প্রতীকী ছবি।
তক্কে তক্কে থাকত পুলিশ। তাকে খুঁজত সমানে। কিন্তু কিছুতেই তার নাগাল পাচ্ছিল না। মহম্মদ শামসের আলম কখন, কোন পথে, কোন গাড়িতে চাপিয়ে মুঙ্গের থেকে অস্ত্র নিয়ে আসছে, তার হদিস পেতে কালঘাম ছুটে যেত উর্দিধারীদের। সহায় হল লকডাউন। পুলিশি সূত্রের খবর, লকডাউনে লরি চলাচল কার্যত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নিজেই লরি চালিয়ে অস্ত্র পাচারের তালে ছিল শামসের। রবিবার তাকে একেবারে হাতেনাতে পাকড়াও করেছে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ। সে-দিন শামসের লরি চালাচ্ছিল এবং খালাসি হয়েছিল তার শাগরেদ শিবু কর্মকার।
পুলিশি সূত্রের দাবি, পাকড়াও করলেও চোখে ধুলো দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার ছক কষেছিল শামসের। প্রথমে সন্দেহভাজন লরিটিকে আটক করে দেখা যায়, তাতে ভুট্টা ভর্তি! অথচ ‘সোর্স’ জানিয়েছে, এই লরিতেই অস্ত্র পাচার হচ্ছে। এর পরে কেবিনে তল্লাশি চালাতেই চালকের আসনের তলায় বাক্সে মোবিলের একটি জার পাওয়া যায়। জারের নীচে সেলাই করা একটি অংশে টান মারতেই বেরিয়ে আসে পিস্তল এবং তাজা কার্তুজ!
এসটিএফ জানিয়েছে, ৭এমএম পিস্তল, ১০টি ম্যাগাজিন, ৩০ রাউন্ড গুলির পাশাপাশি চালকের কেবিনের ভিতরে লুকোনো ছিল ২০ কিলোগ্রাম বিস্ফোরকও। গোয়েন্দারা জেনেছেন, হুগলির বৈদ্যবাটীতে ওই অস্ত্র ও বিস্ফোরক হাতবদলের কথা ছিল। তার পরে কলকাতার উপকণ্ঠে কোথাও পাচার করা হত। সেই পাচারকারী কারা, তা জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা। তাঁদের আশা, শামসেরকে জেরা করে চক্রের বাকি চাঁইদের খোঁজ মিলবে।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, শামসের মূলত বিহারের মুঙ্গের থেকেই বেআইনি অস্ত্র কিনে পাচার করত। গোয়েন্দারা নানা ভাবে চেষ্টা চালানো সত্ত্বেও এর আগে তাকে ধরা যায়নি। কারণ, বিহার ও কলকাতার মধ্যে যাতায়াতকারী লরিচালকদের উপরে শামসেরের প্রভাব রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন লরিতে অস্ত্র পাচার করত সে। কখনও কখনও বিহার ও পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে গাড়িও বদল করা হত একাধিক বার।