মুর্শিদাবাদে মিছিল করে মনোনয়ন জমা দিতে আসা শাসকদলের নেতার উপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্বে অশান্তির ঘটনায় শুরু থেকেই শিরোনামে মুর্শিদাবাদ। শনিবার শাসক-বিরোধী সংঘাতে ধুন্ধুমার হয়েছিল ডোমকল। সোমবারেও তার ব্যতিক্রম হল না। মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে সেখানে আবার সংঘর্ষে জড়াল কংগ্রেস এবং তৃণমূল। তবে এ বার উলটপুরাণ! মিছিল করে মনোনয়ন জমা দিতে আসা শাসকদলের নেতার উপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপেও একই ছবি দেখা গিয়েছে। সেখানেও তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের লাঠিসোঁটা নিয়ে তাড়া করার অভিযোগ উঠেছে সিপিএমের বিরুদ্ধে। পূর্ব বর্ধমানের বড়শুলেও সংঘর্ষে জড়িয়েছে তৃণমূল এবং সিপিএম।
গত শুক্রবার মনোনয়ন প্রক্রিয়া শুরু হতেই উত্তেজনা ছড়িয়েছিল মুর্শিদাবাদের কয়েকটি জায়গায়। খড়গ্রামে শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে কংগ্রেস কর্মীকে গুলি করে খুনের অভিযোগ ঘিরে চাপান-উতোর তৈরি হয়েছে। বাম-কংগ্রেস প্রার্থীদের মনোনয়নে বাধা দেওয়া হচ্ছে, এই অভিযোগ তুলে শেখপাড়া বাজার মোড়ে পথ অবরোধ করেছিলেন কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকেরা। স্থানীয় সূত্রে খবর, সেই সময় মিছিল করে মনোনয়ন জমা দিতে আসছিলেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। মূলত কালিনগর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্মী-সমর্থকেরাই ছিলেন ওই মিছিলে। নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন অঞ্চল সভাপতি। শেখপাড়া বাজার অতিক্রম করার সময় অবরোধের মুখে পড়ে সেই মিছিল। বচসা শুরু হয়ে দু’পক্ষের মধ্যে। পরে তা গড়ায় হাতাহাতিতে। তৃণমূলের অভিযোগ, দলের অঞ্চল সভাপতিকে বেধড়ক পেটানো হয়েছে। জখমও হয়েছেন তিনি। সেই অভিযোগ অস্বীকার করে কংগ্রেসের দাবি, শাসকদলের লোকেরাই প্রথমে হামলা চালিয়েছেন। পরে অবশ্য পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। জেলার রানিনগরেও তৃণমূলের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে বাম-কংগ্রেস জোটের বিরুদ্ধে।
গন্ডগোল হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপেও। সেখানে কংগ্রেস প্রার্থীর মনোনয়নের কাগজপত্র কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আবার এই কাকদ্বীপেই তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের তাড়া করার অভিযোগ উঠেছে সিপিএমের বিরুদ্ধে। বামেদের দাবি, তৃণমূলের লোকজন তাদের মনোনয়নে বাধা দিয়েছেন।
মনোনয়নকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে পূর্ব বর্ধমানের বড়শুলে। সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষ এবং ইটবৃষ্টির জেরে জখম হয়েছেন দু’জন পুলিশকর্মীও। স্থানীয় সূত্রে খবর, সকালে সিপিএম প্রার্থীরা তাঁদের অনুগামীদের নিয়ে বর্ধমানের ২ নম্বর বিডিও অফিসে যাচ্ছিলেন মনোনয়ন জমা দিতে। অভিযোগ, সেই সময় জাতীয় সড়কের ধারে বড়শুল মোড়ে তাঁদের পথ আটকায় তৃণমূল। এই নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বচসা শুরু হয়। হয় ইটবৃষ্টি। সিপিএমের এক প্রার্থী-সহ বেশ কয়েক জন কর্মী জখম হন ওই সংঘর্ষের ঘটনায়।