প্রতীকী ছবি।
করোনার প্রকোপ বৃদ্ধির জেরে স্কুল আবার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অনলাইনে বা অন্য বিকল্প পদ্ধতিতে পড়াশোনা চালু রাখার নির্দেশ দিল শিক্ষা দফতর। সেই সঙ্গে স্কুলপড়ুয়ারা পড়াশোনা কতটা করছে, তা দেখার জন্য তাদের বাড়ি যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার অগ্রগতি দেখার সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে শিক্ষাসচিব মণীশ জৈন স্বাক্ষরিত নির্দেশপত্রে।
অতিমারির দীর্ঘস্থায়ী দাপটে স্কুল বন্ধ থাকার সময় দেখা গিয়েছে, এ রাজ্যে 'ডিজিটাল ডিভাইড' খুবই প্রকট। অনলাইন পঠনপাঠনের সুযোগ নেই, এমন অসংখ্য পড়ুয়ার পড়াশোনা বিশেষ এগোয়নি। এ বার তা কতটা সফল হবে, শিক্ষা মহল সেই বিষয়ে সন্দিহান। সেই সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বাড়ি বাড়ি যাওয়ার নির্দেশ কতটা বাস্তবসম্মত, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষা শিবিরের একাংশ। পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসুর মতে, পড়ুয়াদের বাড়ি গিয়ে শিক্ষকদের পড়ানোর সিদ্ধান্ত বাস্তবোচিত নয়। তিনি বলেন, “পড়ুয়াদের বাড়ি থেকে অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকাই দূরে থাকেন। করোনাকালে কোনও শিক্ষক বা শিক্ষিকা গণপরিবহণে পড়ুয়াদের বাড়ি গেলে অভিভাবকেরা তাঁদের না-ও ঢুকতে দিতে পারেন।" তিনি জানান, অনলাইনে পড়ানোর কথা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হলেও অনলাইন ব্যবস্থায় সব পড়ুয়ার কাছে যে পৌঁছনো যায় না, সেটা গত দেড় বছরে বোঝা গিয়েছে। সর্বাধিক হয়তো ২০ শতাংশ পড়ুয়ার কাছে পৌঁছনো যায়। তার বেশি নয়।
সোমবার কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যও শিক্ষাসচিবের স্বাক্ষরিত একটি নির্দেশ প্রকাশিত হয়েছে। দেড় মাস আগে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পরে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে হস্টেলগুলিতে আবাসিক পড়ুয়ারা আসতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু ফের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হস্টেল বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে এ দিনের দু’টি নির্দেশেই। তবে বিদেশি পড়ুয়ারা অথবা দূরত্বের কারণে যাঁরা বাড়ি যেতে পারবেন না, তাঁদের কোভিড বিধি মেনে হস্টেলে থাকার ব্যবস্থা করতে নির্দেশে বলা হয়েছে। হস্টেলে বিনা অনুমতিতে বহিরাগতেরা ঢুকতে পারবেন না।
কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও অনলাইনে পঠনপাঠন চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, অনলাইনে যে-সব পরীক্ষা হবে, তা নিয়ে নিজেদের আওতায় থাকা কলেজগুলির কোনও প্রশ্ন বা অভিযোগ থাকলে তার উত্তর দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে কর্তৃপক্ষকেই।