দিঘার সৈকতে ভিড়। সোমবার সন্ধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
পূর্বাভাস ছিল দুর্যোগের। ছিল প্রবল ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কা। কিন্তু দিঘা-সহ পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী এলাকায় সোমবারও দুর্যোগের তেমন ঘনঘটা দেখা গেল না। দিনভর আকাশের মুখ ভারী থাকলেও সৈকত শহর দিঘাযর ‘প্রাপ্তি’ শুধু দু-এক পশলা। তবে প্রশাসনিক নির্দেশ মেনে অধিকাংশ পর্যটকই হোটেল ছেড়ে ফিরে গিয়েছেন।
রবিবার রাতে ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’ আছড়ে পড়েছে ওড়িশা এবং অন্ধ্রপ্রদেশের মধ্যবর্তী এলাকায়। তার জেরে এ রাজ্যের উপকূলে ব্যাপক ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছিল হাওয়া অফিস। এ দিন অবশ্য সে রকম কিছু ঘটেনি। তবে, ‘গুলাব’ সরে গেলেও এর পরে ধেয়ে আসছে আরেকটি ঘূর্ণাবর্ত। তার জেরে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভীরা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে এ দিন বিকেলে জেলা প্রশাসনকে বার্তা পাঠিয়েছে আবহাওয়া দফতর। সেই মতো আগেভাগেই সতর্ক জেলা প্রশাসন। সমুদ্রস্নান ঠেকাতে দিঘা, মন্দারমণির সব ঘাট বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড করে দিয়েছে পুলিশ।
২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মৎস্যজীবীদেরও সমুদ্রে যেতে নিষেধ করেছে প্রশাসন। দিঘা, শঙ্করপুর, পেটুয়াঘাট মৎস্য বন্দরে ইতিমধ্যে মাছ ধরার ট্রলারগুলি ফিরে এসেছে। পাশাপাশি পর্যটকদেরও হোটেল ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়েছিল। গত শনিবার থেকেই উপকূলের তিনটি থানার উদ্যোগে সেই মতো মাইকে প্রচার চালানো হয়। রবিবার থেকেই দিঘা, মন্দারমণি ছেড়ে ঘরমুখো পা বাড়ান বহু পর্যটক। সোমবারও অনেকে সৈকত শহর ছেড়েছেন। বামপন্থী দলগুলির ডাকা বন্ধে সকালে সরকারি বাস দেরিতে চলা শুরু করে। কলকাতার নাগের বাজার থেকে বেড়াতে আসা সন্দীপন বসু দিঘা ছাড়ার আগে বলছিলেন, ‘‘জলোচ্ছ্বাস দেখতে এসেছিলাম। তা আর হল না। প্রশাসনিক নির্দেশ মেনে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।’’ দিঘার হোটেল মালিক সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তীও বললেন, ‘‘আবহাওয়া তেমন খারাপ হয়নি। তবে, হোটেল ছেড়ে চলে গিয়েছেন পর্যটকেরা।’’ এ দিন সন্ধ্যায় দিঘায় পর্যটকের আনাগোনা বাড়ে। সৈকতের ধারে দোকানও বসেছিল। ভিড় ছিল ভালই। এঁদের বেশিরভাগই স্থানীয় লোকজন। আবহাওয়া ভাল থাকায় দিঘায় বেড়াতে এসেছেন। মন্দারমণি, তাজপুর-সহ উপকূলের বাকি পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে লোকজনের দেখা মেলেনি। দোকান খোলা থাকলেও ছিল না ক্রেতা। ব্যবসায়ী সুমন মিশ্র বলছেন, ‘‘একেবারে খাঁ খাঁ করছে। স্থানীয় লোকও দু’-একজন এসেছে।’’