(বাঁ-দিক থেকে) জয়েন্টে প্রথম: সৌরদীপ দাস, দ্বিতীয়: শুভম ঘোষ এবং তৃতীয়: শ্রীমন্তী দে।
প্রকাশিত হল রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার ফল। সফল হলেন ৭২ হাজার ২৯৮ জন পরীক্ষার্থী। পরীক্ষা দিয়েছিলেন ৭৩ হাজার ১১৯ জন। তবে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলিতে সব আসন পূরণের লক্ষ্যে ঢেলে সাজানো হয়েছে কাউন্সেলিং-এর পদ্ধতি। সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে এবং অনলাইনে হবে কাউন্সেলিং। রাজ্যে ১৭ হাজার ২৮৮টি কমন সার্ভিস সেন্টার রয়েছে। ওই সব সেন্টারের মাধ্যমে মোটামুটি ১২ অগস্ট থেকে কাউন্সেলিং শুরুর পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ বার সেরা দশের তালিকায় রাজ্যের উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের আওতাধীন স্কুলের পড়ুয়া এক জন রয়েছে, দু’জন আইসিএসই বোর্ডের। বাকি সাত জনই সিবিএসই বোর্ডের পড়ুয়া।
সব মিলিয়ে সফলদের মধ্যে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের ৫১% পড়ুয়া রয়েছেন। সিবিএসই বোর্ডের পড়ুয়া ৩১%। আইসিএসই বোর্ডের পড়ুয়া রয়েছে ৩%। অন্য বোর্ডের পড়ুয়া ১৫%। সফল পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রের সংখ্যা ৫৫ হাজার ১৫৪ জন আর ছাত্রী ১৭,১৪৪ জন।
বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান দিলীপকুমার মিত্র শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, সরকারি, বেসরকারি মিলিয়ে রাজ্যের ১১৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ফার্মেসির মোট আসন সংখ্যা ৩৪ হাজার ৮৯১। পরীক্ষায় র্যাঙ্ক কার্ড পাবেন মোট ৭২ হাজার ২৯৮ জন। ৯৯% পরীক্ষার্থীই র্যাঙ্ক পেয়েছেন। শূন্য অথবা তার নীচে যাঁরা পেয়েছেন, তাঁদের র্যাঙ্ক কার্ড দেওয়া হবে না। শূন্যের উপরে যাঁদের প্রাপ্তি, তাঁরাই র্যাঙ্ক কার্ড পেয়ে কাউন্সেলিংয়ে অংশ নিতে পারবেন। ভাইস চেয়ারম্যানের বক্তব্য, যাঁরা এক নম্বর পেয়েও র্যাঙ্কে রয়েছেন, তাঁরা মেধাবী নন তা বলা যায় না। বোর্ডের পরীক্ষাতেই তাঁদের মেধা যাচাই হয়েছে। জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার ফলাফল থেকে শুধু বোঝা যাচ্ছে, তাঁরা এই পরীক্ষায় কোন জায়গায় রয়েছেন।
আরও পড়ুন: ইঞ্জিনিয়ারিং নয়, জয়েন্টের ফার্স্ট বয়ের প্রথম পছন্দ বিজ্ঞান গবেষণা
প্রতি বছরই বহু পড়ুয়া ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে ভিন রাজ্যে চলে যান। এই প্রবণতা আটকাতে এ বছর বেশ কিছুটা আগে এই পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু করোনার কারণে ফল প্রকাশ হল ছয় মাস পরে। তবে পড়ুয়ারা যাতে এ রাজ্যেই থাকেন এবং কাউন্সেলিং শেষে কলেজে কলেজে ফাঁকা আসন যাতে না থাকে, তাই এ বার কাউন্সেলিং প্রক্রিয়াকে অনেকটাই পুনর্গঠিত করা হয়েছে বলে জানান ভাইস চেয়ারম্যান।
আরও পড়ুন: এক দিনে ৫২ জন মারা গেলেও রাজ্যে কমল সংক্রমণের হার
কেন্দ্রীভূত এবং পরবর্তীতে আসন ফাঁকা থাকলে বিকেন্দ্রীভূত কাউন্সেলিং – দুটোই এ বার অনলাইনে হবে। আবেদনকারীকে সব নথি অনলাইনে আপলোড করতে হবে। ভার্চুয়াল রিপোর্টিং সেন্টার থেকে সেই নথি যাচাই করা হবে। কোনও অসঙ্গতি থাকলে আবেদনকারীর কাছে মেসেজ যাবে। ক্লাস শুরুর পরে সরাসরি আসল নথি যাচাই করা হবে। এ রাজ্যের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রাস পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতেও ভর্তি নেওয়া হয়। এই পরীক্ষা বছরে দু’বার হয়। করোনার কারণে দ্বিতীয় পরীক্ষা পিছিয়ে গিয়ে সেপ্টেম্বরে হবে। তাই সেই ফলের ভিত্তিতে কাউন্সেলিং পরে হবে বলে জানিয়েছেন ভাইস চেয়ারম্যান।
নতুন নিয়ম
• সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এবং অনলাইনে কাউন্সেলিং
• কাউন্সেলিংয়ের প্রতিটি রাউন্ডেই আবেদনকারী নতুন করে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। আগে এ সুযোগ ছিল না।
• আবেদনকারী প্রতিটি রাউন্ডেই বিষয় পড়ার ‘চয়েস’ বদলাতে পারবেন।
• আবেদনকারী যত খুশি ‘চয়েস’ জানাতে পারবেন। বোর্ডের পরামর্শ, অন্তত ২০টি ‘চয়েস’ যেন আবেদনকারী জানান।
• প্রতিটি রাউন্ডেই আবেদনকারী পছন্দ ‘লক’ (চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত) করতে পারবেন।
• কোনও আবেদনকারী যদি ভর্তি হওয়ার জন্য কোনও কলেজকে পছন্দ করেন, তা হলে তাঁকে প্রাথমিক ভর্তির ফি দিয়ে দিতে হবে।
• কিন্তু পরেও তিনি চাইলে পরের রাউন্ডের কাউন্সেলিংয়ে যেতে পারবেন।
• ওই প্রাথমিক ভর্তির ফি সে-ক্ষেত্রে ফেরতযোগ্য।
কাউন্সেলিং নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে পড়ুয়াদের এসএমএস করে সব কিছু জানানো হচ্ছে। কাউন্সেলিংয়ের আগে অডিয়ো-ভিসুয়্যাল প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে সব কিছু আবার বুঝিয়ে দেওয়া হবে। আবেদনকারীদের সুবিধার্থে বোর্ডের ওয়েবসাইটে অনেক বেশি তথ্য আপলোড করা হয়েছে। ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেলও চালু করেছে বোর্ড। তথ্য দেওয়া হবে গণমাধ্যমেও। যোগাযোগ করা যাবে বোর্ডের টোল ফ্রি নম্বরে (১৮০০-১০২৩-৭৮১, ১৮০০-৩৪৫০-০৫০)। অভিযোগ থাকলে যোগাযোগ করতে হবে নোডাল অফিসারের নম্বরে (৮৭৭৭৭৬৭৭৪১, ৯৩৩৯৫৯৬৫৬৮)।