কামড় বসিয়েছে শীত।
ঠান্ডায় জবুথবু অবস্থা কলকাতার। পাহাড় থেকে জেলা থরথর করে কাঁপছে। শৈত্যপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। শনিবার মরসুমের শীতলতম দিন কলকাতায়। এ বছর নিজের রেকর্ড কি ভাঙতে পারবে শীত?
গত ১০ বছরে ডিসেম্বর মাসে শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নীচে কখনও নামেনি। ২০১২-র ২৭ ডিসেম্বর পারদ নেমে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছিল। এ বার কিন্তু তার আশপাশেই ঘোরাফেরা করছে পারদ। নিজের রেকর্ড ভেঙেও দিতে পারে শীত— সেই সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছে না আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
কলকাতার মতোই দার্জিলিঙে হাঁড়কাপানো ঠান্ডা পড়েছে। শনিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১.৬ ডিগ্রি। পার্বত্য এলাকার বিভিন্ন জায়গায় শিলাবৃষ্টি হয়েছে ২৪ ঘণ্টা আগে। তুষারপাতের সম্ভাবনাও রয়েছে। সান্দাকফুতে হাড় হিম করা ঠান্ডা। পশ্চিমী ঝঞ্ঝা কেটে যাওয়ায় এই পারদ পতন। আসানসোল, বাঁকুড়া, বর্ধমান, দিঘা, জলপাইগুড়ি, কলাইকুন্ডাতে পারদ ৮ ডিগ্রির ঘরে। কালিম্পঙে ঠান্ডা দার্জিলিঙের মতোই। সেখানে সর্ব নিম্ন তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি।
গ্রাফিক— তিয়াশা দাস।
আরও পড়ুন: রাজ্যপালকে চিঠি দিলেন মমতা, ধনখড় বললেন ‘গণতন্ত্রে এটাই কাম্য’
গোটা উত্তর-পূর্ব ভারত জুড়ে কনকনে ঠান্ডা। তার প্রভাবে এ রাজ্যেও পড়ছে। আগামী কয়েক দিন এমনই আবহাওয়া থাকবে। কলকাতাতেও গত দু’দিনে তাপমাত্রা কমে গিয়েছে প্রায় ৪ ডিগ্রি।
কলকাতার ইতিহাসে ১৯৬৬-র ২২ ডিসেম্বর সব থেকে বেশি ঠান্ডা পড়েছিল। সে বার পারদ ৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যায়। হাড় কাপানো ঠান্ডায় কাবু হয়ে ছিল কলকাতা। গত বছরের ২৯ ডিসেম্বরে কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০.৬ ডিগ্রি। ঠিক এক বছরের মাথায়, একই দিনে কলকাতার তাপমাত্রা ১১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস (স্বাভাবিকের থেকে ৩ ডিগ্রি কম)। ২০১৭ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে আর এত নীচে আর নামেনি পারদ।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, ১৯৮১ থেকে ২০১০ সালের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার গড় ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি। এ বার সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও স্বাভাবিকের থেকে অনেকটাই কম। সর্বনিম্ন এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রার মধ্যে ব্যবধান কমে যাওয়ায় সারা দিনই ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। শুক্রবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ৬ ডিগ্রি কমে ১৯ ডিগ্রির ঘরে চলে গিয়েছে। তবে বছরের শুরুতে ফের বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে। ১ থেকে ৩ জানুয়ারি বৃষ্টি চলবে। তার পর ফের জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানাচ্ছেন আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা।