Higher Secondary Result 2020

মোবাইল থেকে দূরে সরতেই উচ্চমাধ্যমিকে ৪৯৯ নম্বর কলকাতার স্রোতশ্রীর

মোবাইলের সঙ্গে ১২ ঘণ্টাও কেটে যেত কখনও কখনও। টেস্ট পরীক্ষার ফল যথারীতি খারাপ। সেখান থেকেই ঘুরে দাঁড়ানো স্রোতশ্রীর।

Advertisement

সোমনাথ মণ্ডল

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২০ ১৮:৪৩
Share:

পাঁচশোর মধ্যে ৪৯৯ পেয়েছে কলকাতার স্রোতশ্রী রায়। —নিজস্ব চিত্র।

এ যেন ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই। মাধ্যমিকে ভাল ফল করার পর, নতুন মোবাইল পেয়েছিলেন বেহালা শীলপাড়ার বাসিন্দা স্রোতশ্রী রায়। তার পর সারা ক্ষণ মোবাইল নিয়ে কখনও ফেসবুক, কখনও হোয়াটস্‌অ্যাপ। কখনও আবার অন্য কোনও সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে মগ্ন হয়ে থাকত সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গভর্নমেন্ট গার্লস-এর এই কৃতী ছাত্রী। এমনকি মোবাইলের সঙ্গে ১২ ঘণ্টাও কেটে যেত কখনও কখনও। টেস্ট পরীক্ষার ফল যথারীতি খারাপ। সেখান থেকেই ঘুরে দাঁড়ানো। সেই মোবাইলকে জীবন থেকে আলাদা করতেই একে বারে সেরার সেরা সে। উচ্চমাধ্যমিকে পাঁচশোর মধ্যে ৪৯৯ নম্বর!

Advertisement

তার এই মোবাইলের প্রতি আসক্তির কথা নিজেই জানালেন স্রোতশ্রী। কী ভাবে পড়াশোনার মাঝে মোবাইল প্রতিবন্ধক হয়ে উঠেছিল, সেই অভিজ্ঞতাও শেয়ার করলেন। বাবা-মা দু’জনেই শিক্ষক। স্রোতশ্রীর ইচ্ছা কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করার। নিজের ফল জানার পর স্রোতশ্রী বলছে, “মোবাইলের জন্য আমার টেস্টের ফল ভাল হয়নি। তার পর মোবাইল থেকে দূরেই থাকতাম। ভাল লাগছে, আমি ৪৯৯ পেয়েছি পাঁচশোর মধ্যে। সব ক’টা পরীক্ষা দিতে পারলে আরও ভাল লাগত।”

মাধ্যমিকে জেলার জয়জয়কার। তবে উচ্চ মাধ্যমিকে কলকাতার ছাত্রছাত্রীরা এ বার ভাল ফল করেছে। এ বছর শেষ তিনটি পরীক্ষা না হওয়ায় মেধাতালিকা প্রকাশ হয়নি। স্রোতশ্রী ছাড়াও আরও তিন জন পেয়েছে ৪৯৯ নম্বর। তার মধ্যে রয়েছে বাঁকুড়ার বড়জোরা হাইস্কুলের গৌরব মণ্ডল। বাঁকুড়ার কেন্দুয়াডিহি হাইস্কুলের অর্পণ মণ্ডল এবং হুগলি কলেজিয়েট স্কুলের ঐকিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়। ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছে গৌরব মণ্ডলের। বাবা প্রাক্তন সেনাকর্মী। ছেলের সাফল্যের খবর শুনে উচ্ছ্বসিত তার মা শিপ্রা দেবীও। ক্রিকেট খেলতে ভালবাসে গৌরব। তার সাফল্যের খবর পেয়ে একের পর এক ফোন আসতে শুরু করেছে গৌরবের কাছে। ফুল-মিষ্টিতে ভরে গিয়েছে ঘর। সেই ব্যস্ততার ফাঁকেই গৌরব বলল, “আমি ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছি। মন দিয়ে আগামী দিনে পড়তে চাই।”

Advertisement

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল জানতে এবিপি এডুকেশনের লিঙ্কে ক্লিক করুন।

স্রোতশ্রী মতোই ৪৯৯ নম্বর পেয়েছে বাঁকুড়ার গৌরব মণ্ডল (বাঁ-দিকে), কলকাতার গৌরব মাইতি (মাঝে) পেয়েছে ৪৯৮ নম্বর এবং সৈকত দাসের প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৭। —নিজস্ব চিত্র।

৪৯৮ নম্বর পেয়েছেন কলকাতার আর এক গৌরব। বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরে হলেও, বাবা কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকেন। তাই এখানে থেকেই পড়াশোনা তাঁর। যোধপুর পার্ক বয়েজ হাইস্কুলের ছাত্র গৌরব মাইতি সর্বভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষায় ভাল ফল করলেও, তারও ইচ্ছা ডাক্তার হওয়ার।

আরও পড়ুন: উচ্চমাধ্যমিকে পাশের হারে রেকর্ড, ভাল ফল কলকাতার

নব নালন্দার ছাত্র সৈকত দাস পেয়েছে ৪৯৭ নম্বর। বেহালার আদর্শপল্লির বাসিন্দা সৈকত ভবিষ্যতে চিকিৎসক হতে চায়। এমবিবিএস পাশ করে তাঁর ইচ্ছা মনোরোগ বিশেষজ্ঞ হওয়ার। সৈকতের কথায়, “এই নম্বর পেয়ে আমার ভাল লাগছে। শেষ দুটো পরীক্ষা দেওয়া হল না।”

(এই খবর প্রথম প্রকাশের সময় নব নালন্দা স্কুলের ছাত্র সৈকতের বক্তব্যে ‘এমবিবিএস পাশ করে স্ট্যাটিসটিক্স নিয়ে পড়তে চাই’ লেখা হয়েছিল। আসলে সে এমবিবিএস পাশ করে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ হতে চাওয়ার কথা জানিয়েছিল। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement