মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
বকেয়া দাবিদাওয়া নিয়ে ক্রমশ ক্ষোভ বাড়ছিল ডব্লিউবিসিএস এগ্জ়িকিউটিভ অফিসারদের মধ্যে। শুক্রবার সেই সংগঠনের নেতা-সদস্যদের ডেকে তাঁদের বেশির ভাগ দাবিই মেনে নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংগঠন সূত্রের বক্তব্য, সরকারের বর্তমান অবস্থানে সর্বস্তরের অফিসারেরাই উপকৃত হবেন। পর্যবেক্ষকদের অনেকেই মনে করছেন, বিধানসভা ভোটের আগে দাবি মিটিয়ে অফিসারদের উষ্মা রোখা জরুরি ছিল সরকারের কাছে।
সংগঠনের ১২টি দাবির বেশির ভাগই অমীমাংসিত থাকায় অফিসারদের ক্ষোভ বাড়ছিল। এ দিন আইএএস অফিসারদের মতো তাঁদেরও পৃথক ‘পে-রুল’ তৈরির দাবি মেনে নিয়েছে রাজ্য। সিংহভাগ দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে বিডিও-রা সাধারণত ছুটি নিতে পারতেন না। এ বার থেকে তাঁরা বছরে ৩০ দিনের ‘লিভ এনক্যাশমেন্ট’-এর সুযোগ পাবেন। ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটরা বিশেষ ভাতা হিসাবে ১২০০ টাকা করে পাবেন।
এত দিন ডব্লিউবিসিএস অফিসারদের জন্য বিশেষ সচিবের ৬০টি এবং যুগ্মসচিবের ২১৫টি পদ ছিল। তা বেড়ে হল যথাক্রমে ১০০ এবং ২৫০। অফিসারদের ব্যাখ্যা, আগে যুগ্মসচিব থেকে বিশেষ সচিব পদে যেতে বহু দিন সময় লাগত। এ বার দ্রুত পদোন্নতি সম্ভব। যুগ্মসচিব পদে দু’বছর কাজ হয়ে গেলে ওই পদে কর্মরত ৪০ শতাংশের (২৫০ পদসংখ্যার নিরিখে) জন্য নতুন একটি ‘পে-স্কেল’ তৈরি করল রাজ্য। ৮ বছর এবং ১৬ বছর চাকরির করলে পরবর্তী ‘পে-স্কেল’-এ যেতে পারতেন গ্রুপ-এ অফিসার। এখন ১৬ বছরের সময়সীমা কমে হল ১৪ বছর। এতে এসডিও এবং জেলায় বিশেষ পদে কর্মরতরা সুবিধা পাবেন। এক ডব্লিউবিসিএস অফিসারের আইএএস হতে ২৭-২৯ বছর লাগে। যদিও ডব্লিউবিপিএস-রা (পুলিশ) ১০-১২ বছরেই আইপিএস হতে পারেন। আবার কেন্দ্রের নিয়মে যে বছর এক জন ডব্লিউবিসিএস অফিসার আইএএস-এ উন্নীত হওয়ার সুযোগ পাবেন, সে বছর তাঁর বয়স ৫৬-র বেশি হওয়া চলবে না। এতে অনেকেই সুযোগ হারান। তুলনায় জুনিয়র অফিসার আইএএসের সুযোগ পান। সরকারের সিদ্ধান্ত, আইএএস হওয়ার যোগ্যতা থেকেও কোনও ডব্লিউবিসিএস অফিসার তা হতে না পারলে সংশ্লিষ্টের বেতন এবং আর্থিক সুবিধা আইএএস-দের হারেই দেবে রাজ্য।