পঞ্চায়েত ভোটের যাবতীয় অশান্তির সবিস্তার তথ্য রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে পাঠাল সীমান্তরক্ষী বাহিনী —ফাইল চিত্র।
এক মাস আগের পঞ্চায়েত ভোটে হিংসা, ভোট লুট বা সন্ত্রাসের অভিযোগ এড়ানো যায়নি। ভোট নিয়ে আদালতে হওয়া মামলা এখনও সক্রিয়। শুরু হয়েছে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়াও। তা নিয়েও অশান্তির অভিযোগ উঠছে।
এই অবস্থায় ভোটের দিনের যাবতীয় অশান্তির সবিস্তার তথ্য রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে পাঠাল সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কর্তৃপক্ষ। এতদিন বাদে কেন সেই তথ্য পাঠানো হল, তা নিয়ে মুখ খুলতে কমিশন নারাজ। তবে প্রশাসনিক সূত্রের মতে, অভিযোগের নিষ্পত্তি আদৌ করা গিয়েছে কি না, তা বুঝতে হয়তো এই পদক্ষেপ। আজ, বৃহস্পতিবারের মধ্যে সে সব অভিযোগে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, নির্দিষ্ট বয়ানে জেলাশাসকদের থেকে সেই রিপোর্ট চেয়েছে কমিশন।
জেলা, ব্লক, বুথ এবং অভিযোগ ধরে ধরে কমিশনকে রিপোর্ট পাঠিয়েছে বিএসএফ। রিপোর্টে উল্লেখ করা ভোটপর্বে ২৩০টি অভিযোগের মধ্যে রযেছে বাহিনী যথাযথ ভাবে ব্যবহার না করা, যথেচ্ছ ছাপ্পা ভোট, ভোট লুট, ভোটারদের ভয় দেখানো, হুমকি দিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহারে বাধ্য করা, প্রাণনাশ, সন্ত্রাস, মারধর করা, বুথ দখলের মতো অপরাধ-তথ্য। ভোটের দিন কেন্দ্রীয় বাহিনীর দায়ের করা ৩৭টি ঘটনার অভিযোগের তথ্য সবিস্তারে দেওয়া হয়েছে কমিশনকে। তাদের কন্ট্রোলরুমে আসা ৭৩টি ঘটনার অভিযোগের ব্যাখ্যাও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। ভোটের দিন তাদের ই-মেলে পৌঁছনো ৭৭টি এবং হোয়াটসঅ্যাপে পাওয়া ২১টি এবং দিল্লিতে বাহিনী সমন্বয়কারীর কাছে যাওয়া ২১টি অভিযোগের সবিস্তার তথ্যও কমিশনকে পাঠিয়েছে বিএসএফ। তার অনেকগুলির প্রেক্ষিতে অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে।
প্রশাসনিক সূত্র জানাচ্ছে, ভোটপর্বের শুরু থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে যথেষ্ট টালবাহানা ছিল। আদালতের নির্দেশের পরে বিপুল সংখ্যায় বাহিনী চাওয়া হলেও তার সময় মতো আসা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। বাহিনী পাঠানোতে দেরি করার অভিযোগ যেমন কমিশন তুলেছিল, তেমনই কেন্দ্রীয় বাহিনীর তরফেও কমিশনের বিরুদ্ধে সরাসরি অসহযোগিতার অভিযোগ করা হয়। স্পর্শকাতর বা সংবেদনশীল বুথের তালিকা সময় মতো তাদের না দেওয়ায় মোতায়েনে সমস্যা হয়েছিল বলে দাবি করেছিল বিএসএফ। এখন এই রিপোর্টের মাধ্যমে বাহিনী কতটা তৎপরতার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করেছে, তা-ই হয়ত বোঝাতে চাওয়া হয়েছে বলে প্রশাসনিক কর্তাদের মত।