—প্রতীকী ছবি।
ভরা আশ্বিনে আশঙ্কা জাগিয়েছিল বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপ। পুজোর আগে ঘূর্ণিঝড় হানা দেবে কি না, তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছিল। তবে সেই আশঙ্কায় আপাতত জল পড়েছে। বৃহস্পতিবার মৌসম ভবন জানিয়েছে, আজ, শুক্রবার মায়ানমার সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্ত দানা বাঁধবে। রাত পেরোনোর আগেই সেটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। তার পরে সেটি সামান্য শক্তি বাড়িয়ে স্পষ্ট নিম্নচাপে পরিণত হয়ে ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে হাজির হবে। এর ফলে গাঙ্গেয় বঙ্গে বৃষ্টি হলেও ঝড়ের আশঙ্কার কথা জানানো হয়নি। তবে সেপ্টেম্বরের শেষ লগ্নে এই নিম্নচাপের আবির্ভাব বঙ্গে বর্ষায় বিদায় বিলম্বিত করবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, নিম্নচাপের ফলে আগামী দিন কয়েক গাঙ্গেয় বঙ্গে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। আগামী মঙ্গলবার থেকে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে বৃষ্টি বাড়বে। কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। মৌসম ভবনের খবর, ওড়িশাতেও ভারী বৃষ্টি হতে পারে। আগামী কয়েক দিন ঝাড়খণ্ড এবং বিহারেও বৃষ্টি হতে পারে।
ধারা-বিবরণী
শুক্রবার থেকে সোমবার গাঙ্গেয় বঙ্গে মাঝারি বৃষ্টি
মঙ্গলবার থেকে উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস
বৃষ্টি হতে পারে ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খণ্ডে
ঝড়়ের তেমন আশঙ্কা নেই
সূত্র- মৌসম ভবন
সেপ্টেম্বরের শেষ থেকে অক্টোবর-নভেম্বর মাসে ঘূর্ণিঝড় অস্বাভাবিক নয়। গত কয়েক বছর একাধিক ঘূর্ণিঝড় এ সময়ে হানা দিয়েছে। এ বারও আবহবিদদের একাংশের অনুমান ছিল যে সেপ্টেম্বরের শেষে, অর্থাৎ বর্ষার বিদায় লগ্নে মৌসুমি বায়ু দুর্বল হয়ে পড়লে নিম্নচাপ উত্তরোত্তর শক্তি বৃদ্ধি করে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতে পারে। তবে শেষমেশ সেই আশঙ্কা কেটেছে বলেই মনে করছেন তাঁরা। বস্তুত, মৌসম ভবনের ঋতুপঞ্জি অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে উত্তর-পশ্চিম ভারত থেকে বর্ষা পাততাড়ি গোটাতে থাকে। সেপ্টেম্বরের শেষে উত্তর ভারত থেকে বর্ষার বিদায় পর্ব মিটে যায়। সেই হিসাবেই ৩০ সেপ্টেম্বর বর্ষাকালের শেষ হয়। তবে এ বছর বর্ষায় বিদায়ে বিলম্বিত লয় ধরা পড়েছে। গত সোমবার রাজস্থানের একচিলতে এলাকা থেকে বর্ষা বিদায় নিয়েছে। এ দিন পর্যন্ত সেখানেই থেমে আছে সে।
আবহবিদদের একাংশের মতে, বর্ষা বিদায়ে বিলম্বের ফলেই আপাতত ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতে বাধা পেয়েছে। কারণ, মৌসুমি বায়ু এবং মৌসুমি অক্ষরেখা সক্রিয় থাকলে সাগরের উপরে নিম্নচাপ শক্তি বাড়াতে পারে না। বরং দ্রুত সাগর থেকে স্থলভূমিতে ঢুকে পড়ে। এ বারও তেমনই হতে চলেছে বলে তাঁরা জানিয়েছেন।
তবে ঝড়ের শঙ্কা কাটলেও শারদোৎসবের আগে অনেকের মনে দুশ্চিন্তার উদ্রেক ঘটিয়েছে বর্ষার বিলম্বিত বিদায়। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ১০-১১ অক্টোবর নাগাদ পশ্চিমবঙ্গ থেকে বর্ষা বিদায় নেওয়ার কথা। অর্থাৎ উত্তর-পশ্চিম ভারত থেকে শুরু করে পূর্ব ভারত পর্যন্ত বর্ষার পাততাড়ি গুটোতে দিন কুড়ি সময় লেগেই যায়। এ বার যে লয়ে বর্ষা এগোচ্ছে তাতে বঙ্গ থেকে বিদায় নিতে নিতে তার অক্টোবর মাসের তৃতীয় সপ্তাহ পেরিয়ে যাবে কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই বলছেন, অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহের শেষে দুর্গাপুজো হওয়ায় অনেকেই মেঘমুক্ত আকাশে উৎসবের আনন্দের আশা করেছিলেন। এ বার কি সেই আশায় জল পড়বে?