্কের কোনও কারণ নেই।” এর পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, “আবহাওয়া বদলের সময়ও অসুখ-বিসুখে ভোগেন মানুষ। এই আবহে তাই মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে, হাসপাতালে রোগীদের ভিড়ও বাড়ছে। তবে এমন রোগী এলে তাঁর বিশদে খোঁজ নিচ্ছি, তিনি বিদেশ থেকে এসেছেন কি না তা জেনে নিচ্ছি, অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হচ্ছে।”