অনেকের মতে, এই মেঘলা আবহাওয়া কাটলেই উত্তুরে বাতাসের পথ খুলবে। —ফাইল চিত্র।
সকাল থেকেই আকাশ মেঘলা, ঝিরঝিরে বৃষ্টিও হয়েছে দিনভর। তাই রবিবার কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় বঙ্গের দিনের তাপমাত্রা নেমেছে অনেকটাই। শীত-শীত ভাবের জন্য কেউ কেউ গায়ে হাল্কা সোয়েটার বা জ্যাকেটও চাপিয়েছেন। তবে এই পারদ-পতনকে শীত বলতে নারাজ আবহবিদেরা। বরং তাঁরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আকাশ মেঘলা হওয়ায় দিনের তাপমাত্রা কমেছে। কিন্তু শীত বয়ে আনা উত্তুরে বাতাসের পথে বাধা সৃষ্টি করেছে সে। উপরন্তু মেঘলা আকাশের ফলে রাতে মাটি থেকে বিকিরিত তাপ আবহমণ্ডলের বাইরে যেতে পারবে না। তাই রাতের তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা নেই।
আমবাঙালি অবশ্য কনকনে উত্তুরে বাতাসের প্রত্যাশায় বুক বেঁধেছে বহু দিন। ‘শীতকাল কবে আসবে,’ এই প্রশ্নও নিত্যদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরপাক খাচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে, জ়ওয়াদ বিদায় নিলেই কি ঝুপ করে শীত হাজির হবে? জ়ওয়াদ বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গেই শীত হাজির হবে, এমন আশ্বাস আবহবিদেরা দিচ্ছেন না। তবে তাঁদের অনেকের মতে, এই মেঘলা আবহাওয়া কাটলেই উত্তুরে বাতাসের পথ খুলবে। শীত পড়ার অনুকূল পরিস্থিতিও তৈরি হবে। এক আবহবিজ্ঞানীর মতে, ‘‘সাগরে কোনও শক্তিশালী নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে আবহাওয়ার উপরে গভীর প্রভাব পড়ে। তাতে স্বাভাবিক ছন্দ নষ্ট হয়। নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড় বিদায় নেওয়ার পরেও সেই পুরনো ছন্দ ফিরে পেতে কয়েক দিন সময় লাগে।’’
আবহবিদেরা জানান, বঙ্গের শীতের চাবিকাঠি লুকনো থাকে উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম ভারতে। উত্তর ভারতের পাহাড়ি এলাকায় তুষারপাত হলে এবং উত্তর-পশ্চিম ভারতে জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়ার পরে সেখান থেকে কনকনে শীতল হাওয়া পূর্ব ভারতে বয়ে আসে। তাতেই শীত থিতু হয়। মৌসম ভবনের খবর, দিন দুয়েক পর থেকে উত্তর-পশ্চিম ভারতে রাতের তাপমাত্রায় ২-৪ ডিগ্রি পতন দেখা যেতে পারে। পূর্ব ভারতে আগামী দিন পাঁচেক রাতের তাপমাত্রায় তেমন বড়সড় পরিবর্তন হবে না। একটি বেসরকারি সংস্থার পূর্বাভাস, আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি থেকে কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় বঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় রাতের তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে। সপ্তাহের শেষে গিয়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ২-৩ ডিগ্রি নামতে পারে।