রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। ফাইল চিত্র।
স্কুল স্তরে শিক্ষক নিয়োগে পর্বতপ্রমাণ দুর্নীতির পাশাপাশি কলেজে শিক্ষক নিয়োগেও অনিয়মের অভিযোগ জোরালো হচ্ছিল। তারই মধ্যে অনিয়মের অভিযোগ উঠছে রাজ্যের সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কলেজগুলিতে অধ্যক্ষ নিয়োগের প্রক্রিয়া ঘিরেও। সিএসসি বা কলেজ সার্ভিস কমিশনের তরফে অবশ্য অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (ওয়েবকুটা) সাধারণ সম্পাদক কেশব ভট্টাচার্য মঙ্গলবার বলেন, ‘‘আমাদের কাছে এই বিষয়ে বহু অভিযোগ এসেছে। অধ্যক্ষ নিয়োগে স্বচ্ছতার অভাবের কথা জানিয়ে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে ইমেল করা হয়েছে।’’
সিএসসি-র মাধ্যমে অধ্যক্ষপদে মনোনীত প্রার্থীদের একাংশের অভিযোগ, সোমবার কাউন্সেলিংয়ের সময় অধ্যক্ষ-শূন্য কলেজের তালিকা এবং কোন প্রার্থী কোন কলেজ বাছাই করেছেন, তা প্রকাশ করা হয়নি। পছন্দের কলেজ না-পেয়ে বেশ কিছু প্রার্থী অধ্যক্ষপদ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তখন প্যানেলে থাকা বেসরকারি কলেজে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রার্থীদের বিভিন্ন কলেজে অধ্যক্ষ হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।
আগেই অভিযোগ উঠেছিল, অধ্যক্ষপদ প্রার্থীদের ‘স্কোর’ বা নম্বর প্রকাশ করা হয়নি। প্রকাশ করা হয়েছে শুধু নামের তালিকা। কে কত পেয়েছেন, তাএকেবারেই স্পষ্ট নয়। অধ্যক্ষদের এই তালিকায় রয়েছেন বেশ কিছু বেসরকারি কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ প্রার্থীরা। বিক্ষুব্ধ প্রার্থীদের দাবি, সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কলেজে অধ্যক্ষ হতে গেলে ইউজিসি বা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নির্দিষ্ট বেতনহারে অন্তত ১৫ বছর চাকরির অভিজ্ঞতা থাকা জরুরি। তাঁদের নিয়োগ সংক্রান্ত নথি সরকারের কাছেই থাকে। প্রশ্ন উঠছে, যাঁরা বেসরকারি কলেজ থেকে অধ্যক্ষ নিয়োগের প্যানেলে এলেন, তাঁরা ওই বেতনহারে চাকরি করেছেন কি?
বেসরকারি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের নিয়োগ সিএসসি অথবা পিএসসি বা পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে হয় না। তাঁদের নিয়োগ করে সংশ্লিষ্ট কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের গভর্নিং বডি। তাঁরা আদৌ ১৫ বছর শিক্ষকতা করেছেন কি না, কী ভাবেই বা সেটা যাচাই করা হচ্ছে, উঠছে এই সব প্রশ্নও।
তবে সিএসসি-র চেয়ারম্যান দীপক কর বলেন, ‘‘পুরো প্রক্রিয়াই চালানো হয়েছে রাজ্য সরকারের নিয়োগ বিধি এবং ইউজিসি-র নিয়ম মেনে। কোনও রকম অনিয়ম হয়নি।’’